নগরজুড়ে কৃষ্ণচূড়া-সোনালুর রূপের অঞ্জলি
তপ্ত গ্রীষ্মের এক পশলা বৃষ্টিতে প্রাণ ফিরছে গাছে গাছে। নগরীর রুক্ষ প্রকৃতিতেও যেন এখন জীবনের স্পন্দন। কৃষ্ণচূড়া, রাঁধাচূড়া, সোনালু, জারুলে সেজেছে রাজধানী ঢাকা। কোটি মানুষের বোঝা হালকা হয়ে কয়েকটা দিন যেন হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছে প্রকৃতি। সেজেছে আপন ঢঙে, আপন রঙে।
ছুটি শেষে নগরবাসী যখন ফিরছে তখন গাছে গাছে মন রাঙানো কৃষ্ণচূড়া, বকুল, জারুল যেন স্বাগত জানাচ্ছে প্রাণ খুলে।
কে বলে গ্রীষ্ম কেবলই রুক্ষ, তপ্ত! জাতীয় সংসদ ভবন সংলগ্ন যে সড়কটি আগারগাঁও গেছে সেই সড়কটির একপাশে কৃষ্ণচূড়া, রাঁধাচূড়ার গাছের সারি। আর যে সড়কটি মিলেছে ধানমন্ডিতে তার দুপাশেই বকুল, জারুল, কৃষ্ণচূড়া, রাঁধাচূড়া, সোনালুর মিলনমেলা।
রোববার (৮ মে) দুপুরের আগের এক পশলা বৃষ্টিতে যেন গাছগুলো আরও বর্ণিল রূপ ধারণ করেছে।
সংসদ ভবন এলাকায় অনেকেই বকুল ফুল কুড়িয়েছেন। সামনের ফুটপাতে থোকায় থোকায় ঝুলে আছে আগুনরঙা ফুল সোনালু। প্রতিবেশী কৃষ্ণচূড়া, রঙ্গনও লাল হয়ে আছে। ইট-পাথরের নগরীতে প্রকৃতির নজরকাড়া সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে মনের আনন্দে নানার সুরে গান গাইছে পাখি। বর্ণ, গন্ধ, কলতানে এ যেন এক উৎসব।
সংসদ ভবনের ফুটপাতে দীর্ঘক্ষণ হেঁটে বকুলের তলায় বিশ্রাম নিচ্ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী মারজিয়া মেরি। জাগো নিউজকে তিনি বলেন, বকুল ফুলের গন্ধ, শুভ্রতা অনেক ভালো লাগে। কয়েকদিন পরই এই জায়গা লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠবে, তখন প্রকৃতির এই রূপ উপভোগ করা কঠিন হবে। তখন আর বকুল ফুল কুড়াতে আসা হবে না।
গ্রীষ্মের প্রকৃতি নিয়ে নিসর্গবিদ মোকারম হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, গ্রীষ্মের পুষ্প বিন্যাসের যে রং, ও তার যে ব্যাপ্তি সেটা এক কথায় অসাধারণ। শুধু রঙেই নয়, সুবাসেও গ্রীষ্ম অন্য ঋতু থেকে আলাদা।
তিনি আরও বলেন, প্রকৃতির মাধুর্যতা, স্নিগ্ধতা আমাদের চোখে পড়ে না। বরং রুক্ষ রূপটাই সামনে আসে। কেননা আমাদের নগরী পরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠেনি। শহর ছাড়াও পুরো দেশটাই প্রাকৃতিকভাবে অনেক সুন্দর। বিশেষ করে গ্রীষ্মে যখন জারুল, সোনালু, কৃষ্ণচূড়া ফোটে তখন আলাদা একটা আবহ তৈরি হয়। এই ফুলগুলো সারাদেশেই ফোটে। পরিকল্পিতভাবে আরও গাছ লাগালে সব ঋতুতেই ঢাকা আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।
এসএম/আরএডি/এএসএ/জেআইএম