ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিনোদন

ভারতীয় গণমাধ্যমকে বাঁধনের দাঁতভাঙা জবাব

বিনোদন প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১১:৪৭ এএম, ১৩ আগস্ট ২০২৪

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকেই সরব ছিলেন অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। এমনকি প্রতিবাদ করতে পথেও নেমেছিলেন তিনি। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের গণ-আন্দোলনকে ভিন্ন দৃষ্টিতে উপস্থাপনে তৎপর ভারতের কতিপয় গণমাধ্যম। এ কাজে দেশটির চলচ্চিত্রে কাজ করা শিল্পী বাঁধনকে পাশে চেয়েছিল সেখানকার একটি গণমাধ্যম। গণ-আন্দোলন নিয়ে করা নানান প্রশ্নের জবাবে ভারতীয় ওই গণ-মাধ্যমকে দাঁতভাঙা জবাব দিয়েছেন আজমেরী হক বাঁধন।

বাংলাদেশের গণ-আন্দোলন ইস্যুতে সম্প্রতি বাঁধনের একটি সাক্ষাৎকার নেয় জি২৪ ঘণ্টা। সেখানে বাঁধনের কাছে জানতে চাওয়া হয় সরকার পতন পরবর্তী সহিংসতা নিয়ে। জবাবে বাঁধন বলেন, ‘যে সহিংসতা হচ্ছে তা ঘৃণিত অপরাধ। বাংলাদেশে কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষ আছে। যে কোনো পরিস্থিতিকে তারা নিজেদের লাভে ব্যবহার করে। যেসব ঘটনার কথা আপনি বলছেন, এই নৈরাজ্য তো গত ১৫ বছর ধরেই বিচ্ছিন্নভাবে চলছিল। মানুষের ওপর নিপীড়ন চলছিল। যেভাবে প্রধানমন্ত্রী দেশ ছেড়ে, সবাইকে ফেলে চলে গেছেন। এ কারণে গত দুদিন ধরে পুলিশের কাছ থেকে কোনো সাপোর্ট আমরা পাচ্ছি না। রাষ্ট্রপতির কাছ থেকেও কোনো দিকনির্দেশনা পাচ্ছি না। এখন আমি অভিনন্দন জানাতে চাই ছাত্র-জনতাকে যারা আন্দোলনটা সফল করেছেন। তাদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে চাই, যারা আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে স্বৈরাচার সরকারের পতন ঘটিয়েছে।’

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙা প্রসঙ্গে বাঁধন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কারও একার বাবা নন, তিনি আমাদের জাতির পিতা। তিনি আমাদের দেশকে স্বাধীন করেছেন, তাকে আমরা সবাই শ্রদ্ধা করি ভালোবাসি। তাকে যারা অপমান করেছে, তাদের প্রতি আমি ঘৃণা জানােই। সঙ্গে এও বলতে চাই, তার অপমানের জন্য তার দুই সন্তান দায়ী। তাকে এই অবস্থানে এনে দাঁড় করিয়েছেন তার দুই মেয়ে, যে কারণে মানুষ এত ক্রোধ ও ক্ষোভ প্রকাশ করছে।’ রাহুল আনন্দের বাড়িতে আগুন দেওয়া প্রসঙ্গে বাঁধন বলেন, ‘রাহুল দা আমাদের প্রাণের মানুষ। যারা বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা হচ্ছে বলে দেখাতে চায়, তারাই রাহুল দার বাড়িতে আগুন দিয়েছে। এই ঘটনার জন্য আমরা লজ্জিত, রাহুল দার প্রতি ক্ষমাপ্রার্থী।’

ভারতীয় গণমাধ্যমকে বাঁধনের দাঁতভাঙা জবাব

উপস্থাপক সব্যসাচীর প্রশ্ন, এরা কারা? জবাবে বাঁধন বলেছেন, ‘গত ১৫ বছরে নৈরাজ্য সবচেয়ে বেশি করেছে আওয়ামী লীগ। যেভাবে মানুষের মুখ চেপে ধরা হয়েছে, তা লজ্জাজনক। তিনি যেভাবে আমাদের ফেলে চলে গেলেন, তার মতো লিডারের কাছে আমরা আশা করিনি। তিনি দেশে থাকতেন, ফেস করতেন, তার বিচার হতো!’

ভারতীয় গণমাধ্যমকে বাঁধনের দাঁতভাঙা জবাব

দেশটির গণমাধ্যমে আসা ছবি তুলে ধরে সঞ্চালক সেসব নিয়ে জানতে চাইলে বাধন বলেন, ‘কিছু গণমাধ্যম বাদে আমাদের বেশিরভাগ গণমাধ্যমের ওপর আমাদের আস্থা নেই।’ সঞ্চালক প্রশ্ন করেন, গণমাধ্যম, সরকার, সংবিধান কোনো কিছুতেই আস্থা নেই, তাহলে আস্থাটা কোথায়? জবাবে বাঁধন বলেন, ‘আস্থা জনগণের ওপর। আমি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। আমাদের এই অনাস্থা থেকে আজকের ঘটনা। একটা ছোট কোটা আন্দোলন থেকে এই ঘটনা ঘটেনি। কীভাবে পুলিশের গুলিতে ছাত্র মারা গেছে, বাবার কোলে শিশু মারা গেছে। সেসব দেখে সাধারণ মানুষের ভয় কেটে গেছে।’

ভারতীয় গণমাধ্যমকে বাঁধনের দাঁতভাঙা জবাব

ওই গণমাধ্যমের কাছে ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে বাঁধন বলেন, ‘যাদের আমরা মান্য করি, এ রকম কিছু মানুষকে নিয়ে আমরা সংস্কার করছি। আমরা ছাত্রদের সঙ্গে থাকতে চাই।’ সরকারের সমালোচনা করে বাঁধন বলেন, ‘দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকলে মানুষ আর মানুষ থাকে না। কারণ গুলিতে এতগুলো প্রাণ যাওয়ার পরও তাদের জন্য সরকারের খারাপ লাগেনি, বরং কতগুলো স্থাপনার জন্য তারা কান্নাকাটি করেছে। অথচ আমাদের ট্যাক্সের টাকায় ওসব আবারও করা যেত। এই ঘটনা বলে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার কারণে সাধারণ জনগণের সঙ্গে এক ধরনের বিচ্ছিন্নতা তৈরি হয়েছে সরকারের। তিনি একা নন, তিনি যাদের পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন তারাও সে রকম হয়ে গেছেন, মানুষকে মানুষ বলে গণ্যই করেননি।’

ভারতীয় গণমাধ্যমকে বাঁধনের দাঁতভাঙা জবাব

‘রেহানা মারিয়াম নূর’ সিনেমার মাধ্যমে বিশ্বসিনেমার সমালোচকদের মধ্যে পরিচিতি লাভ করেন। ২০২১ সালের ৭ জুলাই ৭৪তম কান চলচ্চিত্র উৎসবের আঁ সার্তে রিগা বিভাগে প্রদর্শিত হয় সিনেমাটি। সেদিন দীর্ঘ সময় ধরে দাঁড়িয়ে দর্শকেরা অভিবাদন জানিয়েছিলেন অভিনয়শিল্পী ও নির্মাতাদের। পরে ভারতীয় নির্মাতা বিশাল ভরদ্বাজ নির্মিত হিন্দি ছবি ‘খুফিয়া’য় দেখা গেছে বাঁধনকে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের খ্যাতিমান নির্মাতা সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের আলোচিত ‘রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি’ সিরিজে অভিনয় করেও প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন।

এমআই/আরএমডি/জেআইএম

আরও পড়ুন