আজ বাইরে খাওয়ার দিন
মোহাম্মদ রায়হান
অফিসের কাজের চাপে স্ত্রীকে নিয়ে বাইরে কোথাও যাওয়ার সময়ই পান না। ক্যান্ডেল লাইট ডিনার কিংবা দুপুরে বহুকাল একসঙ্গে বাইরে কোথাও খেতে যান না। সম্পর্কে দূরত্বও বেড়েছে এসবের চাপে। তাদের জন্য আজ উপযুক্ত একটি দিন।
আবার যারা পরিবারকে একেবারেই সময় দিতে পারছেন না। হয়তো চাকরির জন্য হাজার মাইল দূরে বাস করেন। ইচ্ছে হয় পরিবারের সঙ্গে একটা বেলা ভালোমন্দ খাবেন, বাহিরে ঘুরবেন। তারাও আজকের দিনটিকে কাজে লাগাতে পারেন। আজ সারাদিন বাইরে ঘুরে বেড়ান আর খাওয়া দাওয়া করুন। আজ যে বাইরে খাওয়ার দিন বা ‘ইট আউটসাইড ডে’।
আমাদের দেশে এই দিন নিয়ে খুব একটা জানাশোনা না থাকলেও বিশ্বের অনেক দেশেই পালিত হয় দিনটি। প্রতিবছর ৩১ আগস্ট বাইরে খাওয়ার দিন পালন করেন অনেকেই। বন্ধু, প্রিয় সঙ্গী কিংবা পরিবার, যাদের সঙ্গে সময়ের অভাবে কিছুটা দূরত্ব তৈরি হয়েছে তাদের সঙ্গে দিনটি কাটান। আবার যারা সবসময় পরিবারকে সময় দেন তারাও বাদ যান না। এইদিনে বাইরে কোথাও ঘুরতে যান, সমুদ্রের ধারে কিংবা কাছাকাছি কোনো জঙ্গলে গিয়ে বারবিকিউ করতে পারেন।
আজকের দিনে অন্তত ব্যস্ততাকে গুছিয়ে প্রিয় মানুষদের নিয়ে কিছুসময় বাইরে ঘুরে ঘুরে খেতে থাকুন। সম্ভব হলে পেট খালি থাকা সাপেক্ষে সারাদিন খেতে থাকুন বাইরে। কারণ আজ তো বাইরে খাওয়ারই দিন।
১৭ শতকের দিকে জার্মানিতে বার গড়ে ওঠে। এরপর ১৮ শতকের দিকে আমেরিকাতে পিকনিক জনপ্রিয় হয়ে ওঠে যখন সেখানকার বাসিন্দারা নিজেদের প্রমোদ উদ্যানে নানা ধরনের পার্টির আয়োজন রাখতো। এই ধারণাটিই পরবর্তীতে জনসাধারণের মধ্যে ছড়িয়ে যায় এবং তারা স্থানীয় উদ্যান, বন কিংবা গাছের নিচে এটি উপভোগ করতে থাকে।
আবার অনেক গবেষক মনে করেন বাহিরে খাওয়ার এ প্রবণতা প্রথমে নিউইয়র্কের কনি আইল্যান্ডে চালু হয়। এই আইল্যান্ডে প্রথম রোলার কোস্টারটি চালু হয় ১৮৮৪ সালে। এটি স্থাপন করা হয়েছিল একটি পার্কে। তখন অনেক মানুষ সেখানে আসতেন রোলার কোস্টার দেখতে।
সেসময় মানুষ পার্কে সময় কাটানোর জন্য বাড়ি থেকেই খাবার নিয়ে আসতেন। আবার একটি রেস্তোরাঁ রুটির মধ্যে সসেজ ও সস দিয়ে এখনকার হট ডগের মতো একটি খাবার বিক্রি করত। যা মানুষ কিনে বাইরে হাঁটতে হাঁটতে খেত। ধারণা করা হয়, হটডগের জন্ম এখান থেকেই। বাইরে খাওয়ার দিনটিও এসেছে এখান থেকে। তবে বাইরে খাওয়ার দিনটি সম্পূর্ণই মজা করে উদযাপন করা হয়।
বাইরে খাওয়ার দিনটি যেভাবে উপভোগ করতে পারেন-
>> আপনি বিবাহিত হয়ে থাকলে স্ত্রীকে নিয়ে বিকেলে বের হতে পারেন। তার প্রিয় স্ট্রিট ফুডগুলো উপভোগ করুন। আপনার স্ত্রীর প্রিয় রেস্টুরেন্টে ভারী খাবারগুলোও উপভোগ করতে পারেন।
>> প্রেমিক/প্রেমিকা হলে সব সময়ের মতোই বের হতে পারেন। বিশেষ করে যারা একত্রে খুবই কম বের হন, আজকের দিনটি দেখা করার জন্য বেছে নিতে পারেন। বাইরে খাওয়ার দিনে পকেট উজাড় করে দুজনের প্রিয় খাবারগুলো উপভোগ করুন।
>> এদিনে পরিবারের সঙ্গে একটি চমৎকার দিন কাটাতে পারেন। কাছে কিংবা দূরের কোনো সুন্দর জায়গায় পরিবার নিয়ে ছোটখাটো একটি পিকনিকের আয়োজন করতে পারেন।
>> বাইরে খাওয়ার দিনে বন্ধুদের সঙ্গে চমৎকারভাবে দিনটি কাটিয়ে দিতে পারেন। অফিসের ব্যস্ততা কিংবা পারিবারিক ঝামেলা কাটিয়ে ঐ দিনটায় বন্ধুরা পার্টির আয়োজন করুন। গ্রীল পার্টি, বারবিকিউ অথবা একসঙ্গে যে কোনো পছন্দের খাবার দিয়ে দিনটি সাজিয়ে তুলুন।
সূত্র: ডেইস অব দ্য ইয়ার
কেএসকে/এমএস