৩ মাসে ৩ লাখ টাকার জামদানি বিক্রি
জামদানির সাথে জড়িয়ে আছে নারায়ণগঞ্জের নাম। সেই জেলার মেয়ে এবং সোনারগাঁয়ের বউ হয়ে জামদানির সাথে আবেগ ও ভালোবাসায় জড়িয়ে আছেন একজন। তিনি বাড়িয়া জাহান বৃষ্টি। বুঝতে শেখার পর থেকেই মনের কোণে ঠাঁই দিয়েছিলেন জামদানিকে।
তার উদ্যোক্তা জীবনের সফলতার গল্প শোনাচ্ছেন সাজেদুর আবেদীন শান্ত—
বৃষ্টি স্থাপত্য নিয়ে ডিপ্লোমা শেষ করেছেন ঢাকা মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে। বিএসসি করেছেন সোনারগাঁও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। পড়াশোনা চলার সময়ে চাকরি করেছেন ওমেন্স ওয়ার্ল্ড এবং যমুনা গ্রুপের মতো প্রতিষ্ঠানে।
বিয়ের পর সংসারের মায়ায় চাকরি আর করা হয়নি। তবে নিজে কিছু করার ইচ্ছে তার অনেক আগে থেকেই ছিল। বান্ধবীরা ভালো চাকরি নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করে তাকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলতেন, ‘আমি ভালো ব্যবসায়ী হবো।’
মনে মনে নিজের জন্য কিছু করার সঠিক প্লাটফর্ম খুঁজছিলেন। তারপর যুক্ত হন ফেসবুক ভিত্তিক ই-কমার্স গ্রুপে। কিছুদিন সবার পোস্ট পড়ে বুঝতে পারেন, এটাই তার কাঙ্ক্ষিত প্লাটফর্ম। যেখানে নিজের উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবেন। ফলে ২৯ আগস্ট থেকে জামদানি নিয়ে কাজ শুরু করেন।
বৃষ্টি বলেন, ‘প্রথম থেকেই পারিবারিক সাপোর্ট কম পেয়েছি। কারণ ২ বছরের বাচ্চা রেখে কাজ করা সম্ভব কি না, তা পরিবারের অনেকেই ভাবতে পারতেন না। আব্বু সরকারি চাকরি করেন। তাই তিনি ব্যবসা বোঝেন না। তারপরও আমার প্রথম ইনভেস্ট আব্বুই করেছেন। বাবার বাড়ির সবাই খুব সাপোর্ট করেছেন। আমার স্বামী প্রথম থেকে সব সময়ই পাশে আছেন। যেকোনো কাজে তিনি এগিয়ে আসেন।’
জামদানি পণ্য নিয়ে কাজ করার সুবাদে একেবারে প্রান্তিক পর্যায়ের তাঁতিদের সাথে পরিচয় ঘটে বৃষ্টির। এখনো সেসব তাঁতি অনেক সুবিধা থেকে বঞ্চিত। বৃষ্টির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, তাঁতিদের পরিশ্রম সফল করে জামদানি শিল্প বাঁচিয়ে রাখতে উৎসাহিত করা।
তিনি বলেন, ‘প্রায় শূন্য থেকে শুরু করেছি। ৩ মাসে জামদানি পণ্য বিক্রি করেছি ২ লাখ টাকার। প্রি-বুকিংসহ হিসাব করলে সংখ্যাটি হবে ৩ লাখ টাকা। ‘উই’ আমার স্বপ্ন পূরণের সুযোগ করে দিয়েছে।’
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে বৃষ্টি বলেন, ‘আমার জামদানি পণ্য এখন বিদেশেও যাচ্ছে। প্রতিটি দেশে NUH'S Gallery থেকে নারায়ণগঞ্জের জামদানি পণ্য ছড়িয়ে পড়ুক- এটাই আমার স্বপ্ন।’
লেখক: শিক্ষার্থী, বঙ্গবন্ধু কলেজ, ঢাকা।
এসইউ/জেআইএম