ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ফিচার

আগ্নেয়গিরি থেকে যে দ্বীপের সৃষ্টি

মামুনূর রহমান হৃদয় | প্রকাশিত: ১২:৫৭ পিএম, ২২ অক্টোবর ২০২৩

যারা কোরিয়ান নাটক বা সিনেমা দেখেন নিয়মিত, তাদের কাছে এই দ্বীপ খুবই পরিচিত। নাটক বা সিনেমার নায়ক-নায়িকার সঙ্গে এই দ্বীপ ঘুরে দেখেছেন বহুবার। হয়তো মনে মনে ঠিক করে রেখেছেন কোনো একদিন এই অপরূপ সুন্দর দ্বীপটিকে দেখে আসবেন। এতক্ষণে নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন কোন দ্বীপের কথা বলছি। হ্যাঁ, ঠিকই ধরেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার জেজু আইল্যান্ডের কথাই বলছিলাম।

২০১১ সালে ইউনেস্কোর সপ্তম আশ্চর্যের তালিকায় যুক্ত হয় দক্ষিণ কোরিয়ার অপরূপ সৌন্দর্যে ঘেরা পর্যটন দ্বীপ জেজু। এই দ্বীপে আছে হাল্লাসান পর্বতমালা, রংবেরঙের সামুদ্রিক মাছ আর বিশাল বনভূমি। এই হাল্লাসান পর্বতমালাই জেজুর প্রাণকেন্দ্র। এখানে নেই কৃত্রিমতার তেমন কোনো ছাপ। এ যেন প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের আঁধার।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

এই দ্বীপের আয়তন ১৮৪৬ বর্গ কিলোমিটার। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা ১ হাজার ৯৫০ মিটার। জেজু দ্বীপটি গঠিত হয়েছে ৩৬০টি সুপ্ত আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতে। ভূতত্ত্ববিদ জি.সি. রবার্টের মতে, ২ মিলিয়ন বছর পূর্বে আগ্নেয়গিরির লাভা জমে জমে এই দ্বীপ সবুজ শ্যামল রূপে এসেছে। তবে ঘন সবুজের মাঝে আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ দেখে বোঝার উপায় নেই এটি একসময় উত্তপ্ত ছিল।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

পূর্বে এই দ্বীপকে ডাকা হতো জিজি ক্যাডা বলে। যার অর্থ আগ্নেয়গিরি। তবে ১৯৪৮ সালে একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নাম রাখা হয় জেজু দ্বীপ। দক্ষিণ কোরিয়ার নয়টি প্রদেশের একটি ছিল জেজু দ্বীপ। তবে ২০০৬ সালের ১ জুলাই এখানকার বাসিন্দারা গণভোটে রায় দিয়ে এই দ্বীপকে স্বায়ত্তশাসিত প্রদেশে পরিণত করেছে।

আরও পড়ুন: মহাকাশ থেকে পৃথিবীর যেসব স্থান দেখা যায়

বিজ্ঞাপন

হাল্লাসান পর্বত ও সাগরের যেই মেল বন্ধন সেটি উপভোগ করতে প্রতিদিন শত শত দর্শনার্থী ভিড় করেন এই জেজু দ্বীপে। দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউল থেকে ৪৫০ কিলোমিটার দূরে সমুদ্রভেজা এই দ্বীপকে আচ্ছন্ন করে রাখে প্রবল বাতাস।

১৮৪৬ বর্গ কিলোমিটারের জেজু দ্বীপের আবহাওয়া দেশটির মূল ভূখণ্ডের আবহাওয়া থেকে ভিন্ন। রাজধানী সিউল যখন তীব্র শীতে কাঁপে, তখনো জেজুতে রৌদ্রে ঝলমলে দিন। সমুদ্র থেকে ভেসে আসা বাতাস নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়া ধরে রাখে দীর্ঘসময়।ঘন সবুজ এই দ্বীপে গাছগাছালির ফাঁকে ফাঁকে ঐতিহ্যবাহী পাথরের ভাস্কর্য ৷ কোনো জায়গায় সমতল, তো কোথাও পাহাড়ি উচু-নিচু রাস্তা।

বিজ্ঞাপন

এখানের হাল্লাসন পর্বতে চড়া, ঘোড়ায় চড়ে বেড়ানো, সমুদ্রের তীরে বসে সূর্যাস্ত উপভোগ করা, পাহাড় বেয়ে পড়া ঝর্নার ধারায় আটকা পড়া কিংবা বরশি দিয়ে মাছ ধরা ভীষণ উপভোগ্য। এছাড়াও বছর জুড়ে সাঁতার প্রতিযোগিতা, বসন্তে চেরি উৎসব ইত্যাদি পালন করা হয়।

পর্যটন আকর্ষণের জন্য রয়েছে বিমানবন্দর, হোটেল , রিসোর্ট, বিশ্ববিদ্যালয়, বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানসহ অনেক কিছু। আছে ইন্টারনেটের সুবিধা। তাই এসবের মাঝে সাগরের মাদকতা আর বাতাসের তীব্রতা পর্যটকদের মন কাড়ে সহজেই।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন: বিড়ালের জনপ্রিয় ৪ জাত

দর্শনার্থীর চাহিদা থাকায় রাজধানী সিউল থেকে কিছুক্ষণ পর পর ছাড়ে জেজু দ্বীপের ফ্লাইট। এখানের সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিন কী পরিমাণে ভ্রমণ পিপাসু এখানে আসেন তা হিসাবের বাইরে। শুধু যে ঘুরতে আসেন এমন নয়, নিয়মিত অনেক সিনেমা, নাটিকের শুটিং হয় এই জেজু আইল্যান্ডে।

বিজ্ঞাপন

পর্যটক আকর্ষণের জন্য আরও আছে প্রাকৃতিকভাবে লাভা দ্বারা সৃষ্ট ১৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের মানজাং গুহা, যা খুবই রোমাঞ্চকর অনূভতি দেবে। আরও আছে জিওংবং জলপ্রপাত, জেজুর বিখ্যাত পাথরের মূর্তি সহ অনেক কিছু। তাই বলা যায়, অর্থনৈতিকভাবে দক্ষিণ কোরিয়াকে সমৃদ্ধশালী করার পেছনে এই দ্বীপের অনেক অবদান।

সূত্র: সিএনএন, ইউনেস্কো ও উইকিপিডিয়া

কেএসকে/এএসএম

আরও পড়ুন

বিজ্ঞাপন