ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ফিচার

আবার ফিরতে চাই তোমার ভালোবাসার রাজ্যে

ফিচার ডেস্ক | প্রকাশিত: ০১:০৩ পিএম, ৩১ মে ২০২০

নিশি পারভীন

বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের নাম ‘গণরুম’। রুম নম্বর ১০৯। ছোট্ট একটি রুম। ছোট ছোট বিছানা। তাতে কি! ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের এই রুমটিই আমাদের কাছে একটি রাজ্য। যে রাজ্যে আমরা সবাই রাজা। যে রাজ্যে ‘আমার’ বলে কিছু নেই। রয়েছে স্বাধীনতা, নেই কোন বাঁধা।

আমরা রুমে আট জন থাকি। যেন ছোটখাটো একটি পরিবার। আয়শা, সাদিয়া, অন্তরা, তানি, আফসানা, খুশি, মিম মিলে আমরা সবাই একটি পরিবার। অগণিত স্মৃতি, খুনসুটি, ভালোবাসা জড়িয়ে আছে। তা ছোট পরিসরে বর্ণনা করা সম্ভব নয়। সবাই মিলে খিচুড়ি রান্না করে খাওয়া, একসাথে ট্রুথ-ডেয়ার খেলা, একই রুমে থেকেও ভিডিও কলে কথা বলা, মাঝ-রাতে নাচ-গান করা, রাত জেগে আড্ডা দেওয়া। আহা! সব যেন আজ স্মৃতির পাতায় জায়গা করে নিয়েছে।

সাদিয়া ছিল আমাদের নাচের গুরু। অনেক ভালো নাচ করে। যখনই ওর মন খারাপ হতো; তখনই নাচতো। ওর ধারণা ছিল, নাচলে মনের মধ্যে চাপা কষ্টগুলো দূর হয়। মিম ছিল রান্নায় সেরা, বাহারী রকমের নান্না জানতো সে। মিমের হাতের নুডুলস্ এখনো মুখে লেগে আছে। খুব ভালো করে অন্যকে হিজাব পরিয়ে দিতে পারতো সে। আমরা কোনো অনুষ্ঠানে যাওয়ার আগে ওর কাছ থেকে হিজাব পরিয়ে নিতাম।

আয়শাটা সারাদিন বয়ফ্রেন্ডের সাথে ঝগড়া করত। ক্যাম্পাসে ভর্তি হওয়ার বছরখানেক হলেও আজ পর্যন্ত মেয়েটিকে পড়তে বসতে দেখার সৌভাগ্য হয়নি কারো। রুমের ঘুমকুমারী ছিল খুশিমনি। সারা দিন-রাত ঘুমালেও ক্লান্তি তাকে স্পর্শ করতে পারবে না। একদম বাচ্চাদের মতো করে কথা বলতো সে। তার সাথে মাঝে মাঝেই পাঁচকড়ি খেলতাম। আমার বাসা পাবনা। আমাকে রাগিয়ে তোলার জন্য তানি একটু পরপরই বলতো, ‘এই নিশি, তোর বাসাটা যেন কোথায়?’ আমিও মজা করে তাকে উত্তর দিতাম। বলতাম, ‘পামপা’।

বন্ধুদের খুবই মিস করছি। জানি না কবে করোনা নামের এই অদৃশ্য শত্রুর হাত থেকে রক্ষা পাবে দেশ! কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। কবেই বা আবার ফিরতে পারবো আমার ভালোবাসার রাজ্যে। আবারও ফিরতে চাই প্রিয় রুম ১০৯-এ। ফিরতে চাই ভালোবাসার মানুষদের কাছে। সেই সোনালি দিনের প্রতীক্ষায় প্রহর গুনছি প্রতিনিয়ত।

লেখক: শিক্ষার্থী, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।

এসইউ/পিআর

আরও পড়ুন