সুরের সাধনায় তাদের ভালোবাসার সংসার
এ সময়ের তরুণ সংগীত পরিচালক মো. আব্দু্ল্লাহ আল ফাহাদ সৈকত। সবাই তাকে এএফ সৈকত নামে চেনেন। শৈশব থেকে লালিত স্বপ্ন ছিল কাজ করবেন সংগীতাঙ্গনে, সেই স্বপ্নের পেছনে সৈকতের পথ চলা শুরুটা কষ্টের হলেও বেশি দিন লাগেনি জয়ের মুখ দেখতে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চাকরি ছেড়ে সংগীত পরিচালনায় পুরোদমে সময় দিতে থাকেন। চলচ্চিত্র, নাটক ও মিজিজিক ভিডিওর শতশত গান কম্পোজ করেছেন তিনি। হয়েছেন সফল সংগীত পরিচালক।
সফল এই সংগীত পরিচালকের স্ত্রী ফাইজা জয়া। সরকারি সংগীত কলেজের এই শিক্ষার্থী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এখন তুমুল জনপ্রিয় তিনি। কণ্ঠের জাদুকরী সুরের কারণের প্রশংসার কেন্দ্রবিন্দুতে তিনি। ১৫টিরও বেশি একক ও মৌলিক গান করেছেন। সংগীতাঙ্গনের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে জয়া অর্জন করেছেন ক্রেস্ট, মেডেল ও সনদসহ শতাধিক পুরস্কার।
সংগীত ভুবনের এই দম্পতি কথা বলেছেন জাগো নিউজের সঙ্গে, জানিয়েছেন তাদের সাফল্য ও সম্ভাবনার কথা।
আলাপচারিতায় ফাইজা জয়া বলেন, গানের প্রতি ভালোলাগা ছিল ছোটবেলা থেকেই। আমার মা গান করতেন, গানের হাতেখড়ি আমার মায়ের কাছেই। এবং বাবার অনুপ্রেরণায় আমার সংগীত জীবন শুরু হয়, স্বামীর প্রেরণায় এখনও গান করে যাচ্ছি।
আপনার কেনো মনে হলো গানের প্রতিভা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করা উচিত, এর কী কোনো কারণ আছে? এই প্রশ্নের জবাবে জয়া বলেন, সোশ্যাল মিডিয়া এমন একটি মাধ্যম যেখানে খুব সহজে ও অল্প সময়ে দশর্ক ও শ্রোতাদের কাছে পৌঁছানো যায়, দশর্ক ও শ্রোতাদের মতামত সরাসরি পাওয়া যায়। প্রথমে শখের বশেই ফেসবুক পেইজে গান প্রকাশ করা শুরু করি, দর্শকদ-শ্রোতাদের ব্যাপক সাড়া দেখে এখন নিয়মিত কভার করা গান, একক ও মৌলিক সংগীত প্রকাশ করছি। সংগীতের এই সফলতা আমার মায়ের দোয়া ও অনুপ্রেরণায় সম্ভব হয়েছে। পারিবারিক সমর্থন এ সফলতায় ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে।
আপনার গানে মিলিয়ন মিলিয়ন ভিউ দেখা যায়, ফেসবুক পেইজ নিজের নাম না দিয়ে কেন ‘অসমাপ্ত গল্প’ নাম দেওয়া হলো? এমন প্রশ্নের জবাবে এই সংগীতশিল্পী বলেন, আমি চাই আমার গান সবার মাঝে আজীবন বেঁচে থাকবে। আমার বিশ্বাস গানের গল্প কখনও শেষ হবে না, কোনো না কোনোভাবে অসমাপ্ত থেকে যাবে। তাই অসমাপ্ত গল্প।
সংগীতশিল্পী ফাইজা জয়ার স্বামী এএফ সৈকত বলেন, আমার ছোটবেলা থেকে ইচ্ছে ছিল পিছিয়ে পরা সংগীত শিল্পীদের এগিয়ে আনা, বিশেষ করে তরুণদের। ‘প্রিয়কণ্ঠ’ শিরোনামে একটি অনলাইন ক্যাম্পেইন করি, ৩ সিজনে ৩০ জন সংগীতশিল্পীকে আমি আবিষ্কার করি, এবং তাদের গান কম্পোজিশন করি। সামনের দিনে এই কাজ আরও বড় আকারে করতে চাই।
সংগীত ভুবনের দুজন মানুষ এক হলেন কীভাবে? জানতে চাইলে এই সংগীত পরিচালক বলেন, অনেক আগে থেকে আমাদের চেনাজানা, পরিচয়, দীর্ঘদিন ভালোবাসার সম্পর্ক ছিল। বিয়ের মাধ্যমে এরপর পরিণয়।
গান কম্পোজ করে তৃপ্তি পাচ্ছেন কিনা? এবং সেগুলো কাদের গান? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কাজটি যেহেতু আমার প্রাণে; সবার গান করেই তৃপ্তি পাই। জনপ্রিয় অনেক গানের মানুষদের গান করা হয়, নাটক সিনেমার জন্যেও করি। বিশেষ করে আমার সহধর্মিণীর গান করতেই আমার ভালো লাগে, তৃপ্তি পাই। তার গানের শ্রোতাপ্রিয়তা ব্যাপক এবং সবাই খুব ইতিবাচকভাবেই দেখে।
নড়াইলে জন্ম নেওয়া সংগীতশিল্পী জয়ার ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল তিনি সংগীতশিল্পী হবেন, আছেন সংগীতশিল্পী হয়ে। আমরণ থাকতে চান গান নিয়েই।
সংগীত পরিচালক এএফ সৈকতের বাবা একজন সেনা সদস্য। তিনিও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগদান করেছিলেন। সংগীতের টানে ছেড়ে দেন চাকরি, এখন বাকিটা জীবন কাটিয়ে দিতে চান সংগীতের এই পেশায়। শুধু গায়ক নয়, নতুনদের ভালো গায়ক হওয়া আগে ভালো মানুষ হওয়ার পরামর্শ এই সংগীত পরিচালকের।
এমএমএফ/জেআইএম