অভিনয়ের নতুন পথিক শাওন
নাট্য নির্মাতা মাবরুর রশিদ বান্নাহর ছোট ভাই মামনুন ছিল খুব কাছের বন্ধু। অবশ্য মামনুন এখন ইউএসএ-তে থাকে। তার মাধ্যমেই বান্নাহর সঙ্গে পরিচয় হয়। এটা কয়েক বছর আগে কথা। সেসময় বান্নাহ বিভিন্ন স্বল্প দৈর্ঘ্য নির্মাণ করতেন। তার সেসব কাজে অভিনয় দিয়েই শুরু তরুণ অভিনেতা সায়েদ জামান শাওনের।
তার ভাষায়, ‘এরপর বান্নাহ ভাই ২০১৩ সালে ‘শেষ দৃশ্যের অপেক্ষায়’ নামের একটি ঈদের নাটক নির্মাণ করেছিলেন। আমি সেই নাটকে কাজ করেছিলাম। ওই নাটকে আমার সহশিল্পী ছিলেন নুসরাত ইমরোজ তিশা আপু এবং শ্যামল মাওলা। ওটাই ছিল অফিসিয়ালি আমার প্রথম নাটকে কাজ করা। নাটকটি প্রচারের পর সবাই আমার অভিনয়ের অনেক প্রশংসা করেন। এরপর থেকে নিয়মিতই কাজ করে যাচ্ছি।’
জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপকালে শাওন আরো জানালেন, বর্তমানে তিনি কাজ করছেন একাধিক টিভি সিরিয়ালে। তার অভিনীত ধারাবাহিক নাটকগুলোর মধ্যে প্রচারে আছে মাবরুর রশিদ বান্নাহর ‘নাইন এন্ড অ্যা হাফ’, ‘হাউজ ৪৪’, ‘ব্যাকবেঞ্চারস’, নাজনীন হাসান চুমকির ‘নগর দোলা’, ইফতেখার আহমেদ ফাহমির পারিবারিক ‘জাদুঘর’, মোস্তফা কামাল রাজের ‘নয় ছয়’ নাটকে।
এরমধ্যেই আগামী ঈদ উপলক্ষে শাওনের কাজে এসেছে বাড়তি ব্যস্ততা। কাজ শেষ করেছেন বান্নাহর ‘হানড্রেড আউট অব হানড্রেড’ এবং রাজের ‘রূপকথা’। বান্নার নির্মাণে ওই কাজটিতে শাওনের সহশিল্পী হিসেবে আছেন নিশো এবং অপর্ণা। এবং রাজের ‘রূপকথা’ নাটকটিতে তিনি অভিনয় করেছেন হৃদয় খান এবং তিশার সঙ্গে। এছাড়া আরো কিছু কাজের কথা চলছে।
শাওন বলেন, ‘অনেক নাটকে অভিনয়ের প্রস্তাব আসছে। কিন্তু চরিত্র পছন্দ না হওয়ায় সেগুলোতে কাজ করছিনা। আমি চাচ্ছি নির্মাতারা আমাকে ভিন্ন চরিত্রে কাজের জন্য ডাকুক। সেটা যেকোনো চরিত্র হোক। আমি চাই সেই চরিত্র থেকে যেন নতুন কিছু দর্শকদের উপহার দিতে পারি। এটা হতে পারে চায়ের দোকানদার কিংবা গাড়ির হেলপার। মোটকথা আমি প্রত্যেকটি চরিত্র নিয়ে নতুনভাবে দর্শকদের সামনে হাজির হতে চাই।’
শাওন অভিনীত উল্লেখযোগ্য নাটকের মধ্যে রয়েছে ‘ব্রাদার্স’, ‘ট্রিপটিন’, ‘মাস্তি আনলিমিটেড’, ‘অতঃপর আমরা’, ‘স্বাধীনতা ২৬’, ‘নাইন এন্ড অ্যা হাফ’ ইত্যাদি।
অভিনয়ের পাশাপাশি শাওন বর্তমানে একটি এয়ারলাইনসে কর্মরত আছেন। চাকরির সুবাদে প্রায় পনেরটি দেশে ঘুরে বেড়িয়েছেন এই তরুণ তুর্কী। তবে চাকরি আর অভিনয় এই দুই ভুবনে একসঙ্গে ছু্টতে কোনো সমস্যা হচ্ছেনা বলেই জানালেন শাওন।
তিনি বলেন, ‘মাসের ত্রিশ দিনের মধ্যে সাত দিন ছুটি পাই। ওই সাতদিনই অভিনয়ের জন্য বরাদ্দ থাকে। বাকি দিনগুলোতে এদেশ ওদেশ উড়ে বেড়াতে হয়।’ যোগ করে শাওন বলেন, ‘অনেকেই মনে করেন আমি চাকরি এবং অভিনয় একসঙ্গে সামলাই কীভাবে? আসলে এটা সম্ভব হয় আমি নিজের সময়কে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারি বলেই। সেক্ষেত্রে অনেক বড় উপকার করেন আমি যাদের নাটকে কাজ করি সেসব নির্মাতারা। তাদের সহযোগিতা পাই বলেই দিব্যি দুই জায়গাতে কাজ করতে পারছি।’
কিছুদিন আগে শাওনের বাবা মারা গেছেন। মায়ের সঙ্গে দুই ভাই আর এক বোনের সংসারে শাওন মেজ। এরমধ্যেই আইইউআইতে ইলেট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে পড়াশোনা করছেন একাদশ সেমিস্টারে।
আগামীতে শাওনের ইচ্ছা আছে চলচ্চিত্রে কাজ করার। কিন্তু শাওন মনে করে, ‘চলচ্চিত্রে কাজ করতে হলে অভিনয়ে অনেক পোক্ত হতে হয়। তাছাড়া আনুষাঙ্গিক অনেক বিষয় সম্পর্কে জেনে বুঝে কাজ করতে হয়। তাই আরো সময় নিতে চাই।’
এনই/এলএ/এবিএস