মিগিঙ্গো: বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দ্বীপ
আফ্রিকা মহাদেশের একটি দ্বীপ মিগিঙ্গো। ভিক্টোরিয়া হ্রদের পূর্ব দিকে এর অবস্থান। আয়তনে একটি ফুটবল খেলার মাঠের থেকে ছোট হলেও এখানে বাস করে শত শত মানুষ।
বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দ্বীপগুলোর একটি মিগিঙ্গো। প্রতি দুই হাজার বর্গ মিটারে ১০০ জনের অধিক মানুষ এখানে বসবাস করে। আর দ্বীপের মোট জনসংখ্যা হাজারের কাছাকাছি। তবে এতো মানুষের ব্যবহারের জন্য রয়েছে মাত্র তিনটি শৌচালয়।
এখানে বসবাসরত সবাই মৎস্যজীবী। সমুদ্রে মাছ ধরে চলে তাদের সংসার। তবে অনেক জেলেরই নিজের নৌকা নেই। অন্যের নৌকার উপরেই নির্ভরশীল থাকেন। একটা সময় দ্বীপের মাঝে বস্তি তৈরি করে থাকলেও, ২০০৪ সালের পর থেকে জেলেরা ঘর নির্মাণ শুরু করেন।
আরও পড়ুন: মধ্যযুগে পুতুল নয়, শিশুদের সাজানো হতো কাকতাড়ুয়া
দ্বীপের চারদিকে নীল জলরাশি আর মাঝখানে ছোট এই দ্বীপ নিয়ে চলে বিরোধ। উগান্ডা ও কেনিয়ার মধ্যে এর দখল নিয়ে রেশারেশি লেগেই আছে। দু দেশই মনে করে এটির উপর তাদের অধিকার।
কেনিয়া থেকে এই দ্বীপে পৌঁছাতে সময় লাগে মাত্র দুই ঘণ্টা। যার কারণে তারা এটি নিজেদের বলে দাবি করেন। কেনিয়ার জনগণ এই ভূখণ্ড নিজেদের নামে পেতে সরকারকে আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়ারও আহ্বান করেছেন বেশ কয়েকবার।
এই দ্বীপে আধুনিকতার ছোঁয়া একেবারেই কম। মোবাইল ফোন চার্জ দেওয়ার জন্য রয়েছে একটি মাত্র দোকান। আদতে তা একটি সেলুন। সেখানেই টাকার বিনিময়ে ফোন চার্জ দেওয়ার ব্যবস্থা আছে। ছোট খাটো রোগব্যাধি নিরাময়ের জন্য আছে একটি চিকিৎসাকেন্দ্র। দ্বীপটি ছোট হলেও ক্যাসিনোর অবস্থানও রয়েছে।
আরও পড়ুন: একজন নারীর প্রথম কম্পিউটার বিজ্ঞানী হয়ে ওঠা
এতো ঘনবসতি হওয়ায় দ্বীপের পরিবেশ মোটেও ভালো নয়। চারপাশে রয়েছে ময়লা ও আবর্জনায় ভরা। ক্ষতিকর পোকামাকড়ের সংখ্যাও অধিক। এখানে বসবাসরত অনেক মানুষ ম্যালেরিয়া সহ নানা মরণব্যাধি রোগে আক্রান্ত।
এখানে বসবাসরত যারা কেনিয়ার নাগরিক তারা সপ্তাহে একবার বাড়িতে যেতে পারেন। তবে উগান্ডা ২০০৪ সাল থেকে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করতে শুরু করেন। প্রথম ধাপ হিসেবে তারা তখন থেকেই সশস্ত্র সেনা পাঠানো শুরু করেন। জেলেদের সুরক্ষা দেওয়ার নামে ট্যাক্স আদায় পর্যন্ত করে থাকেন।
এর দেখাদেখি কেনিয়াও এই দ্বীপে নৌবাহিনী প্রেরণ করেন। তাই দ্বীপের মধ্যে শান্তি-শৃঙ্খলা একদমই নেই। ছোট্ট দ্বীপটিতে এই অশান্তির ভেতর জেলেদের দুই দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীদের নিয়ে অনেক অভিযোগ রয়েছে।
কেএসকে/এএসএম