ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ফিচার

ভোলায় কিশোরী বান্ধব স্যানিটেশন ব্যবস্থা

জেলা প্রতিনিধি | ভোলা | প্রকাশিত: ০৮:১২ এএম, ২১ এপ্রিল ২০১৮

উপকূলীয় জেলা ভোলার সদর উপজেলার টবগী মাধ্যমিক বিদ্যালয়। ১৯২৫ সালে মেঘনার কূল ঘেঁষে বাপ্তা ইউনিয়নে নির্মিত হয় প্রতিষ্ঠানটি। নির্মিত হওয়ার পর থেকে উত্তর-পূর্ব বাপ্তার অবহেলিতদের আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ার কাজ করে যাচ্ছে। অথচ প্রথম থেকেই সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ছিল স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন ব্যবস্থা। বর্তমানে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী রয়েছে ৭০০ জন। যার অর্ধেকের বেশি ছাত্রী।

ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বিদ্যালয়ে মাত্র দু’টি টয়লেট ছিল। সে দু’টির অবস্থাও নাজুক। নোংরা পরিবেশ হওয়ায় অনেকই তা ব্যবহার করতো না। সেই সঙ্গে পানির ব্যবস্থা তেমন না থাকায় অনেকেই স্বাস্থ্যসম্মতভাবে হাত ধুতে পারতো না। এমনকি মেয়েদের মাসিকের সময় কোনো ব্যবস্থা ছিল না। ফলে শিক্ষার্থীরা নানা রোগে আক্রান্ত হতো। দিন দিন অনুপস্থিতির হার বেড়ে যাচ্ছিল।

তাই সম্প্রতি এগিয়ে এলো ইউনিসেফ। সংস্থাটির সহায়তায় বিদ্যালয়ে চালু করা হয়েছে কিশোরী বান্ধব স্যানিটেশন ব্যবস্থা ও হাত ধোয়ার ডিভাইস নির্মাণ কার্যক্রম। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন ব্যবহার করার সুযোগ পাবে। কাজটি বাস্তবায়ন করেছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা কোস্ট ট্রাস্টের সম্মন্বিত শিশুবিবাহ রোধ (আইইসিএম) প্রকল্প। এ প্রকল্পের মাধ্যমে পাল্টে গেছে স্কুলের চিত্র।

media

শিক্ষার্থীরা জানায়, আগে তাদের টয়লেট ব্যবস্থা ছিল অনেক নোংরা। সবারই টয়লেট ব্যবহার করতে অসুবিধা হতো। এখন আধুনিকভাবে নির্মাণ করায় তাদের জন্য অনেক ভালো হয়েছে। তারা আরো জানায়, বর্তমানে মাসিকের (পিরিয়ড) সময় তারা স্কুল থেকেই স্যানেটারি ন্যাপকিন নিয়ে তা ব্যবহার করতে পারে। এমনকি ব্যবহারের নিয়ম-কানুন তাদের ম্যাডামরাই দেখিয়ে দিচ্ছেন।

এখন বিদ্যালয়ে ন্যাপকিন প্যাড, সাবান সবই আছে। প্রয়োজনমতো তারা সেগুলো ব্যবহার করে। শিক্ষিক পাপিয়া দাশ জানান, মাসিকের সময় ছাত্রীরা ক্লাসে আসে না। অথবা হঠাৎ করে তারা ছুটি নিয়ে বাড়ি চলে যায়। এখন মেয়েদের জন্য স্যানেটারি ন্যাপকিনের ব্যবস্থা করায় তেমন কোনো সমস্যা হয় না।

প্রধান শিক্ষক মো. ইসমাইল বলেন, ‘আগের পরিস্থিতির সঙ্গে তুলনা করলে এখন স্বপ্নের মতো মনে হয়। স্কুলের শিক্ষার্থীরাই এখন টয়লেট পরিষ্কার রাখছে। ছেলে-মেয়েদের দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে নোংরা টয়লেটে যেতে হচ্ছে না।’

media

কোস্ট ট্রাস্টের আইইসিএম প্রকল্পের সমন্বয়কারী মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমরা ভোলা ও লালমোহনে ৪১টি স্কুল ও মাদ্রাসায় এ কার্যক্রম পরিচালনা করছি। এর মাধ্যমে স্কুলে এসে মেয়েরা সুস্থ থাকবে ও বাল্য বিবাহ কমে আসবে।’

ইউনিসেফের বিভাগীয় প্রধান এ এইচ তৌফিক আহমেদ জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না থাকায় ৮৬ শতাংশ স্কুলছাত্রী মাসিকের সময় স্কুলে তাদের ব্যবহৃত কাপড় বা স্যানিটারি প্যাড বদলাতে পারে না। এমনকি মাসিকের কারণে ৪০ শতাংশ ছাত্রী মাসে গড়ে ৩ দিন স্কুলে অনুপস্থিত থাকে। এরা শতকরা ৮০ ভাগ উপস্থিতি না থাকায় উপবৃত্তি থেকেও বঞ্চিত হয়।

আদিল হোসেন তপু/এসইউ/এমএস

আরও পড়ুন