ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ফিচার

অন্ধ জাহিদুলের প্রতিবন্ধকতা জয়!

ফিচার ডেস্ক | প্রকাশিত: ০১:০২ পিএম, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮

আমাদের দেশে এমন অনেকেই আছেন, যারা জীবনটাকে এগিয়ে নিচ্ছেন প্রতিকূলতাকে অগ্রাহ্য করে। তারা প্রতিকূলতা বা প্রতিবন্ধকতা জয় করে পৌঁছে গেছেন সাফল্যের চূড়ায়। এমনই একজন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী জাহিদুল ইসলাম। তিনি প্রচণ্ড ইচ্ছাশক্তিকে কাজে লাগিয়েছেন। দু’টি চোখ না থাকলেও তার কোন অভিযোগ নেই। নিজের পাশাপাশি অন্যের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও করেছেন। তার সংগ্রামী জীবনের গল্প শোনাচ্ছেন রিফাত কান্তি সেন-

গ্রামের ছোট-বড় সবার মুখেই জাহিদুল ইসলামের গুণগান। বাড়ি চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার সাছিয়াখালী গ্রামে। তিনি একজন কোরআনে হাফেজ। ১৯৮২ সালে আবু তালেব ও লুৎফুন নাহারের ঘর আলোকিত করে জন্ম নেন তিনি। চার ভাই-এক বোনের মধ্যে দ্বিতীয়। তার বয়স যখন দুই, তখনই দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেন।

jahidul-in-(1)

জন্মের দু’বছরের মাথায় অজানা রোগে চোখ দু’টি নষ্ট হয়ে যায়। চিকিৎসা করিয়েও তা ভালো করা যায়নি! কিন্তু চোখের দৃষ্টি না থাকলেও মনের জোর ছিল খুবই শক্তিশালী। পরিবারের সবার চেয়ে মেধাবী তিনি। চোখ না থাকলেও শিক্ষার প্রতি তার ছিলো প্রচণ্ড আগ্রহ। আগ্রহ দেখে অভাবের সংসারেও বাবা তাকে পশ্চিম দায়চরা হাফেজিয়া মাদ্রাসায় ভর্তি করিয়ে দেন।

> আরও পড়ুন- বাবা-মায়ের অনুপ্রেরণায় বুশরার পথচলা 

jahidul-in-(2)

শিক্ষাজীবনে বহু প্রতিকূলতা পারি দিতে হয়েছে তাকে। শিক্ষকরা পড়ে শোনাতেন, তিনি তা মুখস্ত করে ফেলতেন। এরপরে লাউতলী ও হুগলী মাদ্রাসায় অধ্যয়ন করেন। মেধাবী জাহিদুল ইসলাম শুনে শুনেই আয়ত্ত করতেন পড়া। শিক্ষাজীবনে বেশিরভাগ সময় ছাত্রাবাসে থেকেছেন। প্রচণ্ড প্রতিকূলতাকে জয় করে হেফজ পাস করেন।

তার কর্মজীবন শুরু হয় হুগলী মাদরাসা থেকে। চার বছর সেখানে শিক্ষকতাও করেন। বর্তমানে তিনি সাছিয়াখালী বায়তুল আকসা মসজিদের ইমাম। এছাড়া দেশের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে ওয়াজ-মাহফিল করেন। চমৎকার তার কণ্ঠস্বর। সবাই তাকে ‘অন্ধ হাফেজ’ নামেই ডাকে।

jahidul-in-(3)

জাহিদুল ইসলাম বিয়ে করেছেন। স্ত্রী তাকে কখনো হেয় করেননি। বরং তাকে চলার পথে সাহায্য করেছেন। সংসারে তাদের দুটি সন্তান রয়েছে। এক মেয়ে ও এক ছেলে। মেয়েকে চাঁদপুরের একটি মাদরাসায় তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তি করিয়েছেন।

> আরও পড়ুন- বাদাম বিক্রির টাকায় ভাইকে পড়াচ্ছেন মোজাহার 

এছাড়া নিজেও একটি মাদ্রসা প্রতিষ্ঠা করেছেন। সেখানে ৪০ জনের মতো শিশু শিক্ষা গ্রহণ করছে। নিজের সংগ্রাম সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমি চোখে দেখি না, এ নিয়ে কোন আক্ষেপ নেই। আল্লাহ আমার অন্য সব অঙ্গ তো ঠিকই দিয়েছেন। আসলে মনের জোর সবচেয়ে বড় জোর। আমি অনেক মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। তাই আল্লাহর কাছে চির কৃতজ্ঞ।’

এসইউ/এমকেএইচ

আরও পড়ুন