কলকাতায় উপেক্ষিত শাকিব খান!
বাংলাদেশের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়া ও কলকাতার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এসকে মুভিজের ‘বাদশা’ ছবির শুটিং করতে গেল শনিবার, ১২ মার্চ ঢাকা এসেছেন টালিগঞ্জের সুপারস্টার জিৎ। ওপার বাংলার এই জনপ্রিয় নায়ক বাংলাদেশি ছবিতে কাজ করছেন প্রথমবারের মতো।
খবরটি যেদিন থেকে জাজ প্রকাশ করে সেদিন থেকেই এদেশীয় গণমাধ্যমে বিনোদন পাতার সবচেয়ে বড় খবর হয়ে আছেন তিনি। কবে-কখন আসবেন জিৎ, কোথায় হবে শুটিং- এমনই নানা তথ্য জানতে ব্যস্ত সাংবাদিকেরা।
জিৎ আসার পর শুটিং স্পটেও ছুটে গিয়েছেন সাংবাদিকেরা। যদিও জিতের সঙ্গে কথা বলার অনুমতি দেয়নি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান। তবু অনেকেই সৌজন্য সাক্ষাত করে এসে সেটাই সংবাদ করে দিয়েছেন। ঢাকার গণমাধ্যমের এই ভালোবাসায় মুগ্ধ ওপারের অঘোষিত কিং জিৎ।
তবে যৌথ প্রযোজনার ছবির জন্য কলকাতায় শুটিং করতে গিয়ে গণমাধ্যমের পাত্তাই পেলেন না এপারের কিং খান খ্যাত নায়ক শাকিব। যেদিন জিৎ এলেন সেদিনই শাকিব কলকাতায় গিয়েছেন। সেখানে এসকে মুভিজ ও জাজের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত নতুন ছবি ‘শিকারি’র শুটিং করছেন। তার নায়িকা টালিগঞ্জের জনপ্রিয় মুখ শ্রাবন্তী।
আজ তিন দিন পার হয়ে গেলেও শাকিবের কলকাতা যাওয়া কিংবা প্রথমবারের মতো টালিগঞ্জের ছবিতে কাজ করা নিয়ে কোনো আলোচনাই দেখা গেল না ওপার বাংলা গণমাধ্যমে। বিষয়টি বেশ বিব্রতকর পরিস্থিতির জন্ম দিয়েছে এপারে। সোশাল মিডিয়াতেও অনেকেই নানা রকম মন্তব্য প্রকাশ করছেন। বেশিরভাগ মন্তব্যে শাকিবকে পাত্তা না দেওয়ায় ক্ষোভ ঝেড়েছেন শাকিব ভক্তরা।
অনেক সিনিয়র সাংবাদিক ও অভিনয় তারকারা জিৎকে নিয়ে অতি উৎসাহী হয়ে মাতামাতি করার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিনয় শিল্পী বলেন, ‘আমি বেশ কয়েকটি যৌথ প্রযোজনার ছবিতে অভিনয় করেছি ও করছি। দেখেছি কলকাতার মানুষদের চোখে ঢাকাই ছবি নিয়ে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি। কাজ করে খেতে হবে বলে তাদের সঙ্গে কাজ করি। তবে এবারের ঘটনাটি সত্যি বেদনাদায়ক। শাকিব আমাদের ইন্ডাস্ট্রির ব্র্যান্ড। তাকে যে দেশে অবহেলা করা হচ্ছে সেই দেশের নায়ক নিয়ে আমাদের দেশের গণমাধ্যমের আদিখ্যেতা বেশ দৃষ্টিকটু। আমাদের সাংবাদিকদের উচিত ছিলো জিৎকে নিয়ে চুপচাপ থাকা।’
এদিকে জাগো নিউজের কলকাতা প্রতিনিধি দিলেন চমকপ্রদ এক খবর। তিনি বললেন, ‘কলকাতার মানুষ জানেই না শাকিব খান কে? কোনো গণমাধ্যমগুলো শাকিবের নাম জানলেও তিনি যে টালিগঞ্জে ছবি করছেন এবং শুটিং করতে এসেছেন এটা কেউ জানে না।’
তিনি আরো বলেন, ‘এ বিষেয় এসকে মুভিজের সঙ্গে যোগাযোগ করেও আন্তরিকতা মিলেনি। মনে হলো তারা ছবিটির প্রচার করতে চায় না। অবশ্য এটা এসকে মুভিজের পুরোনো স্বভাব। তাদের আন্তরিকতায় ঘাটতি আছে বলে গণমাধ্যমগুলোও এই প্রতিষ্ঠানটিকে এড়িয়ে চলে।’
পাশাপাশি তিনি আরো জানালেন, ওপার বাংলা এখন বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত। সাংবাদিকরাও সেদিকে নজর দিচ্ছেন। তাই ছবির সংবাদ সংগ্রহ করায় তাদের আগ্রহ নেই।
সবশেষে তিনি যোগ করলেন, পশ্চিমবাংলায় ৯৯ ভাগ পত্রিকারই বিনোদনের জন্য আলাদা কোনো বিভাগ নেই। তারা জাতীয় সংবাদকে গুরুত্ব দিয়ে প্রতিবেদক নিয়োগ দেয়। তাদের দিয়েই বিনোদনের সংবাদ সংগ্রহ করায়। সে কারণে সাংবাদিকরা রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত হয়ে ওঠায় আলোচনার বাইরে থেকে গেলেন শাকিব খান।
প্রসঙ্গত, জাজ মাল্টিমিডিয়ার ফেসবুক পেজে জিৎকে নিয়ে বিভিন্ন পোস্ট দেওয়া হলেও এসকে মুভিজের ফেসবুকে কোনো খবর নেই শাকিবকে নিয়ে। স্বভাবতই এসকে মুভিজের প্রযোজনা নিয়ে সমালোচনা অব্যাহত রইল ঢাকায়। এর আগেও জাজের সঙ্গে বেশ কিছু ছবি যৌথভাবে প্রযোজনা করতে এসে এপারের শিল্পীদের অবমূল্যায়ণের জন্য সমালোচিত হয়েছে অশোক ধানুকার এই প্রতিষ্ঠান।
এনই/এলএ/এমএস