ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিনোদন

সুচিত্রা সেনের জন্মবার্ষিকীতে পাবনায় বিভিন্ন কর্মসূচি

আমিন ইসলাম জুয়েল | প্রকাশিত: ০১:১৯ পিএম, ০৬ এপ্রিল ২০২৪

আজ (৬ এপ্রিল) বাংলা চলচ্চিত্রের মহানায়িকা খ্যাত সুচিত্রা সেনের ৯৩তম জন্মবার্ষিকী। এ উপলক্ষে পাবনার জেলা প্রশাসন ও সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদ পাবনা পৃথকভাবে তার স্মৃতি বিজরিত বাড়িতে এক স্মরণ সভার আয়োজন করেছে। এতে সহযোগিতা করছে সংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদ জানিয়েছে এবারে সুচিত্রা সেনের জন্মদিনে যোগ হয়েছে এক ভিন্নমাত্রা। কারণ তার ৯৩তম জন্মদিনকে ঘিরে নিউইয়র্কের জামাইকাতে আগামী ২০ এবং ২১ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে সুচিত্রা সেন আর্ন্তজাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। এ পর্যন্ত প্রায় চার শতাধিক সিনেমা ঐ ফেস্টিভ্যালের জন্য জমা পড়েছে।

আরও পড়ুন:

সুচিত্রা সেনের জন্মবার্ষিকীতে পাবনায় বিভিন্ন কর্মসূচি

উপমহাদেশের বাংলা চলচ্চিত্রের এ কালজয়ী নায়িকার বাবার বাড়ি পাবনা শহরের গোপালপুর হেমসাগর লেনে। তিনি এখানকার মহাকালি পাঠশালায় এবং পাবনা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন।

এরপর পরিবারের সাথে ভারত চলে গেলে বাড়িটি প্রথমে জেলা প্রশাসনের তত্বাবধানে এবং জামায়াত পরিচালিত পরে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে লিজ দেওয়া হয়। অনেক আন্দোলনের পর এবং আইনি লড়াই শেষে ২০১৫ সালে বাড়িটি দখমুক্ত হলে আবারও জেলা প্রশাসনের তত্বাবধানে ফিরে যায়। সুচিত্রা সেনের স্মৃতিকে ধরে রাখতে এবং তাকে স্মরণ করতে ২০০৪ সাল থেকে সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদ প্রতি বছর বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে।

তৎকালীন বৃহত্তর পাবনার (বর্তমান সিরাজগঞ্জ) বেলকুচি উপজেলার সেন ভাঙ্গাবাড়ি গ্রামে ১৯৩১ সালের ৬ এপ্রিল জন্ম নেন সুচিত্রা সেন। পাবনা শহরের গোপালপুর মহল্লার হেমসাগর লেনের একতলা পাকা পৈত্রিক বাড়িতে সুচিত্রা সেনের শিশুকাল, শৈশব ও কৈশোর কেটেছে।

সুচিত্রা সেনের জন্মবার্ষিকীতে পাবনায় বিভিন্ন কর্মসূচি

তার বাবা করুনাময় দাশগুপ্ত পাবনা মিউনিসিপ্যালিটির স্যানিটারি ইন্সপেক্টর পদে চাকরি করতেন। মা ইন্দিরা দাশগুপ্ত ছিলেন গৃহিনী। দুবোনের মধ্যে সুচিত্রা সেন ছিলেন বড়। ছোট বোন হেনা দাশগুপ্ত। শহরের মহাকালী পাঠশালায় পড়ালেখা শেষে সুচিত্রা সেন স্থানীয় পাবনা বালিকা বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছেন। পাবনা শহরের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গান গাওয়া ও নাটক থিয়েটারে তিনি অভিনয়ে দক্ষতা দেখান। তার পারবারিক নাম ছিল রমা দাশগুপ্ত।

১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের কয়েক মাস আগে তার বাবা করুণাময় দাসগুপ্ত পাবনার বাড়ি-ঘর, চাকরি সবকিছু ফেলে সপরিবারে ভারত পাড়ি দেন। সুচিত্রা সেনও পরিবারের সাথে চলে যান। কলকাতা যাবার বছর দুয়েয়েক পরেই সেখানকার বনেদি পরিবারের ছেলে দিবানাথ সেনের সাথে রমা দাশগুপ্তের বিয়ে হয়।

পাবনার উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে রমা বনেদি পরিবারের বধু হয়ে ঘর সংসারের পাশাপাশি সিনেমায় অভিনয়ে জড়িয়ে পড়েন। সিনেমায় অভিনয় শুরুর পর নাম হয় সুচিত্রা সেন। বিয়ের আড়াই বছরের মাথায় ১৯৫২ সালে ‘শেষ কোথায়’ নামের একটি বাংলা সিনেমায় তিনি প্রথম অভিনয় করেন।

সুচিত্রা সেনের জন্মবার্ষিকীতে পাবনায় বিভিন্ন কর্মসূচি

অজ্ঞাত কারণে সিনেমাটি মুক্তি পায়নি। এরপর ১৯৫৩ সালে নায়িকা হয়ে তার অভিনীত প্রথম সিনেমা ‘সাত নম্বর কয়েদি’ সিনেমাটি মুক্তি পায়। ১৯৫৩ থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত ৩৫ বছর সুচিত্রা সেন একটানা বাংলা সিনেমায় অভিনয় করেন।

সুচিত্রা সেন ৫৬টি বাংলা ও ৭টি হিন্দি মিলিয়ে মোট ৬৩টি সিনেমায় নায়িকা হয়ে অভিনয় করেছেন। উত্তম কুমারের সঙ্গে জুটি হয়ে ব্যাপক আলোড়ন তোলেন। ১৯৭৮ সালে উত্তম কুমার মারা গেলে সিনেমায় অভিনয় বন্ধ করে দেন তিনি।

১৯৬৩ সালে ‘সাত পাকে বাঁধা’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য মস্কো চলচ্চিত্র উৎসবে সুচিত্রা সেন সিলভার প্রাইজ ফর বেস্ট অ্যাকট্রেস জয় করেন। তিনিই প্রথম ভারতীয় অভিনেত্রী যিনি কোনো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কৃত হয়েছিলেন।

সুচিত্রা সেনের জন্মবার্ষিকীতে পাবনায় বিভিন্ন কর্মসূচি

ভারত সরকারও তাকে পদ্মশ্রী সম্মান প্রদান করেন। ২০০৫ সালে তাকে দাদা সাহেব ফালকে পুরস্কার দেওয়ার প্রস্তাব রাখলে তিনি জনসমক্ষে আসতে চাননি বলে তা গ্রহণ করেননি।

২০১২ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সর্বোচ্চ সম্মান বঙ্গবিভূষণ দেওয়া হয়। ১৯৫৫ সালে তিনি দেবদাস সিনেমার জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার লাভ করেন। ২০১৪ সালের ১৭ জানুয়ারি তিনি ভারতে পরলোকগমন করেন।

আমিন ইসলাম জুয়েল/এমএমএফ/এএসএম

আরও পড়ুন