ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিনোদন

রোজায় অন্যকে খাওয়াতে পারলে তৃপ্তি পাই : ববি

বিনোদন প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১২:৫২ পিএম, ২৭ এপ্রিল ২০২১

তারকাদের ধর্ম পালন নিয়ে তাদের ভক্তদের অনেক কৌতূহল। মুসলিম তারকারাও রোজা রাখেন। রোজা নিয়ে শুটিং করেন, ব্যস্ত থাকেন নানা রকম ধর্মীয় প্রার্থনায়। আর সবার মতো তাদেরও আছে রোজা রাখার অনেক মজার স্মৃতি। তাদের ভিড়ে ছোট পর্দার তুমুল জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা ইয়ামিন হক ববি জানালেন রোজা নিয়ে তার দর্শন ও উপলব্ধির কথা।

জাগো নিউজ : প্রথম রোজা রাখা হয়েছিলো কবে, মনে পড়ে?
ববি : অনেক ছোট থেকেই আমি রোজা রাখি। গরমের দিন ছিলো। সারাদিন খেললাম৷ কষ্ট লেগেছিল অনেক। বারবার পানি খেতে চাইছিলাম। আব্বু বলছিলো আরেকটু আরেকটু। এখনই মাগরিবের আজান দিয়ে দেবে৷ প্রথম রোজার ইফতার ছিলো দারুণ আনন্দের৷ কিন্তু রোজা রাখার কষ্টটা আমার আজও মনে আছে।

জাগো নিউজ : শৈশবে ইফতার বা সেহরীর কোনো স্মৃতি মনে পড়ে?
ববি : প্রথম রোজা রেখেছি ক্লাশ ওয়ানের শেষদিকে বা ক্লাশ টুয়ের প্রথম দিকে। কিন্তু সেহরী খেতে উঠতাম আরও আগে থেকেই। তখন কিছু বুঝতাম না৷ আবছা আবছা অনেক কথা মনে পড়ে। সেহরী খাওয়ার জন্য রোজ উঠতাম। যেদিন না উঠতে পারলে বা আমাকে না ডাকলে সকালে উঠে কান্নাকাটি করতাম। আসলে সবার সঙ্গে উঠে সেহরী খাওয়ার মজাটাই ছিলো আলাদা।

ইফতারগুলো অনেক মজা হতো। আজানের অনেক আগে থেকেই রেডি হয়ে খাবারের সামনে বসে যেতাম৷ আম্মা একটার পর একটা খাবার নিয়ে হাজির হতেন৷ আজানের জন্য অপেক্ষা করতাম৷ কখন আজান দেবে৷ অধৈর্য হয়ে পড়তাম। ভিষণ মিস করি ছেলেবেলার রোজার দিনগুলো।

জাগো নিউজ : সেহরী বা ইফতারে আপনার প্রিয় মেন্যু কি?
ববি : আমার খাওয়ার অভ্যাসগুলো আম্মার তৈরি করা৷ সেই ছোটবেলা থেকেই ইফতারে ভাজাপোড়ার সঙ্গে ফল বা শরবত যাই থাকুক না কেন পাতলা খিচুরি খাওয়াতেন আম্মা৷ আজও এটা আমার খুব পছন্দের৷ আম্মা বলতেন এই খিচুরি নাকি পেট ঠান্ডা রাখে৷

আর আব্বার কাছ থেকে একটা ইন্টারেস্টিং খাবার খাওয়া শিখেছি। শুধুমাত্র রোজা এলেই খাওয়া হয়৷ সেটা হলো কাঁচা ছোলা বুট। ছোটবেলা থেকেই খাবারটি আমার ইফতারের সেরা পছন্দ৷ ছোটবেলায় ইফতারে ভাজার জন্য যে বুট ভিজিয়ে রাখা হতো সেখান থেকে কিছু বুট আলাদা রেখে দিতাম। পরে সেটা কাঁচামরিচ, সরিষা তেল, পিঁয়াজ, ধনেপাতা দিয়ে মেখে খেতাম। এখনো খাই। খুব মজা লাগে আমার।

আর সেহরীতে শরীর ঠান্ডা রাখে এমন হেলদি খাবার খাই৷

জাগো নিউজ : ছোটবেলা ও বড়বেলার রোজার মধ্যে কি পার্থক্য পান?
ববি : অনেক৷ ছোটবেলার রোজায় একটা উৎসব আমেজ থাকতো। পড়াশোনার চাপ থাকতো না। আবার রোজা শেষে ঈদ আসবে৷ নতুন জামা৷ অনেক মজা। শৈশবে আনন্দ নিয়ে রোজা রাখতাম৷ প্রায়ই ভেঙে ফেলতাম৷

কিন্তু এখন তো রোজা রাখতেই হয়৷ ভাঙার সুযোগ কোনো নেই৷ মুসলিম হিসেবে এটা দায়িত্ব। ছোটবেলার রোজা ছিলো আনন্দের৷ আর এখন কাজ করে বোধ৷ না খেয়ে থাকার কষ্ট, খাবার নষ্ট করার যে অন্যায় এটা বুঝতে পারি এই রোজার সময়।

সেইসঙ্গে মানুষকে খাওয়ানোর আনন্দটাও পাই এ রমজানে৷ আব্বা বলতেন মানুষকে খাওয়ানোর যে আনন্দ আর কিছুতে তা নেই৷ সেটা রোজা এলে খুব উপলব্ধি করি৷ চেষ্টা করি ইফতারে অন্যদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করতে৷ খাবার বেশি হলে সেগুলো বিলিয়ে দেই৷ অনেক মানুষ না খেয়ে থাকে আমাদের চারপাশে। রোজায় অন্যকে খাওয়াতে পারলে তৃপ্তি পাই৷

জাগো নিউজ : করোনা মহামারীতে আক্রান্ত দুনিয়া৷ তবুও রোজা এলো৷ ঈদও আসবে। এবারের ঈদ নিয়ে কী ভাবছেন?
ববি : আল্লাহ রহম করুন। ভাবি নাই যে এবারেও রোজায় করোনার ভয় আঁকড়ে ধরবে৷ গতবার খুব খারাপ সময় পার করেছি আমরা৷ এবারেও তাই৷ ঘরবন্দী সবাই৷ আল্লাহ সবাইকে মাফ করুন৷ এই করোনা দূর করে স্বাভাবিক জীবনের জন্য দোয়া করছি৷ আতংক কাজ করছে। লকডাউনের মধ্যে দোকান মার্কেট খুলে দেয়া হয়েছে৷ সরকার হয়তো ব্যবসায়ীদের কথা ভেবেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ কিন্তু এ সময়ে মার্কেটে যাওয়াটা ঝুঁকির৷ সবাই সাবধানে থাকুন।

ঈদের সময় লকডাউন না খুললে তো বাসায় বসেই দিন কাটাবো৷ লকডাউন না থাকলে কিছু আত্মীয় স্বজনের মুখ হয়তো দেখা হবে৷ দোয়া চাই সবার কাছে যেন সুস্থ থাকি৷

এলএ/এএসএম