২১ ফেব্রুয়ারি নিয়ে মাত্র ৩ সিনেমা!
মায়ের ভাষায় কথা বলার অধিকার আদায়ের জন্য ১৯৫২ সালের ২১ ফ্রেব্রুয়ারি ঢাকার রাজপথে জীবন উৎসর্গ করেন বাংলা মায়ের অকুতোভয় সন্তানরা। তাদের স্মৃতি পরবর্তী প্রজন্মকে জানানোর জন্য ভাষা আন্দোলন নিয়ে লেখা হয়েছে অসংখ্য গান, কবিতা, গল্প ও উপন্যাস। রচিত হয়েছে অনেক নাটক।
কিন্তু ভাষা আন্দোলন নিয়ে সেই অর্থে সিনেমা নির্মাণের সংখ্যা খুবই কম। বলা চলে হাতে গোনা কয়েকটি সিনেমা নির্মিত হয়েছে। সিনেমার রুপালি পর্দায় মহান একুশে ফেব্রুয়ারির গল্প অনেকটা উপেক্ষিত-ই বলা যায়। অনেক খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাত্র ৩টি সিনেমা নির্মিত হয়েছে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারির ভাষা আন্দোলন নিয়ে।
আরও পড়ুন: বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ‘ওরা ৭ জন’র বিশেষ প্রদর্শনী
ভাষা আন্দোলন নিয়ে নির্মিত সিনেমাগুলোর মধ্যে রয়েছে, ১৯৭০ সালের ১০ এপ্রিল মুক্তি প্রাপ্ত সিনেমা ‘জীবন থেকে নেয়া’, ২০০৬ সালে মুক্তি পায় সিনেমা ‘বাঙলা’ এবং ২০১৯ সালে মুক্তি পাওয়া সিনেমা ‘ফাগুন হাওয়ায়’।
১৯৫২ সালের ভাষায় আন্দোলনের অনেক বছর পর অর্থাৎ, ১৯৭০ সালে নির্মাণ করা হয় ‘জীবন থেকে নেয়া’ সিনেমাটি। এটি নির্মাণ করেন জহির রায়হান।
‘জীবন থেকে নেয়া’ সিনেমাটিতে অভিনয় করেন রাজ্জাক, সুচন্দা, রোজী সামাদ, খান আতা, রওশন জামিল, আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
আরও পড়ুন: বাংলা ও কোরিয়ান ভাষায় আসছে ‘ডাকপিয়ন’
‘জীবন থেকে নেয়া’ সিনেমায় ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’, ‘এ খাঁচা ভাঙব আমি কেমন করে’ প্রভৃতি গান ব্যবহৃত হয়েছে এবং ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসকে ধারণ করার পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের আগে স্বাধীনতার চেতনাও ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
‘জীবন থেকে নেওয়া’ মুক্তির পর প্রায় ৩৬ বছর পরে একটি সিনেমা নির্মাণ করা হয়েছে। এ সিনেমার নাম ‘বাঙলা’। এটি ২০০৬ সালে মুক্তি পায়। সিনেমাটি পরিচালনা করেন শহীদুল আলম খোকন। সিনেমাটি অভিনয় করেছেন শাবনূর, হুমায়ুন ফরীদি, মাহফুজ আহমেদসহ আরও অনেকে।
ভাষা আন্দোলন নিয়ে সবশেষ সিনেমাটি পরিচালনা করেন অভিনেতা ও নির্মাতা তৌকীর আহমেদ। সিনেমাটির নাম ‘ফাগুন হাওয়া’। এটি ২০১৯ সালে মুক্তি পায়। সিনেমাটিতে অভিনয় করেন সিয়াম আহমেদ, নুসরাত ইমরোজ তিশা, আবুল হায়াত, শহীদুল আলম সাচ্চু, ফজলুর রহমান বাবু প্রমুখ।
ভাষা আন্দোলন নিয়ে নির্মিত সিনেমার পরিসংখ্যানে বোঝা যাচ্ছে ২১ ফেব্রুয়ারি নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণে আমাদের দেশের নির্মাতাদের আগ্রহ নেই কিংবা এই ধরনের সিনেমা নির্মাণের জন্য যেসব সহযোগিতা প্রয়োজন তা সরকারের পক্ষ থেকে নির্মাতারা পচ্ছেন না।
অথচ নতুন প্রজন্মের কাছে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস নিয়ে নির্মিত সিনেমা পৌঁছে দেওয়া ভীষণ প্রয়োজন। কারণ সিনেমা দিয়েই ইতিহাসের বিভিন্ন বিষয় মানুষের কাছে সহজবোধ্য ভাষায় পৌঁছে দেওয়া সম্ভব।
এমএমএফ/এএসএম