নাটক প্রচারের জন্য মনিটরিং প্রয়োজন : বাঁধন
লাক্স তারকা আজমেরী হক বাঁধন। ছোট পর্দার প্রথমসারির অভিনেত্রীদের মধ্যে তার নাম উঠে আসে। অসংখ্য নাটকে কাজ করেছেন। বাঁধন অভিনীত বেশ কয়েকটি সিরিয়াল প্রচারিত হচ্ছে কয়েকটি চ্যানেলে। জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী তার সমসাময়িক কাজ নিয়ে কথা বললেন জাগো নিউজের বিনোদন বিভাগে-
জাগো নিউজ : ব্যস্ততা কি নিয়ে?
বাঁধন : বেশ কয়েকটি সিরিয়ালের কাজ করছি বর্তমানে। আরটিভির জন্য সাগর জাহানের ‘এই কুলে আমি, ওই কুলে তুমি’, এটিএন বাংলায় অঞ্জন আইচের ‘তীরন্দাজ’, ‘মেঘের উপর মেঘ উঠেছে’, ‘সহযাত্রী’সহ আরো কয়েকটি সিরিয়ালের কাজ করছি। জিটিভির ‘আজকের অনন্যা’সহ আরো বেশ কিছু চ্যানেলে উপস্থাপনা করছি। এছাড়া হাতেগোনা দুই একটি খন্ড নাটকে কাজের জন্য কথাবার্তা চলছে।
জাগো নিউজ : অনেকদিন নতুন বিজ্ঞাপনে দেখছি না
বাঁধন : আমি আসলে বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে একটু চুজি। ভালো মানের বিজ্ঞাপন পেলে কাজ করি। খুব শিগগিরই হয়তো নতুন কিছু হবে।
জাগো নিউজ : কাজের ক্ষেত্র হিসেবে নাটক এবং বিজ্ঞাপনকে কিভাবে দেখেন?
বাঁধন : নাটকে যেমন অভিনয় করতে হয় বিজ্ঞাপনেও তেমনি অভিনয় করতে হয়। পার্থক্যটা শুধু নাটকে সময়টা বেশি এবং বিজ্ঞাপনে কম। তবে বিজ্ঞাপনটা নাটকের চেয়ে বেশি প্রচার হয়। সেজন্য বিজ্ঞাপনে কাজ করলে দর্শকদের কাছে যাওয়াটা কিছুটা সহজ হয় বলে আমি মনে করি। পাশাপাশি নাটকের চেয়ে বিজ্ঞাপনে কাজ করাটা কঠিনও। কেননা, টিভিসিতে খুব অল্প সময়ে ম্যাসেজটি দর্শকদের কাছে পৌঁছাতে হয়। তবে আমার কাছে বেশি ভালো লাগে নাটকে কাজ করতে। নাটকের মাধ্যমে আমার পরিচিতিটা বেশি হয়েছে।
জাগো নিউজ : এখনতো টিনএজদের নিয়ে প্রচুর নাটক হচ্ছে। সেগুলো আলোচিত হচ্ছে, সমালোচিতও হচ্ছে। আপনার ভাবনা কেমন?
বাঁধন : টিনএজদের ড্রাগ অ্যাডিকশন, প্রেম, সাইবার ক্রাইম থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিষয়ে নাটক হচ্ছে। তাদের মধ্যে একটা অ্যাওয়ারনেস তৈরি হচ্ছে। বৃদ্ধদের মধ্যে সচেতনতা ক্রিয়েট করে লাভ নেই। যা করার তরুণদেরই করতে হবে। বিষয়টি আমার কাছে হান্ড্রেড পার্সেন্ট পজেটিভ। তবে সংলাপ, গল্পের গাঁথুনি, নির্মাণের মুন্সিয়ানার প্রতি যত্নবান হওয়া উচিত।
জাগো নিউজ : এখনকার নাটক নিয়ে প্রচুর অভিযোগ রয়েছে। গল্প ভালো না, বাজেটের সীমাবদ্ধতা, প্রচারের সময় চ্যানেলে বিজ্ঞাপনের আধিক্য। এসব থেকে বেরিয়ে আসার উপায় কী?
বাঁধন : ভালো মন্দের মিশেলেই আসলে কাজ হচ্ছে। যেমন ভালো নাটক নির্মিত হচ্ছে তেমনি খারাপ নাটকও নির্মাণ হচ্ছে। তবে চ্যানেলগুলোতে এখন একটু বেশি অব্যবস্থাপনা, স্বজনপ্রিতী দেখা যাচ্ছে। এসব অবস্থা থেকে বেরিয়ে আস্তে চ্যানেলগুলোকে আগে এগিয়ে আসতে হবে। ব্যবসায়িক ফায়দার কথা না ভেবে সামগ্রিক পরিস্থিতিও বুঝতে হবে চ্যানেলওয়ালাদের। তাছাড়া আমাদের নাটক প্রচারের বেলায় কোনো মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা নেই। সেজন্য মানহীন নাটকের প্রচার বাড়ছে। এ বিষয়ে মনিটরিং প্রয়োজন। মনে রাখতে হবে মানুষের জন্য তৈরি হচ্ছে নাটকগুলো। কিন্তু নাটকের জন্য মানুষের তৈরি হচ্ছে না।
আর আর্টিস্টদের মধ্যে অনেকেই কাজ না জেনেও ভুরি ভুরি কাজ করছে লবিং আর সম্পর্কের জোরে। এতে যে কাজের মানটা নষ্ট হচ্ছে সেটি পরিচালকও ভাবেন না, টেলিভিশনগুলোও ভাবছেন না। পাশাপাশি আজকাল এই অভিযোগ শোনা যায়, নতুনদের অনেকেই কাজটাকে ভালোবাসছে না। তারা ব্যস্ত থাকে অর্থের পিছনে। তবে অনেকেই ভালো কাজ করছেন নতুনদের মধ্যে।
জাগো নিউজ : ২০১০ সালে অভিনেতা সজলের সঙ্গে আপনি মুশফিকুর রহমান গুলজার পরিচালিত ‘নিঝুম অরণ্যে’ ছবিতে কাজ করেছিলেন। এরপর আর নতুন কোনো ছবিতে দেখা যায়নি। কারণটা বলবেন?
বাঁধন : ‘নিঝুম অরণ্যে’ ছবিটি মুক্তিযুদ্ধ সময়ের গল্প নিয়ে ছবিটি হয়েছিল। কিছুদিন আগে ছবিটি চ্যানেল আইতে প্রচারিত হয়েছে। ছবিটি কাজ করে ভালো লেগেছিল। তাছাড়া এরপর নতুন ছবির কথা যদি বলি তবে বলতে চাই ব্যাটে-বলে মেলেনি তাই আর করা হয়নি। অনেক ছবিতে কাজের প্রস্তাব পেয়েছি কিন্তু হাসিমুখে ফিরিয়ে দিতে হয়েছে। কারণ ছবির গল্প পছন্দ হয় না। আবার গল্প পছন্দ হলেও যতটা সময় ছবির পিছনে দেওয়া উচিত ততটা সময় দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব হয় না। কারণ আমি খুব সীমিত কাজ করি। আমার পরিবার আছে, মেয়ে আছে। সে এখন স্কুলে যায়। তাকে দেখভাল করা লাগে। সবমিলিয়ে আমি সময় করে উঠতে পারিনি। তবে চলচ্চিত্রে কাজের ইচ্ছেটা আমার সময়ই ছিল এবং এখনো আছে। মনের মতো চরিত্র হলে অবশ্যই কাজ করব।
জাগো নিউজ : মাঝখানে হঠাৎ আপনার পারিবারিক টানাপড়েন নিয়ে মুখরোচক কিছু খবর শোনা গেছে। এ বিষয়ে কিছু বলুন-
বাঁধন : মেয়েকে নিয়ে আমি আলাদা থাকছি এ বিষয়টা শোবিজে সবাই জানেন। তাই বলে আমার স্বামীর সঙ্গে প্রাতিষ্ঠানিক ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়নি। তবুও আমার ডিভোর্স নিয়ে খবর হয়েছে! সেগুলো করেছেন আমার পরিচিত সাংবাদিকেরাই। কেন তারা এমনটি করেছেন সেটা তারাই বলতে পারবেন। আমি আসলে আমার মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে বিষয়টি নিয়ে কোনো নাড়াচাড়া করতে রাজি ছিলাম না। আমি চাইনা এসব ঘটনা ওর মনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলুক। তাই যারা আমার সংসার ভাঙনের সংবাদটি কিছুদিন আগে প্রকাশ করেছেন দয়া করে তারা আর একটু রক্ষনশীলতার পরিচয় দিবেন বলে আশা করি।
এনই/এলএ