জাদুশিল্পী রাশেদের ‘বাংলার মিস্টার বিন’ হয়ে ওঠার গল্প
একটি লোক অদ্ভুত অদ্ভুত কাণ্ড ঘটায়। তার পরনে থাকে সব সময় স্যুট-বুট এবং হাতে একটি পুতুল। তার কাজ দেখে হেসে গড়াগড়ি খায় সবাই। কিন্তু লোকটার তাতে থোড়াই কেয়ার! তিনি কিন্তু একদম নির্বিকার। জনপ্রিয় এ চরিত্রটি কে? তা একবাক্যে সবাই বলে দিতে পারবেন।
আমরা জানি, তিনি হলেন মিস্টার বিন। আমাদের হাসির খোরাক জোগানো মিস্টার বিন। মিস্টার বিন বিদেশি চরিত্র হলেও বাংলাদেশে অবিকল মিস্টার বিনের মতো একজন আছেন। তিনি ‘বাংলার মিস্টার বিন’ হিসেবে খ্যাত। তার সম্পর্কে জানাচ্ছেন সাজেদুর আবেদীন শান্ত-
রাশেদ শিকদারের জন্ম ১৯৯৮ সালের ৫ অক্টোবর পাবনা জেলার আমিনপুর উপজেলার (বেড়া) খানপুরা গ্রামে। বাবা মো. আব্দুল মান্নান শিকদার ও মা মোছা. আসমা বেগম। তিনি ২০০৮ সালে পাইকান্দী খানপুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক, ২০১৪ সালে পাবনার আমিনপুর কাজিরহাট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও ২০১৮ সালে নাটরের দিঘাপতিয়া এম কে কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। বর্তমান তিনি পাবনার সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের বিএসএস ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী।
রাশেদ মূলত একজন জাদুশিল্পী। তার জাদুর হাতেখড়ি হয় ২০১০ সালে জাদুশিল্পী প্রিন্স আকাশের হাত ধরে। তারপর তিনি অনেকের কাছ থেকেই জাদু শিখেছেন। এরপর তিনি ২০১৭ সাল থেকে বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) জাদু বিষয়ক ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘চোখের পলকে’ নিয়মিতভাবে জাদু দেখান।
বাংলার মিস্টার বিন তথা অনুকরণীয় মিস্টার বিন হওয়ার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মি. বিনকে অনুকরণের কথা কখনো আমার মাথায় ছিল না। আমার শ্রদ্ধেয় জাদুশিল্পী এম রহমান আমাকে একদিন বললেন, রাশেদ! তুমি তো জাদুশিল্পী। কিন্তু তোমার চেহারার সাথে মি. বিনের চেহারার মিল আছে। তুমি যদি চেষ্টা করো, তাহলে বাংলার মি. বিন হতে পারবে।’
রাশেদ বলেন, ‘তারপর থেকেই চেষ্টা করে যাচ্ছি। তবে এটাকে অনুকরণ বলবো না। তার প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই আমি তাকে অনুসরণ করছি বছরখানেক হলো।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি বাংলার মি. বিন হিসেবে নিজেকে প্রকাশ করার আগে থেকেই লোকে বলতো, আপনাকে দেখতে মি. বিনের মতো লাগে। যারা আমার সম্পর্কে কিছুই জানেন না; তারাও প্রথম দেখাতে মি. বিন বলে আখ্যায়িত করত। তবে ছোটবেলায় কেউ যদি আমায় মি. বিন বলতো, আমার খুব রাগ হতো। এখন সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই, বিশ্বের কাছে পরিচিত এমন একজনের চেহারার সাথে আমার চেহারার মিল রেখেছেন।’
রাশেদ সাধারণভাবে জীবনযাপন করতে চান। এ ছাড়াও সমাজের নানাবিধ কল্যাণকর কাজ করে যেতে চান। নিজের স্বপ্নের পথে এগিয়ে যেতে সবার ভালোবসা ও সহযোগিতা কামনা করেন।
লেখক: ফিচার লেখক ও গণমাধ্যমকর্মী।
এসইউ/জিকেএস