জ্বিন-ভূতের মাঠ এখন ঐতিহাসিক নিদর্শন
সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলা সদরের আগোলঝাড়া ও ডাঙ্গানলতা গ্রামের মধ্যবর্তী স্থানে মাঠের মধ্যে দীর্ঘদিনের পড়ে থাকা মাটির ঢিবিটি এখন দর্শনীয় স্থান। প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর মাটির ঢিবির মধ্যে খুঁজে পেয়েছে মধ্যযুগের পুরাকীর্তির নিদর্শন। যা দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছে অসংখ্য মানুষ।
ধারণা করা হয়, মোঘল আমলের কোন এক রাজা প্রার্থনার জন্য তৈরি করেছিলেন একটি মন্দির। কালের বিবর্তনে একসময়ে সেটি মাটি চাপা পড়ে। পরে সেটি এলাকায় জ্বিন-ভূতের তৈরি করা ‘ঝুড়ি ঝারার মাঠ’ নামে পরিচিতি লাভ করে।
> আরও পড়ুন- বেকার ও বিধবা নারীদের ভরসা মরিয়ম বুবু
জানা যায়, গত কয়েক মাস আগে সেখানে খননকাজ শুরু করে প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের একটি দল। এরপরই সব কাল্পনিক ধারণার পরিবর্তন ঘটে। এখন প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের আওতাধীন প্রাচীনতম নিদর্শন এটি। যা দেখার জন্য প্রতিদিন অসংখ্য মানুষের সমাগম ঘটে। আশেপাশে গড়ে উঠতে শুরু করেছে দোকানপাট। অবসর সময় কাটাতে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ সেখানে ভিড় করছেন।
স্থানীয় আগোলঝাড়া গ্রামের নাজমুল হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘জন্মের পর থেকেই আমরা স্থানটিকে ‘ঝুড়ি ঝারার মাঠ’ হিসেবে জানি। কথিত আছে, জ্বিনেরা পুকুর খননের পর সেখানে মাটির ঝুড়িগুলো ঝেরে ফেলে রাখে। সেই থেকে উৎপত্তি হয় ঝুড়ি ঝারার মাঠের। বর্তমানে প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর সেখানে খনন করে ঐতিহাসিক নিদর্শনের সন্ধান পেয়েছে।’
> আরও পড়ুন- ফেসবুকে ঝড় তুলেছে ছোট্ট সাম্যর গান
প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর খুলনার আঞ্চলিক পরিচালক আফরোজা খান মিতা জাগো নিউজকে বলেন, ‘মাটির ঢিবিটি খনন করে আমরা মধ্যযুগের একটি বৌদ্ধ মন্দিরের সন্ধান পেয়েছি। বৃষ্টির মৌসুম চলে গেলে সেখানে নতুনভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। যেগুলোর সন্ধান পেয়েছি, সেগুলো রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলোকে আমরা নষ্ট হতে দিতে চাই না।’
তিনি আরও বলেন, ‘তার চারপাশে প্রাচীর নির্মাণ করা হবে। সেইসঙ্গে দর্শনার্থীদের বসার ব্যবস্থা করা হবে। নিদর্শনটি দেখতে প্রতিদিন প্রচুর মানুষের ভিড় জমে। সবাইকে সতর্ক করা হয়েছে, যেন নিদর্শনের ক্ষয়ক্ষতি না হয়। তালাবাসী এটিকে দর্শনীয় স্থান হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন।’
আকরামুল ইসলাম/এসইউ/পিআর