যেসব দেশের সৈনিকরা বেশি মোটা
প্রতিটি দেশের সেনাবাহিনীর সৈনিকরা কেমন হবে, তা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। বিশেষ করে তাদের শারীরিক যোগ্যতা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে স্থূল হওয়ার প্রশ্নই আসে না। কিন্তু বেশকিছু গবেষণায় উঠে এসেছে- বিভিন্ন দেশের সৈনিকরা দিন দিন মোটা হয়ে যাচ্ছেন। গবেষণায় উঠে এসেছে নানাবিধ কারণ।
যদিও স্বাস্থ্য এবং ওজনের দিক থেকে একজন সৈনিক কেমন হবে- তা নির্ধারণ করার মাপকাঠি রয়েছে। যা বডি ম্যাস ইনডেক্স বা বিএমআই হিসেবে পরিচিত। এর মাধ্যমেই বের করা হয় যে, একজন সৈনিকের উচ্চতা ও ওজনের অনুপাত আদর্শ স্বাস্থ্যকর সীমার মধ্যে আছে কি-না।
সে অনুযায়ী গবেষণা করে দেখা গেছে, আমেরিকার সৈনিকদের ৬০ শতাংশই ‘অতিরিক্ত মোটা’। র্যান্ড কর্পোরেশন নামে একটি আন্তর্জাতিক থিংক ট্যাংকের প্রতিবেদনে এমনটি উঠে এসেছে। সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে, শুধু আমেরিকাই নয়, অনেক দেশেই সৈনিকদের মধ্যে স্থূলতা বা অলস জীবনযাপনজনিত সমস্যা তৈরি হয়েছে।
র্যান্ড কর্পোরেশনের মতে, আমেরিকার সৈনিকদের প্রায় ৬৬ শতাংশের ওজনই মাত্রাতিরিক্ত রকমের বেশি। আরও খারাপ খবর হচ্ছে, যারা নিয়োগের পরীক্ষায় বাতিল হয়, তাদের এক-তৃতীয়াংশই বাদ পড়ে অতিরিক্ত মোটা হওয়ার কারণে। স্থূলতা সমস্যার চিকিৎসার জন্য কিংবা বাদ পড়াদের শূন্যস্থান পূরণ করতে মার্কিন সামরিক বাহিনী প্রতিবছর দেড়শ’ কোটি ডলার খরচ করছে।
> আরও পড়ুন- মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতাল কেন সেরা?
অন্য এক গবেষণায় দেখা গেছে, শুধু আমেরিকার সৈনিকরাই নন, চীনা সৈনিকদের প্রধান সমস্যা ফাস্ট ফুড খাওয়া এবং হস্তমৈথুন। চীনা সেনাবাহিনীর পত্রিকা ‘পিপলস লিবারেশন আর্মি ডেইলি’র এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। এর সম্পাদকীয়তে লেখা হয়, নিম্নমানের খাবার, দীর্ঘসময় গেম নিয়ে বসে থাকা, অতিমাত্রায় হস্তমৈথুন এবং শারীরিক পরিশ্রমের অভাবই তরুণ সৈনিকের ফিটনেস টেস্টে অনুত্তীর্ণ হওয়ার সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার কারণ। বলা হয়, নতুনদের ২০ শতাংশ ওজন পরীক্ষায় খারাপ করছে। কিছু সৈনিক ৫ কিলোমিটারের দূরপাল্লার দৌড় শেষ করতে পারেনি।
অপরদিকে, ইরানে ১৩ শতাংশ সৈনিক মোটা। গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার ডট অর্গ নামে একটি ওয়েবসাইট বলছে, গত জানুয়ারি মাসে বিএমসি পাবলিক হেলথ নামে এক জার্নালের নিবন্ধে বলা হয়, ইরানে ৪১ শতাংশ সৈনিকের ওজন আদর্শ মাত্রার চেয়ে বেশি এবং ১৩ শতাংশ রীতিমতো মোটা।
এছাড়া ব্রিটিশ সৈনিকদেরও এ সমস্যা রয়েছে। দশ শতাংশ ব্রিটিশ সৈনিকই ডাক্তারি মাপকাঠিতে মোটা। এরকম এক প্রতিবেদনও প্রকাশ হয়। তাই একজন বিশেষজ্ঞ সতর্ক করে দিয়েছেন, সৈনিকরা যেভাবে মোটা হচ্ছে, তাতে হয়তো অচিরেই যুদ্ধবিমান এবং সাবমেরিনের চালকের আসন বড় করতে হবে।
> আরও পড়ুন- ভারত-পাকিস্তানের যত যুদ্ধ
শুধু তা-ই নয়, ভারতের এক-তৃতীয়াংশ সৈনিকও মোটা। তাই গত বছরের এপ্রিল থেকে সৈন্যদের খাবারের ব্যাপারে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। মোটা সৈনিক ও অফিসারদের পদোন্নতি এবং বিদেশে পোস্টিং নিষিদ্ধ করা হয়। পাশাপাশি স্পেন, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং মেক্সিকোর সেনা বাহিনীতেও এ সমস্যা মোকাবেলা করতে বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
অনেকেই ধারণা করেন যে, সামরিক বাহিনীর লোকেরা সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবে তা নয়। এর কারণ হিসেবে বলা হয়, তারা নানা রকম স্ট্রেস বা চাপের শিকার হন। মৃত্যু ও অন্যান্য ক্ষতিকর ঘটনা প্রত্যক্ষ করেন। ফলে তাদের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। ফলে তাদের মধ্যে অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণের অভ্যাস তৈরি হয়।
এসইউ/জেআইএম