ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিনোদন

৬৩ বছরে অভিনন্দিত রুনা লায়লা

প্রকাশিত: ০৬:২৩ এএম, ১৭ নভেম্বর ২০১৫

আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কণ্ঠশিল্পী রুনা লায়লা। আজ মঙ্গলবার, ১৭ নভেম্বর গানের এই কিংবদন্তির শুভ জন্মদিন। এ দিনে তার জীবনের ৬৩ বছর পূর্ণ হলো। সোমবার দিবাগত রাত থেকেই ভক্ত-অনুরাগীদের শুভেচ্ছা-অীভনন্দনে সিক্ত হয়েছেন তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে তিনি কন্যা তানি লায়লা ও নাতিদের সাথে সময় কাটাতে লন্ডনে রয়েছেন। সেখানে বসেই সবার শুভেচ্ছা আর ভালোবাসার জবাব দিয়েছেন তিনি ফেসবুকের মাধ্যমে। জানিয়েছেন অবিরাম এই ভালোবাসার জন্য কৃতজ্ঞতা।

জাগো নিউজের সাথে ফেসবুকে আলাপকালে সোমবার রাতে রুনা লায়লা জানান, ‘জন্মদিনের আগেই আমার ঢাকায় ফিরে আসার কথা ছিলো। কিন্তু দুই নারি আবদারে থাকতে বাধ্য হয়েছি। ওদের আমি কখনো কিছুতেই না করতে পারি না। আমার বর্তমান পৃথিবীটার সবটা জুড়েই তারা।’

তিনি আরো জানান, ‘মেয়ে তানি, দুই নাতি আর কয়েকজন কাছের বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে ঘরোয়াভাবে জন্মদিন পালন করবো। তবে পার্টি হবে ২২ নভেম্বর। কারণ আমার বড় নাতি জাইনের জন্মদিন ২৪ নভেম্বর। দু’জনের জন্মদিনের অনুষ্ঠান একসঙ্গে উদযাপন করবো ২২ তারিখ।’

এসময় তিনি সবার কাছে নিজের ও তার পরিবারের সদস্যদের সুস্থতা কামনা করে দোয়া চেয়েছেন। সেইসাথে ব্যক্ত করেন আমৃত্যু গান গেয়ে যেতে চান সংগীত জীবনে ৫০ বছর পার করে আসা এই মহান শিল্পী।

বাংলাদেশের মানুষের রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে যে বছর হয়ে গেল তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে দেশ ছাড়ার আন্দোলন; সেই বছরেই জন্ম নিলেন বাংলা গানের নক্ষত্রটি। অর্থাৎ, রুনা লায়লার জন্ম ১৯৫২ সালে, ১৭ নভেম্বর। সিলেটে জন্ম হলেও তিনি বেড়ে ওঠেন লাহোরে। শিল্পী হবার কথা তার ছিলো না। শিল্পী হবেন বলে ওস্তাদ রেখে গান শিখতেন তার বড় বোন। কিন্তু ঘটনাক্রমে রুনাই হয়ে উঠলেন উপমহাদেশের সংগীতের বিস্ময়! মাত্র সাড়ে ১২ বছর বয়সে ১৯৬৪ সালে পাকিস্তানি ছবি ‘জুগনু’র মাধ্যমে সংগীতের ভুবনে তার যাত্রা শুরু হয়। ওই ছবির ‘গুড়িয়াসি মুন্নি মেরি’ তার জীবনের প্রথম গাওয়া গান।

পাঁচ দশকের সংগীত জীবনে লোকজ, পপ, রক, গজল, আধুনিক- সব ধাঁচের গানই গেয়েছেন রুনা। বাংলা, হিন্দি, উর্দু, ইংরেজিসহ ১৮টি ভাষায় তার কণ্ঠে গান শোনা গেছে। এ পর্যন্ত ১৯টি ভাষায় তার গাওয়া গানের সংখ্যা ১০ হাজারেরও বেশি।

বাংলাদেশের ছবিতে রুনা লায়লার গাওয়া প্রথম গান হলো গাজী মাজহারুল আনোয়ারের লেখা ও সুবল দাসের সুরে ‘গানেরই খাতায় স্বরলিপি লিখে’। লাহোরে থাকাকালেই গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছিলেন তিনি। ১৯৭৪ সালে দেশে স্থায়ীভাবে চলে আসার পর প্রথম তিনি গেয়েছেন সত্য সাহার সুরে ‘জীবন সাথী’ ছবিতে। এতে তার সহশিল্পী ছিলেন খন্দকার ফারুক আহমেদ।

বলিউডের বেশ কয়েকটি ছবিতে গান গেয়েছেন রুনা লায়লা। তারমধ্যে ১৯৯০ সালে অমিতাভ বচ্চন অভিনীত ‘অগ্নিপথ’ ছবির ‘আলীবাবা মিল গ্যায়া চল্লিশ চোর সে’ এবং ১৯৮৫ সালে মুক্তি পাওয়া ‘ঘর দুয়ার’ ছবিতে বলিউডের তুুমুল জনপ্রিয় ‘ও মেরা বাবু চেইল চেবিলা’ গানটি উল্লেখযোগ্য।

গানের বাইরে চাষী নজরুল ইসলাম পরিচালিত ‘শিল্পী’ ছবিতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন রুনা লায়লা। এতে তার সহশিল্পী ছিলেন তার স্বামী চিত্রনায়ক আলমগীর।

দীর্ঘ সংগীক জীবনে রুনা লায়লা অর্জন করেছেন নানা পুরস্কার। এসবের মধ্যে রয়েছে দেশ থেকে ছয়বার জাতীয় চলিচ্চত্র পুরস্কার, স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার। রুনা ‘দি রেইন’ (১৯৭৬), ‘যাদুর বাঁশী’ (১৯৭৭), ‘অ্যাকসিডেন্ট’ (১৯৮৯), ‘অন্তরে অন্তরে’ (১৯৯৪), ‘তুমি আসবে বলে’ (২০১২) এবং ‘দেবদাস’ (২০১৩) ছবিগুলোর জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন।

এছাড়াও ভারত থেকে পেয়েছেন সায়গল পুরস্কার। পাকিস্তান থেকে অর্জন করেছেন নিগার, ক্রিটিক্স, গ্র্যাজুয়েটস পুরস্কার সহ জাতীয় সংগীত পরিষদ স্বর্ণপদকসহ দেশে বিদেশের আরো অনেক সম্মাননা ও স্বীকৃতি।

এই শিল্পী নিজেকে নিয়ে গেছেন গিনেজ বুকেও। নব্বইয়ের দশকে মুম্বাইয়ে পাকিস্তানি সুরকার নিসার বাজমির সুরে একদিনে ১০টি করে তিন দিনে ৩০টি গানে কণ্ঠ দিয়ে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম লেখান রুন লায়লা।

উপমহাদেশের সংগীতের এই কিংবদন্তিকে জাগো নিউজের পক্ষ থেকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা। তিনি আরো অনেকদিন আমাদের মাঝে থাকুন গান ও সুরের ইন্দ্রজাল ছড়িয়ে।

এলএ/পিআর