ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ফিচার

সাপ নিয়ে যত ভুল ধারণা

ফিচার ডেস্ক | প্রকাশিত: ০২:৫১ পিএম, ১৬ জুলাই ২০২৩

বিশ্বের অন্যতম হিংস্র এই প্রাণী সাপকে দেখে মোটেই ভয়ংকর মনে হয় না। বরং নিরীহ প্রাণীর তালিকায় রাখা যায়। তবে সাপের কিছু প্রজাতি হয় বিষাক্ত। যার কামড়ে সঙ্গে সঙ্গে একজন মানুষ মারা যেতে পারে। যে কারণে মানুষ একে ভয় পেয়ে দূরেই রাখেন। জানেন কি? আজ ১৬ জুলাই বিশ্ব সাপ দিবস।

প্রতি বন্যার সময় অর্থাৎ মে, জুন এবং জুলাই-এই তিন মাস সাপের দংশন এবং তার কারণে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ে। অন্য সময়ে সাপের দেখা লোকালয়ে কম হলেও বর্ষায় চারদিক পানি থাকায় সাপের দেখা মেলে বেশি। এজন্য এসময় প্রায়ই সাপের কামড়ে মৃত্যুর সংবাদ শোনা যায়।

দেশব্যাপী পরিচালিত অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি (এনসিডিসি) সর্পদংশন জরিপে দেখা যায়, দেশে প্রতিবছর ৪ লাখ ৩ হাজার ৩১৭ জন মানুষ সাপের কামড়ে আক্রান্ত হয় এবং এতে ৭ হাজার ৫১১ জন মানুষ মারা যায়। প্রতিটি সর্পদংশনের কারণে চিকিৎসার জন্য দংশিত ব্যক্তির প্রায় ২ হাজার টাকা ব্যয় হয়।

সাপ একটি নিরীহ প্রাণী। দেশের আনাচে কানাচে প্রায় ৮০ প্রজাতির সাপ ঘুরে বেড়ায়। এর মধ্যে মাত্র সাত থেকে আট প্রজাতির অত্যন্ত বিষধর সাপের কামড়ে মানুষ বেশি মারা যায়। সচেতনতাই পারে বিষাক্ত সাপের কামড় থেকে বাঁচাতে। তবে সাপ নিয়ে অনেকের অনেক ভুল ধারণা আছে। যে কারণে আরও বেশি বিপদে পড়তে হয়।

জেনে নিন সাপ নিয়ে প্রলিত কিছু ভুল ধারণা-

সাপের লেজে বিষ
অনেকের ধারণা দাঁড়াশ সাপের লেজে বিষ থাকে। মূলত এটি একটি নির্বিষ সাপ। লেজ তো দূরের কথা এর বিষদাঁতই নেই। এরা ইঁদুর এবং ছোট পাখি ধরে খায়। এমনকি ছোটখাটো বিষাক্ত সাপও এদের প্রধান খাবার।

সাপের এক চোখ অন্ধ
অনেকেই মনে করেন সাপের এক চোখ জন্ম থেকেই নষ্ট থাকে। মূলত সাপ দিনে চোখে কম দেখে তাই, ধীরে চলে। রাতের আঁধারে সাপ আধুনিক নাইটভীষণ চশমার চেয়ে ১০গুণ বেশি পরিষ্কার দেখতে পায়।

আরও পড়ুন: দেশের সবচেয়ে বিষধর ৭ সাপ, চিনবেন যেভাবে

বীণ শুনে সাপে নাচে
সাপের কোনো কান নেই। এমনকি দৃষ্টিশক্তিও প্রখর নয়। যারা বীণ বাজান, তারা সেটি সাপের মুখের সামনে দোলাতে থাকেন। সাপও চোখের সামনে দুলুনি দেখে মাথা দোলাতে থাকে এই ভেবে যে, কোনো শত্রু বুঝি সামনে আছে।

সাপ জিহ্বা দিয়ে শুনতে পায়
সাপ চলাফেরার প্রয়োজনে বার বার জিহ্বা বের করে তা আসলে শোনার জন্য নয়। সাপের জিহ্বার অগ্রভাগে ‘জেকবসন অর্গান’ নামে একধরনের গ্রন্থি আছে যা দ্বারা সাপ বায়ুস্থ বিভিন্ন পদার্থের অস্তিত্ব অনুভব করে। এটিকে ঘ্রাণ নেওয়াও বলা যেতে পারে।

সাপ দুধ খায়
সাপ শীতল রক্তের প্রাণী, মাংসাশী এবং স্তন্যপায়ী নয়। ফলে সাপের পক্ষে দুধ হজম করা অত্যন্ত কঠিন। দুধ সাপের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর। দুধ খেলে সাপ মারাও যেতে পারে। যেসব সাপকে দুধ খেতে দেখেন, তারা মূলত সাপুড়েদের সাপ। নাগপঞ্চমীর আগে সাপগুলোকে মাসখানেক প্রায় পানি খেতে দেওয়া হয় না এবং বন্দি করে রাখা হয়। তারপরে মুখের সামনে দুধ ধরা হয়। বাধ্য হয়েই সাপেরা সেই দুধ খেয়ে নেয়।

সাপ মানুষকে তাড়া করে
সাপ মানুষের শত্রু নয়। বরং সাপের সামনে পড়ে গেলে যদি দৌড়ে পালাতে যান বা বেশি লাফালাফি করেন, তাহলে সাপ আত্মরক্ষার্থে তেড়ে আসতে পারে। স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকুন। দেখবেন সাপ আপনাকে পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছে।

আরও পড়ুন: এ সময় সাপে কাটলে দ্রুত যা করবেন

সাপ তার শত্রুকে চিনে রাখে
সাপের স্মৃতিশক্তি বা বুদ্ধি নেই। তাই সাপের পক্ষে মানুষকে চিনে রাখা সম্ভব নয়। সাপ শুধু বেঁচে থাকার জন্য খাবারের খোঁজে লোকালয়ে আসে।

সাপের পা
গ্রামাঞ্চলের অনেক অশিক্ষিত মানুষের মধ্যে একটা কথা প্রচলিত আছে যে, সাপের পা দেখলে রাজা হওয়া যায়। আসলে সাপের কোনো পা নেই। তাই সাপের পা দেখে রাজা হবার কোনো সম্ভাবনাও নেই।

সাপের ওঝা
সাপের ওঝারা যে চিকিৎসা করে তা সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিক। সাপের ওঝার চিকিৎসায় সেই রোগীই ভালো হয় যাকে এমন সাপে কামড় দিয়েছে যার বিষ নেই। তাই সাপে কাটলে ওঝার খোঁজ না করে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের কাছে নিতে হবে।

সাপের মণি
সাপের মাথায় এ জাতীয় কোনো পাথুরে পদার্থ আদৌ তৈরি হয়না। সাপুড়েরা মানুষকে বিভ্রান্ত করতে নানা চটকদার কথা বলে। মাঝে মাঝে তারা মণি হিসাবে যা দেখায় তা হলো মুক্তা বা অন্য কোনো চকচকে পাথর।

কেএসকে/জেআইএম

আরও পড়ুন