ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ফিচার

আজকের এই দিনে

হুমায়ূন আহমেদের প্রয়াণ দিবস

ফিচার ডেস্ক | প্রকাশিত: ১১:২৩ এএম, ১৯ জুলাই ২০২৩

হুমায়ূন আহমেদ ছিলেন একজন বাংলাদেশি ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, নাট্যকার এবং গীতিকার, চিত্রনাট্যকার ও চলচ্চিত্র নির্মাতা। তিনি বিংশ শতাব্দীর জনপ্রিয় বাঙালি কথাসাহিত্যিকদের মধ্যে অন্যতম। তাকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী অন্যতম শ্রেষ্ঠ ও জনপ্রিয় লেখক বলে গণ্য করা হয়। বাংলা কথাসাহিত্যে তিনি সংলাপপ্রধান নতুন শৈলীর জনক।

অন্যদিকে তিনি আধুনিক বাংলা বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর পথিকৃৎ। নাটক ও চলচ্চিত্র পরিচালক হিসাবেও তিনি সমাদৃত। তার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা তিন শতাধিক। তার বেশ কিছু গ্রন্থ পৃথিবীর নানা ভাষায় অনূদিত হয়েছে, বেশ কিছু গ্রন্থ স্কুল-কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচীর অন্তর্ভুক্ত। মিসির আলি এবং হিমু তার সৃষ্ট অন্যতম দুটি জনপ্রিয় চরিত্র।

১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের ময়মনসিংহ জেলার অন্তর্গত নেত্রকোণা মহুকুমার মোহনগঞ্জে তার মাতামহের বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা শহীদ ফয়জুর রহমান আহমদ সাহিত্যনুরাগী মানুষ ছিলেন। পরিবারে সাহিত্যমনস্ক আবহাওয়া ছিল।

তার বাবা চাকরি সূত্রে দেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করেছেন বিধায় হুমায়ূন আহমেদ দেশের বিভিন্ন স্কুলে লেখাপড়া করার সুযোগ পেয়েছেন। তার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাজীবন শুরু হয় ১৯৫৫ সালে সিলেটের কিশোরী মোহন পাঠশালায় (বর্তমান কিশোরী মোহন (বালক) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়)। সেখানে তিনি ১৯৫৯ সাল পর্যন্ত পড়াশোনা করেছিলেন। তিনি ১৯৬৩ সালে বগুড়া জিলা স্কুলে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হন।

১৯৬৫ সালে তিনি এই বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক পরীক্ষা দেন এবং রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন। তিনি পরে ঢাকা কলেজে ভর্তি হন এবং সেখান থেকে বিজ্ঞান বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়ন শাস্ত্রে অধ্যয়ন করেন এবং প্রথম শ্রেণীতে বিএসসি (সম্মান) ও এমএসসি ডিগ্রি লাভ করেন।তিনি হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের আবাসিক ছাত্র ছিলেন এবং ৫৬৪ নং কক্ষে তার ছাত্রজীবন অতিবাহিত করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জীবনে একটি নাতিদীর্ঘ উপন্যাস রচনার মধ্য দিয়ে হুমায়ূন আহমেদের সাহিত্য জীবনের শুরু। এই উপন্যাসটির নাম নন্দিত নরকে। এছাড়াও তার উল্লেখযোগ্য সৃষ্টিকর্ম- উপন্যাস: শঙ্খনীল কারাগার, নন্দিত নরকে, মধ্যাহ্ন, জোছনা ও জননীর গল্প, মাতাল হাওয়া, লীলাবতী, কবি, বাদশাহ নামদার, ময়ূরাক্ষী, দেয়াল, অপেক্ষা, আমার আছে জল, প্রিয়তমেষু, সমুদ্র বিলাস, অয়োময়, দুই দুয়ারী, নীল অপরাজিতা, জল জোছনা, নবনী, যখন গিয়েছে ডুবে পঞ্চমীর চাঁদ, ইস্টিশন, মীরার গ্রামের বাড়ী ইত্যাদি।

সিনেমা: আগুনের পরশমণি, শ্রাবণ মেঘের দিন, দুই দুয়ারী, শ্যামল ছায়া, ঘেটু পুত্র কমলা, চন্দ্রকথা। টেলিভিশন ধারাবাহিক: এইসব দিনরাত্রি, বহুব্রীহি, নক্ষত্রের রাত, কোথাও কেউ নেই, আজ রবিবার, অয়োময়। এক পর্বের নাটক: আমরা তিন জন, আজ জরীর বিয়ে, অন্তরার বাবা, খোয়াব নগর, গুপ্ত বিদ্যা, কনে দেখা, জইতরি, নীতু তোমাকে ভালোবাসি, পুষ্প কথা, বাদল দিনের প্রথম কদমফুল, সবাই গেছে বনে ইত্যাদি।

গান: একটা ছিল সোনার কন্যা, যদি মন কাঁদে, আমার আছে জল, নদীর নাম ময়ূরাক্ষী, ও আমার রসিক বন্ধু রে, ও আমার উড়াল পঙ্খী রে, আমার ভাঙ্গা ঘরের ভাঙ্গা চালা, কন্যা নাচিল রে, বাজে বংশী, চান্নি পসরে কে আমায় স্মরণ করে, চান্নি পসর রাইতে যেন আমার মরণ হয়।

হুমায়ুন আহমেদ তার অসংখ্য বহুমাত্রিক সৃষ্টির জন্য নানা পুরস্কারে ভূষিত হন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, একুশে পদক, বাচসাস পুরস্কার, লেখক শিবির পুরস্কার, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, শিশু একাডেমি পুরস্কার, মাইকেল মধুসুদন পদক, হুমায়ূন কাদির স্মৃতি পুরস্কার, জয়নুল আবেদীন স্বর্ণপদক, মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার ইত্যাদি। ২০১২ সালের ১৯ জুলাই তিনি নিউ ইয়র্কের বেলেভ্যু হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।

কেএসকে/এএসএম

আরও পড়ুন