যে লেকে কোনো উদ্ভিদ জন্মে না
মৃত সাগর জর্ডান নদীর একটি শাখা হ্রদ বা লেক। মৃত সাগর নামটি শুনলে আপনার কাছে অদ্ভুত লাগতে পারে। তবে এই মৃত সাগরকে কেন্দ্র করে আছে গভীর রহস্য। আপনি যদি সাঁতার না জানেন তবে এই শাখা হ্রদ আপনার জন্যই। কোনো রকম অসুবিধা ছাড়াই অনায়সে ভেসে থাকতে পারবেন এই মৃত সাগরে।
এটির অবস্থান মধ্যপ্রাচ্যে। নামের সঙ্গে সাগর থাকলেও এটি আসলে একটি লেক বা হ্রদ। উত্তর দক্ষিণে লম্বাভাবে বিস্তৃত এই জলাশয়ের পূর্ব দিকে জর্ডান আর পশ্চিমে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর। পবিত্র নগরী জেরুসালেম এখান থেকে ১৫ মাইল দূরে। জর্দানের রাজধানী আম্মান থেকে এর দূরত্ব ৬০ কিলোমিটার। জর্ডান নদীর পানি প্রবাহ এই লেকে গিয়ে পড়ে।
আরবিতে মৃত সাগরের নাম আল-বাহর আল-মাইয়িত। লুত সাগর নামেও পরিচিত এটি। এখানে পানির লবণাক্ততার তার পরিমাণ এতই বেশি যে কোনো জলজ প্রাণী টিকে থাকতে পারে না। প্রাণী টিকে থাকতে না পারার কারণে একে মৃত সাগর বলা হয়।
আরও পড়ুন: বিশ্বের সপ্তাশ্চর্যের তালিকায় যেসব স্থান
জলজ উদ্ভিদ না থাকলেও ছত্রাক, ব্যাকটেরিয়া রয়েছে। তবে আশপাশের এলাকায় বন্যপ্রাণী এবং উদ্ভিদ দেখা যায়। মৃত সাগর সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে ৪২০ মিটার গভীরে অবস্থিত। শতকরা ৩০ ভাগ লবণাক্ততা মৃত সাগরে। হিসেবে সমুদ্রের পানি থেকে এটির লবণাক্ততার পরিমাণ ৮.৬ গুণ বেশি। ধারণা করা হয় ৩০ লাখ বছর পূর্বে জর্ডান নদীর পানি লোহিত সাগর বরাবর প্রবাহিত হতো।
একটা সময় পর ভূমধ্যসাগরের মধ্যবর্তী স্থলভাগ যথেষ্ট উচ্চতা লাভ করার ফলে মহাসাগরের প্লাবনের কারণে এ অঞ্চলে লেকের সৃষ্টি হয়। সর্ম্পূণ প্রাকৃতিক উপায়ে এটি তৈরি। ইসলাম অনুযায়ী এ অঞ্চলের মানুষ নানা অপকর্মে লিপ্ত ছিল।
বাইবেলের মৃত সাগর হচ্ছে সমুদ্রের রাজা ডেভিডের আশ্রয়স্থল। মূলত উচ্চ প্লবতার কারণে সব মৃত সাগরে ভেসে থাকতে পারে। ম্যাগনেসিয়াম ক্লোরাইড, ক্যালসিয়াম ক্লোরাইড এবং সোডিয়াম ক্লোরাইড উপাদানের পরিমাণের আধিক্য রয়েছে মৃত সাগরের পানিতে।
কেএসকে/জেআইএম