৩ মিনিটে ২৪৮ ডায়মন্ড পুশ-আপ
জন্ম থেকে বিরল এক জিনগত রোগে আক্রান্ত টরেন্টোর জিওন ক্লার্ক। পা ছাড়াই জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তবে থেমে যাননি কোনো পথেই। তার ঝুলিতে এখন দুইটি বিশ্বরেকর্ড। সম্প্রতি ৩ মিনিটে ২৪৮ ডায়মন্ড পুশ আপ দিয়ে বিশ্বরেকর্ড করেছেন জিওন। এর আগে ৪.৭৮ সেকেন্ডে দুই হাতে দ্রুততম ২০ মিটার দৌড়ানোর জন্য গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড করেছেন।
স্বাস্থ্য সচেতন যারা আছেন তারা কম বেশি পুশ আপ ব্যায়ামের কথা জানেন। এটি অনেক আগে থেকেই একটি জনপ্রিয় ও কার্যকরী চেস্টের ও ঘাড়ের ব্যায়াম। নারী পুরুষ উভয়েই করতে পারেন এই ব্যায়াম। পুশ-আপের একটি ধরন ডায়মন্ড পুশ আপ। এটি সাধারণ পুশ-আপের তুলনায় একটি কঠিন বেশি।
তবে জিওন সব কিছুকেই সহজ করেছেন তার ইচ্ছাশক্তি দিয়ে।ডায়মন্ড পুশ-আপ দিতে হাতগুলোকে প্রথমে একসঙ্গে করে হীরার আকৃতির করে মাটিতে রাখতে হবে। এরপর পুশ-আপ দিতে হবে। জিওন দ্বিতীয়বারের চেষ্টায় রেকর্ডটি করেন। প্রথমবার ব্যর্থ হোন। ৪৮ সেকেন্ড এবং ৫৪টি পুশ-আপ বাকি রেখেই প্রথমবার ব্যর্থ হোন।
তবে দ্বিতীয়বারের চেষ্টায় সফল হোন তিনি। দ্বিতীয় রাউন্ডের সময় আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে এসেছিলেন, তিন মিনিটের মধ্যে ২৪৮ ডায়মন্ড পুশ আপ সম্পন্ন করেন তিনি। এটি কোনো বিশেষ ক্যাটাগরিতে নয়, বরং পুশ-আপের পুরুষ ক্যাটাগরিতে রেকর্ডটি করেন তিনি।
২৪ বছর বয়সী মার্কিন অ্যাথলিট জিওন মাতৃগর্ভেই কডাল রিগ্রেসন সিন্ড্রোম নামক জটিল রোগে আক্রান্ত হন। এতে তার দুটি পা এবং মেরুদণ্ডের বেশ খানিকটা অংশ গড়ে ওঠেনি।
এমন অবস্থা দেখে জিওনের বাবা-মা তাকে ছেড়ে যায় অনাথ আশ্রমে। আমেরিকার ফস্টার কেয়ারেই বড় হয়েছেন জিওন। সেখানে সবসময় অবহেলা আর নির্যাতন লেগেই থাকত। স্কুলে সহপাঠীদের কাছেও বারবার বিদ্রূপের শিকার হয়েছেন জিওন। তবে থেমে যাননি তিনি। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা তার কোনো কাজে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি।
স্কুলজীবন থেকেই খেলাধুলোয় বেশ ঝোঁক ছিল তার। স্কুলের ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় প্রতি বছর কুস্তিতে অংশ নিতেন তিনি। বেশিরভাগ সময় জয়ীও হতেন। সেই সঙ্গে হাতের উপর ভর দিয়ে দীর্ঘ পথ হেঁটে যাওয়ার অনুশীলনও শুরু করেছিলেন তখন থেকেই।
ফস্টার কেয়ার সিস্টেম থেকে কিম্বারলি হকিন্স নামের এক নারী দত্তক নেন জিওনকে। সন্তানের মতোই স্নেহ আর ভালোবাসায় জিওনকে কাছে টেনে নেন হকিন্স। তারই অনুপ্রেরণায় জিওন আমেরিকার একজন প্রথম সারির অ্যাথলিট হতে পেরেছেন।
গত জানুয়ারিতেই ৪.৭৮ সেকেন্ডের মধ্যে ২০ মিটার দৌড়ান তিনি। গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের স্বীকৃতি পান হাত দিয়ে সবচেয়ে কম সময়ে দৌড়ানো অ্যাথলিট হিসেবে। এছাড়াও তার ইচ্ছা অলিম্পিকে অংশ নেওয়া। ইচ্ছা পূরণের সঙ্গে সঙ্গে ইতিহাস রচনা করে চলেছেন জিওন।
সূত্র: গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড
কেএসকে/জিকেএস