মহাবিশ্বের যেসব নক্ষত্রে প্রাণ আছে
অগনিত গ্রহ, নক্ষত্র, উপগ্রহ, ধূমকেতু, উল্কাপিন্ড ও গ্রহাণু নিয়ে এই বিপুল আয়তন বিশ্বব্রহ্মান্ড বা ইউনিভার্স। এই মহাবিশ্বে উন্নত প্রাণের স্পন্দন পাওয়া যায় একমাত্র আমাদের এই সুজলা, সুফলা, শস্য-শ্যামলা পৃথিবীর বুকেই। তাহলে কি মহাবিশ্বের এই অসীম বিস্তৃতির মধ্যে আমরা একা? সত্যিই কি নিঃসঙ্গ? নাকি আমাদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অনুসন্ধানের ধরাছোঁয়ার বাইরে লাখ লাখ যোজন যোজন, কোটি কোটি আলোকবর্ষ দূরের কোনো গ্রহে আমাদের চেয়ে আরও বেশি উন্নত, আরও বেশি জটিল কোনো প্রাণী বাস করছে ? যারা হয়তো মানব সভ্যতার সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করতে চায়?
জ্যোতিবির্জ্ঞানী বা অ্যাস্ট্রোনমাররা অনেক কৃত্রিম উপগ্রহ মহাশূন্যে পঠিয়েছেন। উদ্দেশ্য মহাবিশ্বে অন্য কোনো উন্নত সভ্যতা খুঁজে বের করা যায় কি না। কিন্তু তাদের সব আশা, সব অর্থ ব্যয় জলাঞ্জলি গেছে। প্রয়াত মার্কিন জ্যোতিবির্জ্ঞানী ড. কার্ল সাগান তো সেই কবেই পাইওনিয়ার-১০ নামক কৃত্রিম উপগ্রহের মধ্যে একটা ধাতবপাতের ওপর মানব-মানবীর ছবি, জিনের গঠনের মানচিত্র ও টেলিগ্রাফের ভাষায় লেখা বন্ধুত্বের বার্তা খোদাই করে পাঠিয়েছেন দূর মহাশূন্যে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোনো উন্নত মস্তিষ্কের প্রাণী সেই কৃত্রিম উপগ্রহের চলার পথে আসেনি।
তবে সম্প্রতি একদল আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানী ভিনগ্রহী প্রাণীদের অস্তিত্ব নিয়ে বেশ আলোচনায় উঠে এসেছেন। তারা জোর গলাতেই বলছেন, মহাবিশ্বে হাজার হাজার, কোটি কোটি নক্ষত্রের মধ্যে কোনো নক্ষত্রে অবশ্য-অবশ্যই প্রাণ রয়েছে। আর সেই নক্ষত্রগুলো হলো লাল বামন বা রেড ডোয়ার্ফ।
মহাকাশে অবস্থিত যে সকল বস্তু নিজের অভ্যন্তরে থাকা পদার্থকে জ্বালিয়ে ফিউশন বিক্রিয়া ঘটাতে পারে এবং আলোক উজ্জ্বল হয় তাদেরকে নক্ষত্র বলে। প্রশ্ন উঠতে পারে-লাল বামন আবার কী ধরনের নক্ষত্র? আসলে সূর্যের মত প্রচন্ড উত্তপ্ত ও কোটি কোটি সেলসিইয়াস উষ্ণতায় উত্তপ্ত তরুণ নক্ষত্রের বার্ধক্য দশা হলো এই লাল বামন নক্ষত্র। শক্তিদায়ক হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম ফুরিয়ে আসা ও আকারে কুঁকড়ে যাওয়া নক্ষত্রের নাম রেড ডোয়ার্ফ তারা। সূর্যের ভরের ১৫ গুণ বড় তারাগুলোতে যে পরিমাণ হাইড্রোজেন থাকে তা জ্বালানিরূপে নিঃশেষ হতে সূর্যের জীবনকালের একহাজার ভাগের এক ভাগ সময় লাগে। তারার কেন্দ্রে হাইড্রোজেন গ্যাস নিঃশেষ হয়ে গেলে কিন্তু তখনও পর্যন্ত হিলিয়াম গ্যাসের জ্বালানী বিদ্যমান থাকে। এটির নিউক্লিয়ার ফিউশন বিক্রিয়া আলফা স্তরে পৌঁছানো পর্যন্ত, কিছুকাল যাবত জ্বলতে থাকে এবং এর আয়তন আরও বেড়ে যায়। উজ্জ্বল লাল তারাগুলো তখন লাল অতিদানব তারায় পরিণত হয়।
ধরা যাক, একটি বেলুনে বাতাস ভরা হচ্ছে। বাতাসের চাপে বেলুনটি ফুলে উঠতে শুরু করবে। সাধারণ বেলুন সংকুচিত অবস্থায় থাকে। বাতাসের চাপে সেই সংকুচিত অবস্থার পরিবর্তন ঘটে। যতক্ষণ ভেতরে বাতাস থাকে ততক্ষণ বেলুন ফুলে থাকে। বাতাস বের করে নিলে সেটা আবার সংকুচিত হয়ে যায়। ঠিক এমন ঘটনাই ঘটে নক্ষত্রেরও জীবনেও। মহাকর্ষ টানে হাইড্রোজেনের মেঘ পুঞ্জীভূত হয়ে সৃষ্টি করে নক্ষত্র। নতুন সেই নক্ষত্রের ভেতরে হাউড্রোজেনগুলো পরস্পরকে মহাকর্ষ বল দ্বারা আকর্ষণ করে। ফলে নক্ষত্রের ভেতরের হাইড্রোজেনগুলোর সংকুচিত হওয়ার একটা প্রবণতা থাকে।
আবার মহাকর্ষীয় বলের চাপে তার কেন্দ্রীয় অঞ্চলের গ্যাস প্রচন্ড ভাবে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তাপমাত্রাও বৃদ্ধি পায় সেই অনুপাতে। শুরু হয় হাইড্রোজেনের জ্বলন বা ফিউশন। ফিউশনকালে সৃষ্টি হয় আরো শক্তি। বেলুনের বাতাসের মতো সেই শক্তিই নক্ষত্রকে ফুলিয়ে রাখে। এই অবস্থায় মাধ্যাকর্ষণ শক্তি যেমন নক্ষত্রকে সংকুচিত করার চেষ্টা করে। তার সঙ্গে পাল্লা দেয় ফিউশনের কারণে উৎপন্ন শক্তি। সেই শক্তি সংকোচনে বাধা দিয়ে ঠিক রাখে নক্ষত্রের স্বাভাবিক আয়তন। এভাবে নিয়মিত জ্বলনের কারণে একসময় নক্ষত্রের কেন্দ্রীয় অঞ্চলের হাইড্রোজেন প্রায় ফুরিয়ে আসে। অন্যদিকে হাইড্রোজেন সংযোজিত হয়ে সৃষ্টি করে হিলিয়াম। হাইড্রোজেন ফুরানোর পর নক্ষত্রের কেন্দ্রীয় অঞ্চল আবার সংকুচিত হতে থাকে। সংকোচনের কারণে তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। এর প্রভাবে কেন্দ্রীয় অঞ্চলের পাশের অঞ্চল সম্প্রসারিত হয়।
বিজ্ঞানীদের মতে, জন্মলগ্ন থেকেই সূর্য ও অন্যান্য নক্ষত্রের তুলনায় লাল বামন তারাদের উত্তাপ অনেকটাই কম থাকে। কেননা সূর্যের মোট ভরের চল্লিশ শতাংশ পদার্থও তাদের মধ্যে নেই। ফলে তাদের মধ্যে পারমানবিক বিক্রিয়া যা থেকে তাপ উৎপন্ন হয়, তা ঘটে খুব কম পরিমানে এবং অত্যন্ত ধীর লয়ে। এর ফলে লাল বামন তারার মধ্যে শক্তিও উৎপন্ন হয় খুবই কম এবং অত্যন্ত ধীর লয়ে। এ ধরনের তারার ব্যাস অনেক বড় হয় কিন্তু উপরিপৃষ্ঠের তাপমাত্রা খুবই কম বা সাড়ে তিন হাজার থেকে সাড়ে চার হাজার কেলভিন থাকে। এরা লাল অতিদানব তারা হলেও, এমনকি মহাবিশ্বের আয়তনের দিক দিয়ে সর্ববৃহৎ তারা হলেও কিন্তু ভরের দিক দিয়ে নয়। অধিকাংশ লাল অতিদানব তারাগুলোর ব্যাস সূর্যের ব্যাসের দু’শ থেকে আট’শ গুণ বড় হয়ে থাকে। এরা সংখ্যায়ও অনেক। সাধারণত: দশ থেকে এক’শ মিলিয়ন বছর টিকে থাকে এবং গুচ্ছাকারে অবস্থান করে।
পৃথিবীর সবচেয়ে কাছের লাল বামন নক্ষত্র হলো চার আলোকবর্ষ দূরের থাকা প্রক্সিমা সেন্টরাই নামক তারা। কালপুরুষ নক্ষত্রমন্ডলের আর্দ্রা তারাটি লাল অতিদানব তারার একটি উদাহরণ। ১০০ বছরে এই তারার মধ্যে যে পরিমাণ তাপশক্তি উৎপন্ন হয়, সূর্যের মধ্যে সেই শক্তি তৈরি হতে সময় লাগে মোট এক সপ্তাহ। সুতরাং এরকম কম উত্তাপযুক্ত লাল বামন গ্রহে প্রাণ ধারন সম্ভব, তা সে সূর্যের যতোই কাছে হোক না কেন। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা অন্তত সে কথাই জোর দিয়ে বলছেন।
বিজ্ঞানীরা বলছেন বটে, তবে তাদের নিজেদের কথার ওপরও পুরোপুরি ভরসা নেই। কেননা প্রশ্ন উঠেছে, লাল বামন তারাদের উত্তাপ কম হতে পারে, কিন্তু সূর্যের নৈকট্য তাদের পরিবেশকে কি প্রভাবিত করবেনা? তাছাড়া উপগ্রহ চাঁদের সঙ্গে পৃথিবীর কক্ষপথ যেমন গাঁটছড়ায় বাঁধা, তেমনি এই লাল বামন তারাগুলোও সূর্যের কক্ষপথ থেকে আর বেরোতে পারবে না। এর ফলে তারাগুলোর একটি দিক সব সময় সূর্যের দিকে মুখ করে রয়েছে। সেখানে প্রচন্ড উত্তাপে তারার মাটি চৌচির।
অন্য দিকটায় কোনোকালেও সূর্যের আলো পৌঁছায় না। ফলে সেখানে হিম শীতল আবহাওয়ার রাজত্ব। সেখানে ঠান্ডা এতোটাই বেশি যে, আবহমন্ডলের গ্যাসীয় পদার্থও বরফের মতো জমে রয়েছে। লাল বামন গ্রহের আবহমন্ডল যদি পৃথিবীর মতো ঘন আস্তরনের হতো, তাহলে হয়তো ওই নক্ষত্রের সূর্যের দিকে মুখ ফেরানো অনন্তকাল ধরে দিন হয়ে থাকা অঞ্চল থেকে অতিরিক্ত উত্তাপ ও শক্তি, গ্যাসের সাহায্যে তারার জন্য হীমশীতল দিকে প্রবাহিত হতে পারতো। এর ফলে লাল বামন তারার চির অন্ধকার অঞ্চলে কিছুটা উত্তাপ সঞ্চার হলেও হতে পারতো।
গবেষকরা বলছেন, যে কোনও এককোষী প্রাণীর জীবন ধারনের ক্ষেত্রেও পরিবেশের উত্তাপ অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। তাহলে কি আবহমন্ডল ঘন নয় বলে লাল বামন নক্ষত্রে প্রাণ ধারনের অস্তিত্ব একান্তই অসম্ভব? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাসার অ্যাসেস রিসার্চ সেন্টারের রবার্ট হার্বাল ও মনোজ একথা মানতে নারাজ। অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তারা দেখেছেন-লাল বামন গ্রহের আবহমন্ডলের ঘনত্ব যদি পৃথিবীর আবহমন্ডলের মাত্র পনের শতাংশও হয় তাহলেও সূর্য দ্বারা উত্তাপ্ত অঞ্চল থেকে সেই আবহমন্ডল তারার অন্ধকার ও হিমশীতল অংশের তাপ বয়ে নিয়ে যেতে পারবে।
তবে গ্রীনউইচ মানমন্দিরের জ্যোতিবির্জ্ঞানীরা সন্দেহ প্রকাশ করেছেন-লাল নক্ষত্রে যে পরিমাণ পানি রয়েছে তা জমে গিয়ে কঠিন অবস্থায় থাকবে, না হয় বাষ্প হয়ে উড়ে যাবে। তাদের মতে লাল নক্ষত্রে বিশাল সমুদ্র থাকতে পারে। প্রচন্ড ঠান্ডায় সেই সমুদ্রের উপরের অংশের পানি জমে যেতেই পারে। কিন্তু সমুদ্রের ভেতরের দিকে, অর্থাৎ তলদেশের পানি কিন্তু তরল অবস্থায়ই থাকবে। নক্ষেত্রের ভূস্তরের (জিও থার্মাল) তাপের জন্য, এই পানিই আবার লাল নক্ষত্রের উত্তপ্ত অংশে ফিরে যেতে পারবে।
তাহলে লাল নক্ষত্রে পৃথিবী গ্রহের মতো ঋতুচক্র বলে কিছু থাকবে কি? কেননা সূর্যের সঙ্গে এই ধরনের নক্ষত্রের মাধ্যাকর্ষণ টান এতোই বেশি যে, এ ধরনের নক্ষত্র কখনোই নিজের অক্ষরেখার ওপর তির্যকভাবে বা হেলে থাকবে না। এর ফলে নক্ষত্রগুলোর একদিকে চিরকালই আলো ও অন্যদিকে চিরকালই অন্ধকার হয়ে থাকবে। জ্যোতিবির্জ্ঞানীরা বলছেন- লাল বামন নক্ষত্রে সব সময় উত্তপ্ত অংশটির মধ্যভাগে অর্থাৎ নিরক্ষরেখার মত অঞ্চলে তাপমাত্রা সবচেয়ে বেশি থাকতে পারে। যা প্রায় চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মতো। সূর্য থেকে যতোটা দূরে সরে যাওয়া যায় তাপমাত্রা ততোই কমতে থাকে। লাল বামন নক্ষত্রের অবস্থান চির অন্ধকার মেরু প্রদেশে। তাই একথা বলা বাহুল্য যে, বরফের চিরকালীন আস্তরন রয়েছে এখানে।
আর তাই জ্যোতিবির্জ্ঞানীরা এই ধরনের নক্ষত্রেই প্রাণের সম্ভাবনার কথা স্বীকার করেছেন। তারা আরও বলেছেন-এই বরফের মধ্যে যেটুকু পানি আবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে, তার মধ্যেও কোনো কোনো নিম্ন গোত্রীয় উদ্ভিদ সালোক-সংশ্লেষণ ঘটিয়ে খাদ্য উৎপন্ন করতে সক্ষম। কিন্তু সালোক-সংশ্লেষণের অনুঘটক হিসেবে কিছুটা সূর্যের আলো তো লাগবে? এছাড়া লাল তারার যে অংশে সব সময় সূর্যের আলো এসে পড়ছে সেখানেও সালোক-সংশ্লেষণ চালানো এক কথায় অসম্ভব। কেননা লাল তারার মধ্যে আসা সৌর রশ্মি ইনফ্রারেড আলোক তরঙ্গ হিসেবে বিকিরিত হয়ে থাকে। এ ধরনের তরঙ্গ দৈর্ঘ্যে সালোক-সংশ্লেষণ ঘটানোর জন্য প্রয়োজনীয় সৌরশক্তি পাওয়া অসম্ভব। এতে দেখা যায় সৌর কলঙ্ক বা সান স্পটের মতো কিন্তু আয়তনে আরও বড় বেশ কিছু তড়িৎ চুম্বকীয় ঝড়ের কেন্দ্র বা স্টার ¯পট। অবশ্য এমন অনেক গাছপালা রয়েছে যারা তাদের পাতার রং বা ক্লোরোফিল এর ঘনত্ব পাল্টে এই নক্ষত্র কলঙ্ক থেকে আরও বেশি তাপ ও আলো শুষে নিতে সক্ষম।
বিজ্ঞানীরা জানান, লালা বামন তারার মধ্যে, মাঝে মাঝেই সৌর ঝড় দেখা দেয়। সূর্যের দ্বিগুণ উত্তাপ্ত নিয়ে এই তারায় দেখা যায় আগুনের শিখা। অবশ্য এই ধরনের প্রাপ্ত উত্তাপ পৃথিবী সৃষ্টির প্রথম অবস্থাতেও দেখা দিয়েছিলো। সুতরাং প্রাণের ক্রম বিবর্তনের পক্ষে এই ধরনের উত্তাপ রীতিমতো সহায়ক হতে পারে। জীবকোষের মধ্যে হঠাৎ পরিবর্তন বা মিউটেশনও সম্ভব এই ধরনের উত্তাপের ফলে সূর্যের থেকে অনেক কম পরিমান ইন্দন বা হিলিয়াম ও হাইড্রোজেন নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে এই লাল তারাগুলো। এদের মধ্যে জমে থাকা তাপ শক্তির ক্ষয়ও হয় খুব ধীরে ধীরে। তাই লাল বামন তারার আয়ূষ্কাল অনেক বেশি অর্থাৎ হাজার বিলিয়ন বছর।
যেখানে সূর্যের আয়ু মোটে আট বিলিয়ন বছর। পৃথিবীতে প্রাণের ক্রম বিবর্তন হয়েছে প্রায় সাড়ে চার বিলিয়ন বছর ধরে। সৌর জগতের ক্রম বিবর্তনও ঘটেছে এই সময়কালের মধ্যে। সুতরাং লাল নক্ষত্রে প্রাণের বিকাশ নিঃসন্দেহে আরও বেশি সময় ধরে ঘটতে পারে। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা দৃঢ়ভাবে মনে করছেন-আকারে ছোট লাল বামন তারাগুলোর মধ্যে প্রাণের অস্তিত্ব থাকতেই পারে। এই তারাগুলোর বাইনারী বা জোর পদ্ধতিতে একে অপরকে কক্ষপথের মধ্যে থেকে আবর্তন করছে। পৃথিবীর কক্ষপথের সঙ্গে সমতলে থাকার ফলে এই তারাগুলোতে নিয়মিতভাবে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত হয়। বিজ্ঞানীরা জানান, এরকম যে কোনো লাল বামন তারায় হয়তো প্রাণের অঙ্কুর ফুঁটে উঠেছে।
এক সময় মনে করা হতো সৌরজগতের মতো কোনো গ্রহমন্ডলী হয়তো বিশ্ব ব্রহ্মান্ডে আর নেই। কিন্তু এখন মৃত তারাদের চারপাশেও আবর্তন করা গ্রহদের সন্ধান মিলছে। তাই ধারণা করা যায়-হয়তো একদিন একাধারে প্রচন্ড উত্তপ্ত ও প্রচন্ড শীতল লোহিত নক্ষত্রের মধ্যে সত্যি সত্যিই মিলবে অপার্থিব প্রাণের সন্ধান।
লেখক: বিজ্ঞান লেখক ও গবেষক। এম.ফিল স্কলার, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
কেএসকে/এএসএম