ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ফিচার

২৬ বছরেও তিনি এক বছরের শিশু!

ফিচার ডেস্ক | প্রকাশিত: ০২:১৩ পিএম, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২১

তার জীবন থেকে কেটে গেছে ২৫ বছর। তবুও স্বাভাবিক মানুষের মতো জীবন উপভোগ করতে পারেননি মনপ্রীত সিং। তিনি দেখতে এখনও সেই এক বছরের শিশুর মতোই। বিরল এক রোগে আক্রান্ত হয়ে মনপ্রীত অন্যদের মতো বেড়ে উঠতে পারেননি।

মাত্র ১১ মাস বয়সের পর মনপ্রীতের বিকাশ থমকে যায়। এ কারণে কথা বলতেও শেখেননি মনপ্রীত। বয়স বাড়ছে ঠিকই তবে শারীরিক বিকাশ ঘটেনি এই মানুষটির। বিরল এক রোগে আক্রান্ত হওয়ায় সঠিক চিকিৎসাটুকুও পাননি তিনি।

ভারতের পাঞ্জাবে ১৯৯৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন মনপ্রীত সিং। জন্মের পর তিনি আর পাঁচটি স্বাভাবিক শিশুর মতোই ছিলেন। তবে ১১ মাসের পর থেকে আর বেড়ে ওঠেননি তিনি। বর্তমানে মনপ্রীত সিংয়ের বয়স ২৬ বছর।

jagonews24

মনপ্রীতকে তার প্রতিবেশীরা ‘পিন্ট সাইজ ম্যান’ বলে ডাকেন। বর্তমানে মনপ্রীত তার চাচা-চাচীর কাছে থাকেন। তার বিরল রোগটি শনাক্তের জন্য অনেক চেষ্টা করেছেন চিকিৎসকরা। অবশেষে তারা জানান, মনপ্রীতের রোগটি সম্ভবত হরমোনের একটি ব্যাধি।

মনপ্রীতের বাবা একজন দরিদ্র কৃষক হওয়ায় সন্তানকে উন্নত চিকিৎসা করাতে পারেননি। তবে অনেক চিকিৎসক ও গবেষকরাই মনপ্রীতের এই বিরল রোগ নিয়ে গবেষণা করেছেন। তাদের মতে, মনপ্রীত ল্যারন সিনড্রোমে ভুগছেন।

jagonews24

যারা এই বিরল জেনেটিক রোগে ভুগেন তাদের শরীর গ্রোথ হরমোন ব্যবহার করতে অক্ষম হয়। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এই বিরল জেনেটিক রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বিশ্বজুড়ে মাত্র ৩০০ জন। এর এক তৃতীয়াংশ মানুষই ইকুয়েডরের দক্ষিণ লোজা প্রদেশের প্রত্যন্ত গ্রামে বাস করে।

মনপ্রীতের এক ভাই ও এক বোন আছেন। যারা শারীরিক ও মানসিকভাবে একেবারেই সুস্থ। মনপ্রীতের এই বিরল ব্যাধি সম্পর্কে বিশেষজ্ঞদের মত, ল্যারন ব্যাধিতে আক্রান্তদের ইনসুলিনের মতো গ্রোথ ফ্যাক্টর ১ বা আইজিএফ ১ নামে একটি হরমোনের অভাব আছে। যা কোষকে বাড়তে ও বিভক্ত হয়ে নতুন কোষ গঠনে উদ্দীপিত করে।

jagonews24

মনপ্রীতের পা ও মুখ বেশ বড়। তার শরীরের চামড়া ফ্যাকাশে। বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন মনপ্রীত। তিনি হাসতে, চিৎকার করতে ও কাঁদতে পারেন। তবে কথোপকথন করতে পারেন না। শুধু মা, মামা ইত্যাদি শব্দ সামান্য উচ্চারণ করে থাকেন।

এছাড়াও মানুষকে অনুকরণ করতে পারেন মনপ্রীত। তিনি ইশারায় যোগাযোগ করার দক্ষতা শিখেছেন। তার চাচা করনভীর সিং (৪৫) বলেন, কোনো অতিথিকে দেখলে তার সঙ্গে করমর্দন করে অভ্যর্থনা জানান ও বসার জন্য অনুরোধ করেন মনপ্রীত।

jagonews24

আবার কুকুর বা অন্য কোন প্রাণীর ডাকে সে ভয় পায় ও কাঁদে। কোনো শিশু বা অতিথিকে দেখলে তার সঙ্গে বসার জন্য হাত দিয়ে ইশারা করেন। এমনকি তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ারও চেষ্টা করেন মনপ্রীত।

তার চিকিৎসার বিষয়ে চাচা করনভীর জানান, আমরা তাকে বেশ কয়েকজন ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়েছিলাম। তবুও তার অবস্থা ভালো হয়নি। আমরা তার ভাগ্য মেনে নিয়েছি ও আনন্দদায়ক পরিবেশে তাকে লালন-পালন করছি।

jagonews24

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা তাকে কয়েকবার তার বাবা-মায়ের কাছে ফেরত পাঠিয়েছিলাম। তবে সে তাদের সঙ্গে থাকতে চায় না। মনপ্রীত তখন খাওয়া বন্ধ করে সারাক্ষণ কাঁদে।’

সূত্র: মেট্রো/জেন্টসাইড

জেএমএস/এএসএম

আরও পড়ুন