ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিনোদন

যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের জন্যও আমার একই রকমের উপলব্ধি

মইনুল ইসলাম | প্রকাশিত: ১১:০৭ এএম, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪

বছরের শেষে ঢাকায় মুক্তি পেয়েছে জয়া আহসান অভিনীত সিনেমা ‘নকশি কাঁথার জমিন’। কেমন ছিল ছবিটির নির্মাণযাত্রা? সেই সূত্রে ঢাকায় ছবির মন্দা ব্যবসা, ঢালিউডের হালচাল, ইংরেজি বছরের বিদায় উদযাপন ও গণ-অভ্যত্থান নিয়ে কথা হয় অভিনেত্রীর সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মইনুল ইসলাম

প্রশ্ন: বছরের শুরুর দিকে আপনার ‘পেয়ারার সুবাস’ মুক্তি পেয়েছিল। শেষেও এল নতুন ছবি। আপনাকে অভিনন্দন। সদ্য মুক্তি পাওয়া ‘নকশি কাঁথার জমিন’ ছবিটা দেখে কী বললেন বিশিষ্টজনেরা?
জয়া আহসান: এখনো সবাই দেখছে, ভালো বলছেন। তবে আমাদের এই ছবি মুক্তিযুদ্ধের ছবি। মুক্তিযুদ্ধে অনেক সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করেছিলেন। সেই মানুষগুলোর গল্প নিয়েই এই ছবি। সাধারণ মানুষ ছবিটা দেখে কী বলছেন, সেটা জানার অপেক্ষায় আছি। সাধারণ মানুষের কথা ইমপরটেন্ট। যারা দেখেছেন, তারা তো খুব ভালো বলছেন। তারা যে কথাগুলো বলছেন, এই সিনেমার সাহিত্যমান আছে, মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে ছবির গল্পটা খুব গুরুত্বপূর্ণ, ছবির মূল গল্প হাসান আজিজুল হক স্যারের, তিনিও গুরুত্বপূর্ণ এবং ছবির যে বিধবা, তারাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। বাকিটা আমরা বুঝতে পরবো যদি দর্শক ছবিটা পছন্দ করে।

যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের জন্যও আমার একই রকমের উপলব্ধি

প্রশ্ন: বছরের শেষ মাসে বেশ কয়েকটি মোটামুটি মানের সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। ‘প্রিয় মালতী’, ‘৮৪০’, ‘নয়া মানুষ’। ছবিগুলো সেরকম দেখছে না মানুষ। কারণ কী বলে আপনার মনে হয়?
জয়া আহসান: এখন তো ছবি দেখার মুডে বাংলাদেশের দর্শকরা নেই। মাত্র বড় একটা ঘটনার ভেতর দিয়ে আমরা গেলাম। সেটা একটা কারণ। দ্বিতীয় কারণ হলো, মার্কেটিং পলিসি। হুট করে নির্মাতা সিদ্ধান্ত নিলেন সিনেমাটা মুক্তি দেবেন। তারা বিজয়ের মাসে এই সিনেমাটা ছাড়বেন। এর বাইরে প্রোডিউসাররা ভালো বলতে পারবেন যে, তারা কী চাইছেন। কেন তারা আরেকটু যত্নবান হচ্ছেন না। কিন্তু আমার মনে হয়, ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে যাবে।

আরও পড়ুন:

প্রশ্ন: আপনি যাকে বলছেন বড় ঘটনা, গণ-অভ্যুত্থান, এর সঙ্গে অনেকে মুুক্তিযুদ্ধের মিল খুঁজছেন। অনেকে বলছেন স্বৈরাচার থেকে মুক্তি। আপনি একে কী বলবেন? আপনার কাছে ব্যাপারটা কেমন? আপনার কি এ ব্যাপারে কিছু বলার আছে?
জয়া আহসান: অবশ্যই বলার আছে। কিন্তু এই মুহূর্তে এই বিষয়টা নিয়ে কথা বলতে চাইছি না। এটা নিয়ে এখন কথা বলা উচিতও না। আমাদের ছবিটা কেবল মুক্তি পেল, আমি চাই ছবিটা সবাই দেখুক। ২০২৪ সালে যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের জন্যও আমার একই রকমের উপলব্ধি। দুটি ঘটনাই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু দুটি ঘটনাকে মিলিয়ে ফেলা যাবে না। বাঙালি জাতির ইতিহাসে, এই মানচিত্রের ইতিহাসে মুক্তিযুদ্ধ সর্বশ্রেষ্ঠ ঘটনা।

যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের জন্যও আমার একই রকমের উপলব্ধি

প্রশ্ন: বছর শেষ হচ্ছে। থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপনে বিকট শব্দে পটকা ফোটানো হয়, ফানুস ওড়ানো হয়। শব্দে অনেক পাখি ও শিশুর মৃত্যুর খবরও শোনা গিয়েছিল। ফানুস থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছিল। অনেক প্রাণ-প্রকৃতির ক্ষতি হয়েছিল। আমাদের কি এই উদযাপন করাটা ঠিক হচ্ছে?
জয়া আহসান: আমাদের আরও সংবেদনশীল হতে হবে। আমরা বারবার ভুলে যাই যে, পৃথিবীটা শুধু আমাদের না, সমাজ শুধু মানুষকে নিয়ে নয়। এই সমাজের কুকুরটা পাহারা দেয়, বিড়ালটা আমাদের ফেলে দেওয়া খাবারগুলো খায়। যে কাকটা আমাদের মিউনিসিপ্যালের কাজ করে দিচ্ছে, সেটা খুব ইমপরটেন্ট আসলে। বিনা পয়সায় আমাদের আবর্জনা পরিষ্কার করে দিচ্ছে। এটা একটা ইকোলজিক্যাল ব্যালেন্স, আমরা একজনের ওপর আরেকজন ডিপেন্ডেবল। আমরা তাদের কথা যদি ভাবি, তারাও আসলে সমাজের অংশ, প্রকৃতির অংশ তো অবশ্যই, তার ভেতরে সমাজের অংশ। আমরা একটা গাছ কেটে ফেলি, গাছে যত পাখি, পোকামাকড়, প্রাণ-প্রকৃতি বাস করতো, তারা সবাই ঘরহারা হয়। একটা মানুষ যখন ঘরহারা হয়, নিশ্চিত আপনি উপলব্ধি করতে পারেন। পাখি যখন ঘরহারা হয়, পাখির বাচ্চা যখন মারা যায়, বাজ পড়ে বা পুজোর সময় বা থার্টি ফার্স্ট নাইটে বাজি ফুটিয়ে, আতশবাজি পুড়িয়ে … আমরা যেন এগুলো থেকে বিরত থাকি। আমরা যেন নিজেকে আর একটু সংবেদনশীল করে তোলার চেষ্টা করি।

যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের জন্যও আমার একই রকমের উপলব্ধি

আরও পড়ুন:

প্রশ্ন: এখনকার তরুণরা পাখি, কুকুর-বিড়াল ভালোবাসে। তারা কি আগের চেয়ে আরও সচেতন নয়?
জয়া আহসান: হ্যাঁ, তাদের এই একটা জিনিস ভালো। ইয়াং জেনারেশনের একটা বড় অংশ এখন এসব এড়িয়ে চলে। তারা আমাদের থেকে অনেক বেশি সংবেদনশীল। আমি কিন্তু আনন্দ করতে বারণ করছি না, আতশবাজি না পুড়িয়ে, বাজি-পটকা না ফুটিয়েও অনেকভাবে আনন্দ করা যায়। আমরা গত বছর দেখেছি, একটা বাচ্চার হার্টের অসুখ ছিল, বাজির শব্দে বাচ্চাটা তাৎক্ষণিক মারা গেছে। একটা বাচ্চা স্থায়ীভাবে শ্রবণ প্রতিবন্ধী হয়ে গেছে। হাজার হাজার পাখি মারা গেল! আমরা মানুষেরা আমাদের মতো করে শুনি, তার চেয়ে অনেক বেশি শুনতে পায় পাখি, কুকুর, বিড়াল। তাদের কানে বাজির আওয়াজটা বেশি আঘাত করে। সেটা খুব ভীতিকর। আমার চাওয়া, সবাই একটু সংবেদনশীল হোক।

যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের জন্যও আমার একই রকমের উপলব্ধি

প্রশ্ন: আশফাক নিপুণের পরিচালনায় একটা সিরিজ করছিলেন, সেটা কি শেষ?
জয়া আহসান: এখনও কাজ চলমান। তবে শিগগিরই মুক্তি পাবে সেটা। এটা নিয়েই এখন ব্যস্ত সময় যাচ্ছে। এর বাইরে, বেশ কয়েকটা কাজের ঘোষণা আসবে সামনে।

এমআই/আরএমডি/এমএস