অনুভূতিতে আঘাত পেয়ে আইনি নোটিশ, যা বললেন স্বাগতা
নিজের লিভ টুগেদার প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমে কথা বলেছিলেন অভিনেত্রী ও কণ্ঠশিল্পী জিনাত সানু স্বাগতা। তা অনুভূতিতে আঘাত দিয়েছে এক ব্যক্তিকে। তাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে তাই আইনী নোটিশ পাঠিয়েছেন মুহম্মদ আরিফুল খবির নামে ওই ব্যক্তি। নোটিশটি এখনও হাতে না পেলেও বিষয়টি নিয়ে নিজের অবস্থান জানিয়েছেন অভিনেত্রী স্বাগতা।
আজ (২৮ ডিসেম্বর) শনিবার মুহম্মদ আরিফুল খবিরের পক্ষে অভিনেত্রী স্বাগতাকে আইনি নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মুহম্মদ মেসবাহ উদ্দিন চৌধুরী। সেখানে বলা হয়েছে, প্রকাশ্যে ক্ষমা না চাইলে স্বাগতার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নোটিশে বলা হয়েছে, ‘আপনি (স্বাগতা) হাসান আজাদ নামক একজন ব্যক্তির সঙ্গে লিভ টুগেদার করিয়াছেন বলিয়া স্বীকার করেন এবং যাহা বিগত ১ (এক) বছর যাবৎ করিয়াছেন তাহাও প্রকাশ্যে স্বীকার করেন। পাশাপাশি লিভ টুগেদার করিবার জন্য উৎসাহ প্রদান করেন। আপনি একজন মুসলমান ধর্মাবলম্বী হওয়ায় আপনার জানা আছে বিবাহের পূর্বে নারী ও পুরুষের মধ্য সহবাস বা লিভ টুগেদার করা সম্পূর্নরুপে হারাম। আপনি উক্ত হারাম বিষয়টি নিজে করিয়া অপরকে করিবার জন্য উৎসাহ প্রদান করিতেছেন। যাহার কারণে সমাজে ব্যভিচারের মাত্রা বৃদ্ধি পাইয়া সমাজে এক বিশৃঙ্খলার পরিবেশ সৃষ্টি হইবে।
নোটিশে আরও বলা হয়েছে, ‘আপনার উক্তরুপ বিবৃতির কারণে মুসলমান ধর্মাবলম্বীগণের ধর্মীয় অনুভূতিতে চরমভাবে আঘাত প্রদান করিয়াছে। যেহেতু আমার মোয়াক্কেল একজন ধর্মপ্রান মুসলমান হওয়ার কারণে আমার মোয়াক্কেলের ধর্মীয় অনুভূতিতেও আঘাত লাগিয়াছে। যাহার কারণে সংক্ষুদ্ধ হইয়া আপনার প্রতি অত্র নোটিস প্রেরণ করিয়াছে।’
নোটিশে জানানো হয়েছে, ‘অত্র নোটিস প্রাপ্তির সাত দিনের মধ্যে আপনার উক্ত বক্তব্য প্রত্যাহার করিয়া প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইবেন। তাহা আমার মোয়াক্কেলকে অবহিত করিবেন। অন্যথায় আমার মোয়াক্কেল আপনার ধর্মীয় অনুভূতি আঘাতদানকারী উক্ত বিবৃতির জন্য প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন। যাহার দায়ভার আপনার উপর বর্তাইবে।’
আইনি নোটিশ প্রসঙ্গে স্বাগতা জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি কাউকে লিভ টুগেদারে উৎসাহ দিইনি। এটা যার যার ব্যক্তিগত রুচি ও পছন্দের ব্যাপার। আমার আগেও অনেকে লিভ টুগেদার করেছেন। আমার কথায় কেউ উৎসাহী হয়ে লিভ টুগেদার করবে বলে আমি মনে করি না। যার অনুভূতিতে আঘাত লেগেছে, তাকে অনুরোধ করবো, তিনি যেন তার ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক নিয়ম মেনে চলেন, আমার নিয়ম তাকে মানতে হবে না। আমি কোন বাস্তবতায় কী করেছি, সেটা তিনি বুঝতে পারবেন না।’
এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী স্বাগতা বলেছেন, ‘আমি আর হাসান এক বছর লিভ টুগেদার করেছি। তারপর দুজন দুজনকে পার্টনার হিসেবে পছন্দ করেছি। আমরা যখন লিভ টুগেদার করেছি, আমাদের দুজনের বাবা-মায়ের পক্ষ থেকে কোনো সমস্যা ছিল না। এমনকি আমার ভাই-বোনও বলেছে, কেউ যুক্তরাজ্যে থেকে আসলো, তুমি বিয়ে করে ফেললা, এরপর জীবনটা শেষ হয়ে গেল। তার চেয়ে ভালো একসঙ্গে থেকে দেখো, সারাজীবন থাকতে পারবে নাকি। তারপর সিদ্ধান্ত নাও।’
অভিনেত্রী আরও বলেছিলেন, ‘সমাজও আমাদের বিষয়টা মেনে নিয়েছে। প্রথমে একটু সময় নিয়েছে, কিন্তু পরে বিষয়টা স্বাভাবিক হয়ে গেছে। আমি মনে করি, আমাদের সমাজও পরিবর্তন হচ্ছে। ডিভোর্স নরমালাইজ হচ্ছে, লিভ টুগেদারও নরমালাইজ হবে।’
চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি প্রেমিক হাসান আজাদকে বিয়ে করেন জিনাত সানু স্বাগতা। হাসানের জন্ম ও পড়াশোনা যুক্তরাজ্যে। তিনিও সংগীতের সঙ্গে জড়িত।
এমআই/আরএমডি