গাড়ির গতিতে ছুটতো যে ভয়ংকর প্রাণী
জুরাসিক যুগের এই প্রাণীটিকে নিয়ে মানুষের কৌতূহলের শেষ নেই। যতই দিন যাচ্ছে ততই যেন বিজ্ঞানীদের নেশায় পরিণত হচ্ছে রহস্য উম্মোচন। সাড়ে ছয় কোটি বছর আগে ডাইনোসর বিলুপ্ত হয়েছে পৃথিবী থেকে। যার রহস্য এখনো পৃথিবীর মানুষকে রোমাঞ্চিত করছে।
অনেক বিজ্ঞানী দাবি করেন, ২৩ কোটি বছর আগে আবর্তিত ডাইনোসররা এখন বেঁচে আছে টিকটিকি হয়ে। তবে এর জোরালো কোনো সত্যতা এখনো পাওয়া যায়নি। টিকটিকির সঙ্গে ডাইনোসরের ডিএনএতে নাকি খানিকটা মিলও পেয়েছেন তারা।
এবার এমন মাংসাশী প্রজাতির ডাইনোসরের সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এদের পায়ের পাতায় ছিল তিনটি আঙ্গুল। যা দিয়ে এরা ছুটতে পারত দ্রুত গতির গাড়ির মতোই। এজন্য এদের বলা হয় থেরোপডস। বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি এই থেরোপডসদের পায়ের ছাপ নিয়ে গবেষণা করেছেন।
পায়ের ছাপগুলো প্রায় ১০ লাখ বছরের পুরনো। স্পেনের লা রিয়োজা এলাকায় একটি হ্রদের পার্শ্ববর্তী কাদার উপর পাওয়া যায় এই পায়ের ছাপগুলো। গবেষকরা মোট দু’সেট পায়ের ছাপ খুঁজে পেয়েছেন। এরপর এই ডায়নোসরদের পায়ের ছাপ বা জীবাশ্ম নিয়ে গবেষণা শুরু করেছেন বিজ্ঞানীরা।
বিশ্ব বিখ্যাত ‘নেচার’ জার্নালে এই গবেষণা সম্পর্কিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। গত ৯ ডিসেম্বর এই প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছিল। সেখানে বলা হয়েছে, এই পদচিহ্নের যেসব ডায়নোসর সৃষ্টি করেছে, তারা ঘণ্টায় ৪৪.৬ কিলোমিটার গতিতে ছুটতে পারে। অন্য কোনো প্রজাতির ডাইনোসরই এতো দ্রুত ছুটতে পারত না।
এই প্রজাতির ডায়নোসররা চলতে চলতেই নিজের গতিবেগ পরিবর্তন করতে পারত। পায়ের ছাপ থেকে আরও জানা যায়, এক্ষেত্রে ধারাবাহিক ভাবে গতি পরিবর্তন হয়েছিল। অর্থাৎ ক্রমশ গতি বাড়িয়েছিল ডায়নোসরটি। তবে অন্য ডায়নোসরটি চলন্ত অবস্থায় দ্রুত গতি পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়েছিল।
দুটো পায়ের ছাপ গবেষণা করে এই সিদ্ধান্তেই উপনীত হয়েছেন গবেষকরা। এই গবেষণার পুরোধা স্পেনের লগরোনো- র লা রিয়োজা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক পাবলো নাভারো লর্বস।
তিনি বলেন, স্পেনে যে দুই ডায়নোসরের পায়ের ছাপ আছে তাদের জিন বলা কার্যত অসম্ভব। কিন্তু এই দুই থেরোপডস যে একই গ্রুপের, তা আন্দাজ করেছেন তারা। এদের গতিপথেও রয়েছে বেশ কিছু মিল। তবে এই প্রজাতির ডায়নোসররা উড়তে পারত না।
এরা নন-এভিয়ান গোত্রের। তবে এরা খুবই চটপটে স্বভাবের ছিল। এখনো চলছে এই ডাইনোসরদের নিয়ে বিস্তর গবেষণা। আশা করা যায়, খুব শিগগিরই আরও রোমাঞ্চকর তথ্য সামনে আসবে এদের নিয়ে।
সূত্র: লাইভ সায়েন্স
কেএসকে/জেআইএম