ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিনোদন

নির্বাচনে তারকাদের হারজিত

মিজানুর রহমান মিথুন | প্রকাশিত: ০৬:০৪ পিএম, ০৮ জানুয়ারি ২০২৪

অনেক জল্পনা-কল্পনা শেষে অনুষ্ঠিত হয়েছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। বিভিন্ন কারণে সদ্যসমাপ্ত নির্বাচনটি আলোচিত ছিল। এ নির্বাচনের আলোচনার পালে তুমুল বেগে হাওয়া দিয়েছে বিভিন্ন অঙ্গনের তারকাদের অংশগ্রহণ।

এবার নির্বাচনে শোবিজ অঙ্গনের বেশ কয়েকজন তারকা অংশ নিয়েছিলেন। এর আগের কোনো নির্বাচনে এত সংখ্যক তারকাকে অংশ নিতে দেখা যায়নি।

সঙ্গত কারণেই তারকাদের ভোটের মাঠের লড়াই গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছে বেশ গুরুত্বের সঙ্গে। বলা চলে, অনেক হেভিওয়েট রাজনৈতিক প্রার্থীর চেয়েও এসব তারকা নিয়ে বেশি আলোচনা হয়। ফলে তাদের ভক্ত-অনুরাগীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষেরও দৃষ্টি কেড়েছেন। তাই সিংহভাগ মানুষ উৎসুক ছিলেন এসব তারকার নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে।

আরও পড়ুন: ভোট দিলেন শোবিজ তারকারা

নন্দিত অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূর নীলফামারী-২, ঢাকা-১০ আসন থেকে চিত্রনায়ক ফেরেদৗস আহমেদ, মানিকগঞ্জ-২ আসন থেকে জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম ও চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নেন।

অন্যদিকে জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী ডলি সায়ন্তনী পাবনা-২ আসন থেকে আলোচিত ইউটিউবার হিরো আলম বগুড়া-৪ আসন ও সংগীতশিল্পী নকুল কুমার বিশ্বাস বরিশাল-২ আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নেন।

এসব তারকার ভক্তরা আশা করেছিলেন প্রিয় তারকারা জয়ী হয়ে আসবেন। নতুন পরিচয়ে তাদের শোবিজ অঙ্গনের পাশাপাশি রাজনীতির সংসদেও পাবেন। কিন্তু নির্বাচনের ফলাফলে দেখা গেছে, শোবিজ তারকাদের মধ্যে থেকে জয়ী হয়েছেন মাত্র দুজন। তার হলেন নীলফামারী-২ আসন থেকে অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূর এবং ঢাকা-১০ আসন থেকে চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ।

অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূর নীলফামারী-২ (সদর) আসনে টানা পঞ্চমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন আসাদুজ্জামান নূর। তিনি পেয়েছেন এক লাখ ১৯ হাজার ৩৩৯ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়নাল আবেদীন ট্রাক প্রতীকে পেয়েছেন ১৫ হাজার ৬৮৪ ভোট। এছাড়া জাতীয় পার্টির শাহজাহান আলী চৌধুরী লাঙ্গল প্রতীকে পেয়েছেন তিন হাজার ৮৪৩ ভোট।

আরও পড়ুন: জাতির পিতার প্রতি ফেরদৌসের শ্রদ্ধা নিবেদন

প্রথমবার নির্বাচনে অংশ নিয়েই বাজিমাত করেছেন চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ। ঢাকা-১০ আসনে নৌকা প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হয়েছেন তিনি। ফেরদৌস মোট ভোট পেয়েছেন ৬৫ হাজার ৮৯৮টি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির প্রার্থী হাজি মো. শাহজাহান লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ২ হাজার ২৫৭ ভোট।

চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। রাজশাহী-১ (তানোর- গোদাগাড়ী) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তিনি। তবে ওই আসনে বিজয়ী হয়েছেন বর্তমান এমপি নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরী। মাহি ট্রাক প্রতীকে পেয়েছেন ৯ হাজার ৯ ভোট। এমনকি জামানতও হারিয়েছেন তিনি।

মানিকগঞ্জ-২ আসনে ভোটের লড়াইয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে ধরাশায়ী হয়েছেন ওই আসনের বর্তমান এমপি ও পপ সম্রাজ্ঞী মমতাজ বেগম। ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলুর কাছে পরাজিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের এই প্রার্থী। ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী, ওই আসনে মোট ১৯৩টি ভোটকেন্দ্রে ট্রাক প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলু পেয়েছেন ৮৮ হাজার ৩০৯ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মমতাজ বেগম নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ৮২ হাজার ১৩৮ ভোট।

বিভিন্ন অভিযোগ এনে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন পাবনা-২ আসনের নোঙর প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ডলি সায়ন্তনী। রোববার (৭ জানুয়ারি) দুপুর আড়াইটায় সুজানগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় প্রাঙ্গণে গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতিতে তিনি এ ঘোষণা দেন। তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। নির্বাচন শেষে ফলাফলে দেখা যায় ডলি সায়ন্তনী পেয়েছেন ৪ হাজার ৩৮২ ভোট। এই আসনে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ফিরোজ কবির। তিনি পেয়েছেন ১ লাখ ৬৫ হজার ৮৪২ ভোট।

জীবনমুখী গানের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী নকুল কুমার বিশ্বাস বরিশাল-২ আসন থেকে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের হয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। তবে জয়ী হতে পারেননি। তিনি পেয়েছেন মাত্র ১ হাজার ৪২১ ভোট। তার আসনে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন জয় লাভ করেছেন। নৌকা প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেওয়া মেনন ১ লাখ ২৪ হাজার ৫৭৩ ভোট পেয়ে জয় লাভ করেছেন। অন্যদিকে তিনি মাদারীপুর-৩ (সদর একাংশ, কালকিনি ও ডাসার) আসনেও নির্বাচন করেছেন। এ আসনে তিনি ২৬৩ ভোট পেয়েছেন। মাদারীপুর-৩ স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগম ঈগল প্রতীকে ৯৬ হাজার ৬৩৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।

আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম পেয়েছেন মাত্র ২ হাজার ১৭৫ ভোট। এতে জামানত হারিয়েছেন তিনি। হিরো আলম বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে ডাব প্রতীকে বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী হয়ে লড়াই করেন। লড়াইয়ে তৃতীয় হন তিনি। এ আসনে নৌকা প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হন এ কে এম রেজাউল করিম তানসেন। তিনি ৪২ হাজার ৭৫৭ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে জয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক মোল্লা ঈগল প্রতীকে ৪০ হাজার ৬১৮ ভোট পেয়েছেন।

এমএমএফ/এএসএম

আরও পড়ুন