বন্ধ দোকানের সামনে একজোড়া ধনেশ পাখি
করোনাভাইরাসের কারণে সব কিছুই বন্ধ। বন্ধ পাড়া-মহল্লার দোকানও। সেই দোকানের সামনে বসে আড্ডা দিচ্ছে একজোড়া ধনেশ পাখি। ভারতের শিলিগুড়িতে দেখা গেছে এমন দৃশ্য। শাটার বন্ধ দোকানের সামনে মনের আনন্দে বসে আছে পাখি দুটি।
অবাক হলেও ঘটনা সত্যি। গভীর বনে থাকতে পছন্দ করা এ পাখিকে জনসমক্ষে দেখাটা অবাক হওয়ারই মতো কাণ্ড। তা-ও মনের আনন্দে পাখি দুটি বসে বসে গল্প করছে। তাদের কেউ বিরক্ত করছে না। তাই মহা আনন্দে চলছে দু’জনের আড্ডা। হয়তো লকডাউনের সুফল এ ঘটনা।
পাখিবিদরা বলছেন, এটি ‘পালাবান হর্নবিল’। ফিলিপিনের ভাষায় ‘তালুসি’ বলে ডাকা হয়। পাখিটি ২৮ ইঞ্চি লম্বা হয়। বনভূমিতে বসবাস করে এ পাখি। পাখনা সম্পূর্ণ কালো রঙের হয়, লেজ হয় সাদা। এদের ওপরের অংশে চকচকে ঘন সবুজ রং থাকে। ঠোঁট হয় ক্রিম রঙের, ঠোঁটের ওপরে শিরস্ত্রাণ থাকে। এরা খুব জোরে ডাকতে পারে।
বাংলায় এ পাখিকে ‘ধনেশ’ বলা হয়। এটি বিউসেরোটিডি গোত্র বা পরিবারভুক্ত পাখি। গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ও উপ-গ্রীষ্মমণ্ডলীয় আফ্রিকা, এশিয়া মহাদেশ এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জে অধিকাংশ ধনেশের প্রধান আবাস। নিচের দিকে বাঁকানো উজ্জ্বল বর্ণের বিশাল ঠোঁট ধনেশের প্রধান বৈশিষ্ট্য। ঠোঁটের উপরে অধিকাংশ সময়ে প্রবৃদ্ধি দেখা যায়।
স্ত্রী ধনেশ গাছের কোটরে ডিম পাড়ে। পরবর্তীতে পুরুষ ধনেশের সহযোগিতায় স্ত্রী ধনেশ ডিমে তা দেয় ও বাচ্চাকে বড় করে তোলে। ওই সময়ে এটি বাসা থেকে বের হয় না। পুরুষ ধনেশ খাবার সংগ্রহ করে আনে। স্ত্রী পাখির মুখে খাবার তুলে দেয়। ফলে বিভিন্ন খাদক প্রজাতির প্রাণি থেকে বাচ্চা নিরাপদ থাকে।
বাচ্চা উড়তে না শেখা পর্যন্ত এটি কাছেই থাকে। ফলমূল খাওয়া থেকে শুরু করে ছোট ছোট প্রাণিও এদের প্রধান খাবার। তবে এরা জোড়ায় জোড়ায় থাকতে ভালোবাসে। তাই তো লোকালয়েও একজোড়া ধনেশের দেখা মিলল। তবে বর্তমানে কিছুসংখ্যক ধনেশ প্রজাতি বিলুপ্তির ঝুঁকিতে রয়েছে। এদের বিপদগ্রস্ত প্রজাতি হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
এসইউ/জেআইএম