বাজেট ভাবনা
গবেষণা ও আবাসনে বরাদ্দ বাড়ানো উচিত
ফারদিন এহসান
বার্ট্রান্ড রাসেলের মতে, ‘মানুষের সুখী হওয়ার জন্য সবচেয়ে বেশি দরকার বুদ্ধি। শিক্ষার মাধ্যমে এর বৃদ্ধি ঘটানো সম্ভব।’ গবেষণা শিক্ষার মান ক্রমবর্ধমান হারে বাড়াতে কাজ করে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মৌলিক কাজের একটি হলো গবেষণা। এ খাতে বরাদ্দের অভাবে উচ্চশিক্ষার মান তলানিতে এসে ঠেকেছে। এবারের ২০২৩-২৪ বাজেটে শিক্ষাখাতে মোট বরাদ্দ জিডিপির তুলনায় ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ। অথচ চলতি বছরে শিক্ষাখাতে মোট বরাদ্দ ছিল জিডিপির ১ দশমিক ৮৩ শতাংশ।
বিশ্ববিদ্যালয়ে যে বাজেট দেওয়া হয়, তার কম-বেশি প্রায় ৯০ ভাগই থাকে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন, ভাতা ও সেবায় তথা আবর্তক ব্যয়ে। আমার দেখামতে, গবেষণায় ব্যয় হয় খুবই সামান্য। গবেষণা খাতে আরও বেশি বরাদ্দ করা উচিত। বিশেষত সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা গবেষণার জন্য পর্যাপ্ত অর্থের জোগান পান না।
গবেষণা সহযোগী হিসেবে যেসব শিক্ষার্থী কাজ করেন, তাদের পারিশ্রমিক দেওয়ার মতো সুযোগও শিক্ষকদের হয়ে ওঠে না। ফলে পড়ালেখার পাশাপাশি আয়ের জন্য টিউশনি বা অন্য কাজের দিকে ঝুঁকলেও গবেষণায় তেমন আগ্রহী হন না শিক্ষার্থীরা। এছাড়া যন্ত্রপাতি কেনার পর্যাপ্ত অর্থের অভাবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অন্য দেশের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিছিয়ে।
আরও পড়ুন: শিক্ষা উপকরণের সুলভ মূল্য নির্ধারণ করা হোক
অন্যদিকে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক-অনাবাসিক শিক্ষার্থীরা আবাসন সংকটে জর্জরিত। ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত শিক্ষার্থী হলগুলোতে কষ্ট করে থাকেন। অনিয়ন্ত্রিত বাসা ভাড়া বৃদ্ধিতে মাথাপিছু খরচ কমাতে ব্যক্তি মালিকানার মেসগুলোয়ও গাদাগাদির একই চিত্রের পুনরাবৃত্তি। এ ধরনের সমস্যায় শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়া লাইব্রেরিতে পর্যাপ্ত বইয়ের অভাব এবং শিক্ষার্থী ধারণ ক্ষমতার অভাবে শিক্ষার্থীরা লাইব্রেরি বিমুখ হচ্ছেন।
তাই আমার মতে, শিক্ষার মান বৃদ্ধি করতে, শিক্ষক-শিক্ষার্থী উভয়ের কথা ভেবে বিশেষ বরাদ্দ থাকা দরকার ছিল। শিক্ষাখাতের বরাদ্দের ক্ষেত্রে গবেষণা, আবাসন ও লাইব্রেরি সুবিধাকে প্রাধান্য দিয়েই বরাদ্দ বাড়ানো এখন সময়ের দাবি।
লেখক: শিক্ষার্থী, ফার্মেসি বিভাগ, সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি।
এসইউ/জেআইএম