বন্যার ভয়াবহতা থেকে রক্ষা পাবেন যেভাবে
নদীমাতৃক বাংলাদেশে বর্ষাকাল যেন তার রাজত্ব বিস্তার করে। নদী-নালা, খাল-বিল ছাপিয়ে বর্ষার পানি তলিয়ে দেয় বসতবাড়ি, জমি-জমা, জনপদ। অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢল যেন বন্যায় রূপ নেয়। প্লাবিত হয় আমাদের আশপাশ। পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে দুর্ভোগ বাড়ায়। ফলে প্লাবিত অঞ্চলের মানুষকে দুর্বিষহ জীবন কাটাতে হয়।
প্রাকৃতিক এ দুর্যোগ থেকে রক্ষা পেতে পূর্বপ্রস্তুতি নিতে হয়। বন্যার ভয়াবহতা বাড়ার সাথে সাথে কিছু করণীয় সম্পর্কে জানতে হয়। আগেই জেনে নিন বন্যা মোকাবিলায় করণীয় সম্পর্কে-
১. আগে থেকেই বাড়ির ভিটা, নলকূপ, টয়লেট যত দূর সম্ভব উঁচু করতে হবে। এক্ষেত্রে অতীতের বন্যার পানির উচ্চতার মাত্রা মনে রাখতে হবে।
২. শস্য ও বীজ সংরক্ষণের জন্য নিরাপদ স্থানে মাচা তৈরি করতে হবে। গৃহপালিত পশু নিরাপদ স্থানে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।
৩. শুকনো খাবার বিশেষ করে মুড়ি, চিড়া, গুড়, চিনি সংরক্ষণ করতে হবে। বিশুদ্ধ খাবার পানি সংরক্ষণের জন্য চৌবাচ্চার ব্যবস্থা করতে হবে।
> আরও পড়ুন- ঝড়-তুফানের সময় যা করবেন
৪. সহজে বহনযোগ্য চুলা ও রান্না করার জন্য শুকনো জ্বালানির ব্যবস্থা করতে হবে। পানিবাহিত বিভিন্ন রোগের ওষুধ এবং প্রাথমিক চিকিৎসা সরঞ্জাম সংরক্ষণ করতে হবে।
৫. বৃদ্ধ, শিশু, শারীরিক প্রতিবন্ধী ও গর্ভবতী নারীর ওপর বিশেষ নজর দিতে হবে। এছাড়া প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বিশেষ করে টাকা-পয়সা, জমির দলিল, শিক্ষা সনদ নিরাপদ স্থানে রাখতে হবে।
৬. বন্যার দূষিত পানি পান করা যাবে না। পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ব্যবহার করে পানি পান করতে হবে। বন্যার পানিতে গোসল করা, জামা-কাপড় ধোয়া যাবে না।
৭. বন্যা পরিস্থিতিতে অবশ্যই নিকটস্থ আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যেতে হবে। পার্শ্ববর্তী দ্বিতল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাময়িক আশ্রয় নেওয়া যেতে পারে।
৮. অন্যের বিপদে হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত ঘর-বাড়ি মেরামত করতে হবে। বাড়ির আঙিনা থেকে ময়লা-আর্বজনা পরিষ্কার করতে হবে। পয়ঃনিষ্কাশন প্রণালি মেরামত করতে হবে।
> আরও পড়ুন- খেয়াঘাটেই আটকে যায় ওদের স্বপ্ন
৯. বন্যার পরে কৃষিকাজকে ত্বরান্বিত করতে হবে। সেজন্য বিভিন্ন সংস্থা থেকে ঋণ নেওয়া যেতে পারে। জীবিকা নির্বাহ করার জন্য দ্রুত কাজের অনুসন্ধান করতে হবে।
১০. ত্রাণ বিতরণ, সামাজিক ও আর্থ-সামাজিক প্রতিষ্ঠান মেরামত, বিভিন্ন অবকাঠামো পুনরায় নির্মাণ, স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করাসহ ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।
১১. বন্যাদুর্গত অঞ্চলে অপরাধকর্ম ও সহিংসতা প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, স্থানীয় সরকার, উপজেলা প্রশাসনকে একযোগে কাজ করতে হবে।
১২. দুর্যোগপ্রবণ অঞ্চলের কৃষি ও কৃষককে বাঁচাতে বিনামূল্যে কৃষিবীজ বিতরণ ও অন্যান্য কৃষি উপকরণ সরবরাহ করার জন্য সরকারের পাশাপশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসতে হবে।
এসইউ/এমকেএইচ