ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিনোদন

বিজ্ঞাপনের কারণে নাটকের দর্শক বিরক্ত : সাজু খাদেম

প্রকাশিত: ১০:১৯ এএম, ১২ মার্চ ২০১৬

মঞ্চ দিয়ে শুরু হলেও সাজু খাদেম এখন ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা। কাজ করেছেন দুটি চলচ্চিত্রে। আপাতত ব্যস্ত আছেন নাটক নিয়ে। তার অভিনীত প্রায় অর্ধ ডজন ধারাবাহিক নাটক প্রচারিত হচ্ছে বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে। এছাড়া বিভিন্ন বিনোদন মূলক অনুষ্ঠানেও মাঝেমধ্যে সঞ্চালক হিসেবে তাকে দেখা যায়।

জনপ্রিয় এই অভিনেতার সঙ্গে আলাপ হলো নির্মাতা মোস্তফা কামাল রাজের ‌‘নয় ছয়’ নামের ধারাবাহিক নাটকের সেটে। সেই আলাপের চুম্বক অংশটুকু পাঠকদের উদ্দেশে তুলো ধরা হলো-

জাগো নিউজ: ‘নয় ছয়’ নাটকে আপনার চরিত্রটি কেমন?
সাজু খাদেম : নয় ছয় নাটকে দেখা যাবে আমি একটি পরিবারের বড় ছেলে। আমার আরো দুটো ভাই আছে। আমাদের বাবা ভীষণ একজন হিসেবি মানুষ। নাটকে আমি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী থাকি। চশমা ছাড়া কিছুই দেখতে পাইনা। তবে দর্শকরা নাটকে আমাকে ভীষণ সৎ একজন মানুষ হিসেবে দেখতে পাবেন। এখানে একটা মজার ব্যাপার আছে। নাটকে আমি বিবাহিত থাকি কিন্তু আমার পরিবার সেটা জানেনা।

অথচ আমার বউ আমাদের বাড়িতেই ভাড়া থাকেন। গোপনে গিয়ে তার সাথে দেখা করি, তার হাতের রান্না খাই। এর ভিতর আরো অনেক মজার ব্যাপার আছে। দর্শকদের ভালো লাগবে যেটা দেখে।

জাগো নিউজ : এবার জানতে চাইবো আপনার নতুন বিজ্ঞাপনটি সম্পর্কে। অনেক বছর পর বিজ্ঞাপনে কাজ করলেন। কেমন অভিজ্ঞতা হলো?
সাজু খাদেম : অনেক বছর বলতে সর্বশেষ আমি বিজ্ঞাপনে কাজ করেছিলাম প্রায় বছর দশেক আগে। এটি ছিল মুঠোফোন সেবাদানকারি প্রতিষ্ঠান গ্রামীণফোনের। এবার বিজলি ক্যাবল (বিদ্যুতের তার)’র বিজ্ঞাপন চিত্রে কাজ করলাম। এটি নির্মাণ করেছেন মোস্তফা কামাল রাজ। বেশ মজা করে এর শুটিং করেছি আমরা। টিভিসির কনসেপ্টটা বেশ ভালো। খুব শিগিগির এটি প্রচারে আসবে বলে জেনেছি।

জাগো নিউজ : সাম্প্রতিক ব্যস্ততা নিয়ে বলুন?
সাজু খাদেম : অনেকগুলো নাটকে কাজ করছি। এরমধ্যে রয়েছে অনিমেষ আইসের ‘বুবুনের সাত সতের’, ‘কাছাকাছি’, ‘থার্ড আই’, ‘অলসপুর’, ‘কলিং বেল’, ‘সহযাত্রী’  ছাড়াও আরো কয়েকটি ধারাবাহিক প্রচার হচ্ছে। তাছাড়া এখন রাজের নতুন সিরিয়াল মাছরাঙ্গা টিভি`র জন্য ‘নয় ছয়’-এ কাজ করছি।

Sazu 1
জাগো নিউজ : খন্ড নাটক এবং ধারাবাহিক এ দুটোর মধ্যে নিজের ভালো লাগা কোথায় খুঁজে পান?

সাজু খাদেম : একজন অভিনেতা হিসেবে আমার কাছে দু’টোই উপভোগের। পার্থক্যটা হলো খন্ড নাটক একবারেই শেষ হয়ে যায়। আর ধারাবাহিক নাটক দীর্ঘ সময় ধরে প্রচার হয়। এখানে চরিত্রের জন্য নিজেকে অনেকটা সময় মনযোগী রাখতে হয়।

জাগো নিউজ : আপনি তো উপস্থাপনাও করেন। নতুন করে উপস্থাপন সাজু খাদেমকে কোথাও দেখা যাবে?
সাজু খাদেম : আপাতত নতুন করে কিছু করছি না। এনটিভি’র জন্য ‘হা show’ নামে একটি অনুষ্ঠানে উপস্থাপনা করছি। এটা একটি কমেডি শো। এখানে আমরা খুঁজছি একজন মেধাবীকে যে হাসাতে পারবে আবার তার জ্ঞানের পরিধিও হবে বিস্তর। এখানে কাজ করে বেশ আনন্দ পেয়েছি। উপস্থাপনাতেও ভিন্ন ঢং-য়ের আমেজ ছিলো।

জাগো নিউজ : নাটকে আপনার চরিত্রগুলো প্রায়ই হাস্য-রসাত্মক দেখা যায়। রোমান্টিকতায় আপনাকে খুব বেশি দেখা যায় না। চেহারা তো খারাপ না। তবে......
সাজু খাদেম : হা হা হা। ব্যাপারটা আসলে তেমন নয়। রোমান্টিসিজমের জন্য চেহারা হয়তো একটা ফ্যাক্টর কিন্তু সেটি অপরিহার্য নয়। অভিনয়টাই বড় কথা। যাক, আমি কিন্তু বেশ কিছু রোমান্টিক নাটকে কাজ করেছি। আগামীতেও সুযোগ হলে করব। এর বাইরে বলবো আমার মনে হয় একজন অভিনেতার হাতে কোনো ক্ষমতা নেই নিজেকে রোমান্টিক বা কমেডি চরিত্রে উপস্থাপন করার। এটা নির্ভর করে গল্প, নির্মাতা ও দর্শকের রেসপন্সের উপর। অনেকেই কমেডি করতে এসে রোমান্টিক হিরো হয়েছেন আবার অনেকেই রোমান্টিক হিরো হতে গিয়ে কমেডিয়ান হিসেবেই নিজেকে ব্যস্ত করে তুলেছেন। টোটাল বিষয়টাই বেশ মজার। তাছাড়া আজকাল রোমান্টিক নাটক খুব কমই হয়। হাসির নাটকগুলোই দর্শক চান এবং চ্যানেল সেই চাহিদা পূরণের চেষ্টা করে। তাই আমিও হাসির চরিত্রগুলোকেই প্রাধান্য দেই। অবশ্যই একটি চরিত্র থেকে অন্যটি আলাদা থাকে।

জাগো নিউজ : বর্তমান নাটকের হালচাল নিয়ে আপনার মূল্যয়ন কী?
সাজু খাদেম : প্রথম কথা হচ্ছে অনেকেই বলে থাকেন এখনকার নাটক চলেই না! আমি কথাটার সাথে একমত নই। কারণ নাটক যদি দর্শকরা না দেখতেন তবে নির্মাণ বন্ধ হয়ে যেত। কিন্তু তা হয়নি। ভালো ও মন ছুঁয়ে যাবার মতো গল্পে প্রচুর নাটক হচ্ছে। দর্শক সেগুলো দেখছেনও। তবে সেটা বিরক্তি নিয়ে। এরজন্য দায়ী বিজ্ঞাপন এজেন্সি ও টিভি চ্যানেলের বাজারজাতকরণ ব্যবস্থাপনা। বিজ্ঞাপন তো অবশ্যই প্রচার করতে হবে। কিন্তু এর সঠিক পরিকল্পনা চাই।

আরও বলা যায়, আমাদের নাটকের ইন্ডাস্ট্রিতে বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতা আছে। কিন্তু এগুলো এমন নয় যে তার সমাধান করা যাবে না। আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করছি নাটকের মান ও নির্মাণে মুন্সিয়ানা আনতে। খুব শিগগরিই সকল মন্দাবস্থার উত্তরণ হবে বলে প্রত্যাশা করি।

Sazu 2
জাগো নিউজ : ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেম কাহিনি’ এবং ‘কমন জেন্ডার’ দু’টি ছবিতে কাজ করেছিলেন। নতুন কবে চলচ্চিত্রে দেখা যাবে?

সাজু খাদেম : চলচ্চিত্রে কাজ করে ভালো রেসপন্স পেয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের চলচ্চিত্রের বাজারটা খুব একটা চাঙ্গা নয়। নিজের পছন্দমতো চরিত্র ও নির্মাতাও তাই সহজে মিলেনা। তাই আপাতত নাটক নিয়েই ব্যস্ত আছি। ব্যাটে বলে চার হলে যে কোনো সময়ই চলচ্চিত্রে কাজের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়ে যেতে পারি।

জাগো নিউজ : আপনিতো ঢাবি’র চারুকলার ছাত্র ছিলেন। ক্যাম্পাসের রঙিন দিনগুলোকে মিস করেন না?
সাজু খাদেম : খুব মিস করি। সেই চারুকলার ক্যাম্পাস, ছবির হাট, টিএসসিতে বন্ধুদের সাথে দলবেঁধে গিটারের টুংটাং সুর তোলা, রং-তুলির রঙিন ক্যানভাস- সবমিলিয়ে যখনই ওই দিনগুলোর কথা মনে পড়ে নিজেকে হারিয়ে ফেলি সোনালি অতীতের মধুমাখা দিনে। ব্যস্ততার জন্য ক্যাম্পাসে খুব বেশি যাওয়া হয়ে ওঠে না। আমি এফ রহমান হলে থাকতাম। সময় পেলে হলে গিয়ে ঢুঁ মারি। আর অবসর হলে ছবি আঁকতে চেষ্টা করি। শত হলেও আঁকিয়ে মানুষ তো।

জাগো নিউজ : ধন্যবাদ সাজু ভাই
সাজু খাদেম : আপনাকেও ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।

এনই/এলএ