কয়েক প্রজন্মের প্রিয় নায়ক সালমান শাহ
ঢাকাই চলচ্চিত্রের অমর নায়ক সালমান শাহ। মৃত্যুর ২৭ বছর পরও তিনি সিনেমাপ্রেমীদের মনে প্রবলভাবে প্রভাব বিস্তার করে যাচ্ছেন। তার ২৫ বছরের জীবনকালে মাত্র চার বছর চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন।
এ চার বছরে সালমান ঢাকাই সিনেমায় এক ইতিহাস রচনা করেছেন। যে ইতিহাসের অমর নায়ক হিসেবে তিনি তার স্থান করে নিয়েছেন। তাইতো তিনি প্রজন্মের পর প্রজন্ম প্রিয় নায়ক হয়ে ফিরে আসছেন।
আরও পড়ুন: এক নজরে সালমান শাহ
এত অল্প সময় অভিনয় করে আর কোনো চিত্র নায়ক জনপ্রিয়তার শীর্ষে যেতে পারেননি। এ কারণে অনেক চলচ্চিত্র বিশ্লেষক সালমান শাহকে চলচ্চিত্রের ‘বিস্ময়কর নায়ক’ বলে থাকেন।
আসলেই সালমান শাহ ঢাকাই চলচ্চিত্রের জন্য এক ‘বিস্মকর নায়ক’। ঢাকাই চলচ্চিত্রের আকাশে তিনি ধূমকেতুর মতো আবির্ভূত হয়েছিলেন।
সালমান শাহর মৃত্যুর দুই যুগেরও বেশি সময় অতিক্রম করেছে। কিন্তু তার জনপ্রিয়তা মোটেই কমেনি। তার সিনেমার গানগুলো এখন সমানভাবে শ্রোতাপ্রিয়। তার অভিনীত সিনেমাগুলো এখন নতুন প্রজন্মের সিনেমাপ্রেমীরা দেখছেন।
আরও পড়ুন: অমর নায়ক সালমান শাহ স্মরণে বিশেষ তথ্যচিত্র
সালমানের প্রতিটি সিনেমা কালজয়ী। তিনি যে এখনো সমানভাবে তার ভক্ত-অনুরাগীদের হৃদয়ে সগৌরবে রাজত্ব করছেন, তা তার মৃত্যুদিবস ও জন্মদিনে অনুভব করা যায়।
সালমান শাহর প্রতিটি জন্মদিন ও মৃত্যুদিনে সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা যায় অনুরাগীদের ভালোবাসার প্লাবন। অনুরাগীরা গভীর ভালোবাসা ও শ্রদ্ধায় স্মরণ করে প্রিয় নায়ক সালমান শাহকে।
সালমান শাহকে শুধু তার ভক্ত-অনুরাগীরাই স্মরণ করেন না। এ প্রজন্মের নায়ক-নায়িকারাও তাকে স্মরণ করেন। এসব নায়ক নায়িকাদের কাছে এখনো স্বপ্নের নায়ক ‘সালমান শাহ’। সবাই যেন সালমানের মতো হতে চায়। চলচ্চিত্রে এমন অনুকরণীয় চরিত্র বিরল।
আরও পড়ুন: সালমান শাহ’র স্ত্রী এখন তিন সন্তানের মা
তাকে এখনো ভালোবাসায় স্মরণ করেন এ প্রজন্মের নায়ক, শাকিব খান, সাইমন, বাপ্পি চৌধুরী, নিরব, চৌধুরী, আরেফিন শুভ, সিয়ামসহ অনেকেই। তারা সবাই মনে করেন সালমান শাহর মতো এমন নায়ক আর ঢাকাই সিনেমায় আসেননি।
সালমান শাহ অভিনয় করে সিনেমাপ্রেমীদের হৃদয়ের গহীনে স্থান করে নিয়েছিলেন। তিনি যে কয়টি বছর সিনেমায় ছিলেন, তার প্রতিটি দিনেই দাপটের সঙ্গে রাজত্ব করে গেছেন। তাই তো তাকে ঢাকাই চলচ্চিত্রের রাজপুত্র বলে অভিহিত করেছেন অনেকে।
সালমান শাহর জন্ম ১৯৭১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সিলেটের দাড়িয়াপাড়ায়। বাবার নাম কমরউদ্দিন চৌধুরী। মায়ের নাম নীলা চৌধুরী। পরিবারের বড় ছেলে সালমানের ডাক নাম শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন। তবে চলচ্চিত্রে তিনি সবার কাছে সালমান শাহ নামেই পরিচিত ছিলেন।
মাত্র চার বছরের ক্যারিয়ারে ২৭টি সিনেমায় অভিনয় করেছেন সালমান শাহ। সালমান শাহর অভিনীত সিনেমাগুলোর মধ্যে অন্যতম ‘অন্তরে অন্তরে’, ‘সুজন সখী’, ‘স্বপ্নের নায়ক’, ‘স্বপ্নের ঠিকানা’, ‘চাওয়া থেকে পাওয়া পাওয়া’, ‘জীবন সংসার’, ‘প্রেম প্রিয়াসী’, ‘সত্যের মৃত্যু নেই’, ‘মায়ের অধিকার’, ‘এই ঘর এই সংসার’, ‘তোমাকে চাই’, ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘বুকের ভেতর আগুন’ ইত্যাদি।
সালমান শাহের সঙ্গে চিত্রনায়িকা শাবনূরের জুটি ছিল সবচেয়ে জনপ্রিয়। ঢাকাই চলচ্চিত্রের ইতিহাসে সবচেয়ে সেরা জুটিও বলেন কেউ কেউ।
সালমান শাহ-শাবনূর জুটির প্রতিটি সিনেমাই ছিল সুপারহিট। পর্দায় তাদের রসায়ন ছিল উপভোগ্য। সালমান যুগে যুগে, কালে কালে ফিরে আসবেন সিনেমাপ্রেমীদের মাঝে।
এমএমএফ/এএসএম