ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য উপহার পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেমকাহিনি ২: জয়া আহসান
দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান। নানা কারণে সারাবছরই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকেন এই অভিনেত্রী। বর্তমানে কলকাতার কয়েকটি ছবিতে কাজ করছেন। একইসাথে বাংলাদেশের কয়েকটি ছবিতেও সমালতালে কাজ করে চলেছেন।
তারমধ্যে আগামী ৮ এপ্রিল পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে জয়া অভিনীত ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেম কাহিনি- ২’ ছবিটি মুক্তি পাবে। রুম্মান রশিদ খানের চিত্রনাট্যে ছবিটি পরিচালনা করেছেন সাফিউদ্দিন সাফি। এখানে জয়া বিপরীতে দেখা যাবে ঢাকাই ছবির কিং খান শাকিব ও চিত্রনায়ক ইমনকে। গুরুত্বপূর্ণ একটি চরিত্রে রয়েছেন লাক্স তারকা মৌসুমি হামিদও।
গতকাল সোমবার, ৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় এফডিসিতে ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেমকাহিনি- ২’ ছবির একটি প্রীতি সম্মেলন এবং অডিও অ্যালবামের মোড়ক উন্মোচনের আয়োজন করা হয়। সেখানে জাগো নিউজের সঙ্গে কথা বললেন জয়া...
জাগো নিউজ : ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেমকাহিনি- ২’ ছবিটিতে জয়ার উপস্থিতি কেমন?
জয়া : এখানে আমি একজন বিখ্যাত মডেল। চরিত্রের নাম মিতু। তার নাম-যশ-খ্যাতি সবকিছু রয়েছে। এরপর জাতীয় দলের একজন ক্রিকেটারের সঙ্গে প্রেমে জড়িয়ে পড়ে। সেই প্রেম এক পর্যায়ে নানা টানাপোড়েনের জন্ম দেয়।
জাগো নিউজ : একজন ক্রিকেটারের প্রেমে পড়ার প্রক্রিয়াটা কেমন?
জয়া : এটা জানতে হলে ছবিটি দেখতে হবে। কারণ সাধারণত আমাদের দেশে একজন মডেল এবং ক্রিকেটারের সঙ্গে প্রেম দেখা যায় না। সেজন্য এ বিষয়ে বলে দর্শকদের ছবিটি দেখার আগ্রহ কমাতে চাইনা। ছবিতে ক্রিকেটারের প্রেমে পড়ার প্রক্রিয়াটি দেখতে হলে- ছবি দেখতে হবে। আর তখনই দর্শকরা বুঝতে পারবেন, মডেল ক্রিকেটারের প্রেম পড়ে নাকি ক্রিকেটার মডেলের প্রমে পড়ে! হাহাহা...
জাগো নিউজ : ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেমকাহিনি-২’ কতোটা সফল হবে বলে ভাবছেন?
জয়া : ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেমকাহিনি-২’ ছবিটি পুরোপুরি বিনোদনমূলক ছবি। এটি সম্পূর্ণরূপে মৌলিক গল্পে নির্মিত। এখানে প্রেম-ফ্যামিলি ড্রামা সবকিছুই দেখতে পাবেন দর্শকরা। আশা করছি ভালো সাড়া পাবে বিগ বাজেটের এই ছবি।
জাগো নিউজ : পরিচালক সাফিউদ্দিন সাফি ও নায়ক শাকিব খানের সঙ্গে এ ছবির প্রথম কিস্তিতে কাজ করেছেন। তবে এবারই প্রথম ইমন এবং মৌসুমি হামিদের সঙ্গে কাজ করলেন। অভিজ্ঞতা কেমন?
জয়া : ইমন খুব সুইট একটা ছেলে। আমরা যখন হায়দ্রাবাদে এ ছবির শুটিং করছিলাম তখন আমি তাকে বলেছিলাম ছবিতে তোমার যে ক্যারেকটার তাতে অনেক দর্শকদের ভালো কিছু দেওয়া সম্ভব। সে খুব ভালো কাজ করেছে। কো-আর্টিস্ট হিসেবে ইমন অনেক ম্যাচিউরড। এটা সকলের মধ্যে দেখা যায় না। আর মৌসুমিও ভালো করেছে যেটা পরিচালক সাফি ভাইও আমাকে বলেছেন। তাছাড়া আমি মনে করি মৌসুমি হালের গ্লামার গার্ল। আগামীতে সে চলচ্চিত্রে নিয়মিত হলে অনেক ভালো কিছু করবে।
জাগো নিউজ : ছবিটি প্রেক্ষাগৃহে পৌঁছুতে কিছুটা বেগ পেতে হয়েছে। বিরক্ত কি?
জয়া : বিরক্ত না ঠিক, অপেক্ষা করতে কষ্ট হচ্ছিলো। বিগ বাজেটের একটি ছবি, চমৎকার গল্প ও নির্মাণ। ছবিটিকে নিয়ে দর্শকদের আগ্রহও চোখে পড়ার মতো। এমন ছবি মুক্তিতে দেরি হলে কিছুটা তিক্ত অভিজ্ঞতা হয় বটে। তাছাড়া আমার মনে হয় ছবিটি আরো আগে মুক্তি পেলেই ভালো হতো। কারণ ছবিটা ক্রিকেট কেন্দ্রিক। কিছুদিন আগে টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপের সময় দেশে ক্রিকেট নিয়ে একটা মাদকতা ছিল। যাই হোক, আশা করছি ক্রিকেটপ্রেমী দর্শকরা এখনো ছবিটি দেখতে আসবেন।
জাগো নিউজ : প্রতিটি ছবিরই নির্দিষ্ট কিছু দর্শক থাকে যাদের টার্গেট করে সেটি নির্মিত হয়। সেদিক থেকে ‘পিপিকে-২’ ছবির টার্গেট কারা?
জয়া : আমাদের দেশে সরাসরি ক্রিকেট নিয়ে চলচ্চিত্র হয়নি। সে ভাবনা থেকে বলা যায় ক্রিকেটপ্রেমীদের হলে টানবে পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেমকাহিনি ২। এখানে ক্রিকেটটাই মূল বিষয়। প্রেম-ভালোবাসা, পারিবারিক গল্পের আবহ এসেছে প্রাসঙ্গিকতায়। যেহেতু আমাদের দেশে সব শ্রেণির মানুষের প্রথম পছন্দ ক্রিকেট, তাই আমি বলব সব শ্রেণির দর্শকরাই ছবিটি উপভোগ করবেন।
জাগো নিউজ : পরিচালক ঘোষণা দিয়েছেন আগামীতে ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেম কাহিনি-৩’ নির্মিত হবে। সেখানেও আপনি থাকছেন। কেমন লাগছে?
জয়া : হ্যাঁ, আজই এখানে এসে কিছুক্ষণ আগে জানলাম বিষয়টি। ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেম কাহিনি-২’ মুক্তির আগেই এমন ঘোষণা বড়ই আনন্দের। আমি সত্যি কৃতজ্ঞ নির্মাতা এবং প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের কাছে একটি ছবির পরপর তিনটি সিক্যুয়েলে আমাকে নির্বাচিত করার জন্য।
জাগো নিউজ : পরবর্তী সিক্যুয়েলে আপনি নিশ্চিত হলেও শাকিব খান থাকছেন কি না সেটি নিশ্চিত নয়। যদি আপনাকে নায়ক নির্বাচন করতে বলা হয় তবে কাকে চাইবেন?
জয়া : (কিছুটা ভেবে) আমাকে দায়িত্ব দিলে বলবো টম ক্রুজকে নিতে! টম ক্রুজের নায়িকা হয়ে কাজ করাটা দারুণ হতো! হাহাহা... তবে এমনটি হবার সুযোগ নেই। শাকিবের সঙ্গে দুটি সিক্যুয়েলে ভালো অভিজ্ঞতা বেশ চমৎকার। সে থাকলেও সমস্যা নেই। আবার প্রযোজক ও পরিচালক যাকে নির্বাচিত করবেন তার সঙ্গে কাজ করতেও আমার কোনো সমস্যা হবে না। আমি চেষ্টা করব নিজের কাজটুকু শতভাত নিখুত করে শেষ করতে।
জাগো নিউজ : বর্তমানে তো দুই বাংলা মিলিয়ে বেশ কিছু ছবিতে কাজ করছেন। সেগুলো সম্পর্কে কিছু বলুন....
জয়া : খাঁচা, লাল মোরগের ঝুটি, বিউটি সার্কাস, ঈগলের চোখ, পুত্র নামের ছবিগুলোতে আপাতত কাজ করছি। এগুলোর গল্প ভাবনা ও নির্মাণ শৈলীতে বৈচিত্রতা আছে। আমার চরিত্রেও রয়েছে ভিন্নতা। দর্শকরা উপভোগ করবেন। এছাড়া নাম ঠিক না হওয়া একটা স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবিতেও কাজ করেছি। এইতো চলছে...
জাগো নিউজ : দুটি ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করেন আপনি। কলকাতার চলচ্চিত্র এবং ঢাকাই চলচ্চিত্রের মধ্যে কী কী তফাৎ চোখে ধরা পড়ে?
জয়া : অনেক তফাৎ আছে। আর মিলটা হলো ভাষাগত। তাছাড়া কলকাতার ছবির বাজেট বাংলাদেশের ছবির তুলনায় বেশি থাকে। তাদের চিত্রনাট্য এবং ছবির গল্পের গাঁথুনিও বেশ মজবুত থাকে।
জাগো নিউজ : ধন্যবাদ। আপনার নতুন ছবির জয় হোক.....
জয়া : আপনাকে এবং জাগো নিউজকেও ধন্যবাদ আমার এবং আমার ছবির সঙ্গে থাকার জন্য। (মুচকি হেসে) বাংলা চলচ্চিত্রেরও জয় হোক।
এলএ/পিআর