ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ফিচার

যেভাবে ১৮শ টাকায় সফল হলেন কান্তা

ফিচার ডেস্ক | প্রকাশিত: ০৮:২৩ এএম, ১৮ নভেম্বর ২০২০

সাজেদুর আবেদীন শান্ত

বগুড়ার আদমদিঘী উপজেলার চাঁপাপুর ইউনিয়নের মেয়ে কান্তা চক্রবর্ত্তী। তিন ভাই-বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। ২০১৪ সালে লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান বাবা। অনার্স পর্যন্ত পড়াশোনার খরচ টিউশনি করেই চালাতেন। পড়াশোনার ক্ষেত্রে বিভাগের শিক্ষকরা তাকে যথেষ্ট সাহায্য করেছেন।

এভাবেই তিনি সরকারি মুজিবুর রহমান মহিলা কলেজ থেকে অনার্স-মাস্টার্স শেষ করেছেন। মাস্টার্স শেষ করার পর মহিলা বিষয়ক অধিদফতরের জেলা অফিসে কম্পিউটার ইন্সট্রাক্টর পদে চাকরি শুরু করেন। চাকরি ও সংসার সামলে উদ্যোক্তা হওয়ার চেষ্টা করেন। ২০১৫ সালে পড়াশোনার পাশাপাশি কাপড়ের ব্যবসা শুরু করেন। তবে সেখানে সাফল্যের দেখা পাননি।

এরপর ২০১৬ সালে শুরু করেন হাতের তৈরি বিভিন্ন মুখরোচক খাবারের ব্যবসা। সেখানেও তেমন সুবিধা করতে পারেননি কান্তা। ব্যবসা করার কৌশল ও নিয়ম-কানুন জানাসহ কারো সহযোগিতা না থাকায় সফল হতে পারেননি। তাই শুরুতেই মুখ থুবড়ে পড়েন কান্তা। তবে হাল ছাড়েননি।

kanta

২০১৭ সালে ব্লক-বাটিকের প্রশিক্ষণ নিয়ে নতুনভাবে কাজ শুরু করেন কান্তা। পাশাপাশি নারীদের পোশাক রিসেলিং করেন। একই সাথে ধাপে ধাপে ২০ জন নারীকে ব্লক-বাটিকের প্রশিক্ষণ দেন। তাদের মধ্যে অনেকেই এখন কাজ করছেন। কিন্তু তাতেও মানসিক তৃপ্তি পাচ্ছিলেন না।

২০১৯ সালে শুরু করেন হাতে তৈরি গহনার কাজ। মাত্র ১৮শ টাকা মূলধন নিয়ে তিনি গহনার কাজ শুরু করেন। তখন তাকে শেখানোর কেউ ছিল না। কোনো মাধ্যমও পাননি তিনি। তাই বাজার থেকে হাতে তৈরি গহনা কিনে সেগুলো খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখেছেন। এমনকি খুলে খুলেও দেখেছেন।

kanta

তবে তার সম্বল ছিল ইউটিউব। অপরদিকে মুক্তা নামে একজন, যিনি নিজেও একজন ক্রাফটার। মুক্তার সাথে অনলাইনে পরিচয় হয় কান্তার। তিনি দূরে থেকেও কান্তাকে যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন। তাতে বেশ ভালোই চলছে কান্তার হাতে তৈরি গহনার কাজ। বর্তমানে তার মূলধন ১৮শ’ টাকা থেকে দাঁড়িয়েছে ৯৩ হাজার টাকায়।

তবে খাবারের প্রতিও আগে থেকেই একটা নেশা ছিল কান্তা। ফেসবুক ভিত্তিক একটি ই-কমার্স গ্রুপে যুক্ত হওয়ার পর তার মনের ইচ্ছাটি আবার জেগে ওঠে। তাই তিনি খাবার নিয়ে কাজ শুরু করেন ২০২০ সালের রমজান মাসে। সে সময় থেকে এখনো বেশ সাড়া পাচ্ছেন। এখনো কাজের পাশাপাশি বেশকিছু নারীকে উদ্যোক্তা হিসেবে তৈরি করার জন্য হাতেকলমে গহনা তৈরি ও ব্লক-বাটিকের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন।

kanta

উদ্যোগ সম্পর্কে কান্তা জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি চাই প্রত্যেকেই স্বাবলম্বী হোক। সুযোগের অভাবে নিজে অনেক কিছু করতে পারিনি। তাই সাধ্যের মধ্যে যতটুকু পারছি, অন্যদের সহযোগিতা করার চেষ্টা করছি। ভবিষ্যতেও এটা করে যাব। প্রতিভা সবার মাঝেই আছে। শুধু প্রয়োজন একটু সুযোগ। তাহলেই প্রতিভা বিকশিত হবে।’

কান্তা মনে করেন, প্রতিভা বিকাশের অন্যতম সেরা প্ল্যাটফর্ম হলো ই-কমার্স। তাই ই-কমার্স নিয়েও শিক্ষা নিচ্ছেন ‘উই’ এবং ডিজিটাল স্কিলস ফর বাংলাদেশ (ডিএসবি) থেকে। যা তার উদ্যোক্তা ও ব্যক্তিগত জীবনে অনেক বেশি সহযোগী ভূমিকা পালন করছে।

লেখক: শিক্ষার্থী, বঙ্গবন্ধু কলেজ, ঢাকা।

এসইউ/পিআর

আরও পড়ুন