ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিনোদন

ভেন্টিলেশন খোলা হলো, চলে গেলেন ‘দস্যু বনহুর’ নায়িকা

বিনোদন প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০১:৪৮ এএম, ০৪ জানুয়ারি ২০২৫

গভীর রাতে খুলে ফেলা হলো ভেন্টিলেশন। শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন ঢালিউডের এক সময়ের জনপ্রিয় নায়িকা অঞ্জনা রহমান (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৫৮ বছর। রাত আনুমানিক ১টা ১০ মিনিটে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে শুরু করেছিলেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নেতা ও সদস্যরা। সভাপতি মিশা সওদাগর অঞ্জনার চিকিৎসার জন্য সমিতির মাধ্যমে অর্থসহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। জানিয়েছিলেন, চলচ্চিত্রের সবাই অঞ্জনার খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। কিন্তু চিকিৎসকরা জানিয়ে ছিলেন, তার ফেরার আশা খুব কম।

রাতের দিকে হাসপাতালে দেখা যায় অভিনেতা সুব্রত, অভিনেত্রী রুমানা ইসলাম মুক্তি ও নৃত্য পরিচালক ইউসুফকে। জ্যেষ্ঠ অভিনেত্রী অঞ্জনার জন্য সাহায্যের প্রয়োজন হতে পারে ভেবে সেখানে হাজির হন প্রযোজক আরশাদ আদনান। কিন্তু বাঁচানো গেলো না অঞ্জনাকে। শেষ পর্যন্ত চলেই গেলেন ‘দস্যু বনহুর’ ছবির নায়িকা!

jagonews24

অসুস্থ হয়ে পড়লে গত ২৪ নভেম্বর অঞ্জনাকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে কদিন তাকে রাখা হয় সিসিইউতে। সেখানকার চিকিৎসায় শারীরিক অবস্থার আশানুরূপ উন্নতি না হওয়ায় হাসপাতাল বদলে গত বুধবার তাকে আনা হয় বঙ্গবন্ধু মেডিক্যালে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ওই রাতেই তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। ভেন্টিলেশনে থাকা অবস্থায় তার অবস্থার কখনও উন্নতি, কখনও অবনতি হচ্ছিল।

অঞ্জনার অভিনয় জীবন শুরু হয় ১৯৭৬ সালে। বাবুল চৌধুরী পরিচালিত ‘সেতু’ চলচ্চিত্রে প্রথম অভিনয় করেন তিনি। তবে অঞ্জনা অভিনীত ও একই বছর মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম চলচ্চিত্র ‘দস্যু বনহুর’। ছবিতে তার নায়ক ছিলেন সোহেল রানা। ক্যারিয়ারে তিন শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেন অঞ্জনা। বাংলাদেশ ছাড়াও অভিনয় করেন ৯টি দেশের ১৩টি ভাষার সিনেমায়। জীবদ্দশায় নিজেই সেকথা বলে গেছেন অভিনেত্রী। সে এক রঙিন অতীত ছিল তার।

ভেন্টিলেশন খোলা হলো, চলে গেলেন ‘দস্যু বনহুর’ নায়িকা

অঞ্জনা অভিনীত উল্লেখযোগ্য কিছু সিনেমা হলো খান আতাউর রহমান পরিচালিত ‘মাটির মায়া’, আজিজুর রহমানের ‘অশিক্ষিত’, নারায়ণ ঘোষ মিতার ‘চোখের মণি’ ও ‘সুখের সংসার’, দিলীপ বিশ্বাসের ‘জিঞ্জির’, ‘অংশীদার’ ও ‘আনারকলি’, গাজী মাজহারুল আনোয়ারের ‘বিচারপতি’, শফি বিক্রমপুরীর ‘আলাদীন আলীবাবা সিন্দাবাদ’, নায়করাজ রাজ্জাকের ‘অভিযান’, আলমগীর কুমকুমের ‘মহান’ ও ‘রাজার রাজা’, এফ আই মানিকের ‘বিস্ফোরণ’, আজিজুর রহমানের ‘ফুলেশ্বরী’, সত্য সাহার ‘রাম রহিম জন’, মতিউর রহমান বাদলের ‘নাগিনা’, আলমগীর কবিরের ‘পরীণিতা’।

নায়িকা অঞ্জনার প্রথম সিনেমা ‘দস্যু বনহুর’ ছিল সুপারহিট। এ ছবির পর তাকে আর ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবতে হয়নি। অভিনয়ের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, আন্তর্জাতিক পুরস্কার, একাধিক জাতীয় স্বর্ণপদক, বাচসাস পুরস্কার পেয়েছেন কয়েকবার। নৃত্যশিল্পী হিসেবেও অঞ্জনা পেয়েছেন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অনেক স্বীকৃতি।

jagonews24

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১৫ দিন ধরে অসুস্থ ছিলেন অঞ্জনা। জ্বর এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে, ওষুধেও কাজ হচ্ছিল না। হাসপাতালে নেওয়া ও কয়েকটি পরীক্ষার পর জানা যায় তার রক্তে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। তাকে দেখভাল করছিলেন সন্তানস্নেহে আগলে রাখা নিশাত মনি। হাসপাতালে নেওয়ার পর দূর সম্পর্কের আত্মীয় কামরুল আলম রিপন জাগো নিউজকে জানান, অঞ্জনার ফেরার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।

অঞ্জনা বিয়ে করেন পরিচালক আজিজুর রহমান বুলিকে। সেসময় তিনি মুসলমান হন। জানা গেছে, অঞ্জনার মরদেহ আজ শনিবার বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে।

এমআই/আরএমডি/এমআইএইচএস