ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিনোদন

আবিদা পারভীনের সুরের মূর্ছনা নিয়েই শেষ হলো উৎসব

প্রকাশিত: ০৯:১১ পিএম, ১৪ নভেম্বর ২০১৫

পাকিস্তানের সুফি গানের সম্রাজ্ঞী আবিদা পারভীনের পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শেষ হলো তিন দিনের আলোচিত-সমালোচিত `ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ফোক ফেস্ট ২০১৫`। `দমাদম মাস্ত কালান্দর` গানের মধ্য দিয়ে আবিদা পারভীন শেষ করেন তার পরিবেশনা। এই শিল্পীর গানের সুরে ঝাঁপ দেয়ার প্রত্যয়ে সন্ধ্যা থেকেই ছিল সুরপিয়াসীদের দীর্ঘ প্রতীক্ষা। মঞ্চ থেকে বিভিন্ন শিল্পীর সুরের নির্যাসে বিমোহিত হলেও শ্রোতাদের মাঝে যেন আরেকটু পাওয়ার প্রত্যাশা।


পরিবেশনা শেষে পরে এই শিল্পীর হাতে উৎসবস্মারক তুলে দেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। রাজধানী ঢাকার আর্মি স্টেডিয়ামে এ আসরের আয়োজক ছিল মাছরাঙা টেলিভিশন ও সান ইভেন্টস। কিংবদন্তি শিল্পীদের পরিবেশনা এত সহজ-সাবলীল ছিল যে, ব্যাকরণ না জেনেও সাধারণ শ্রোতারা এর রসের ছোঁয়া পেয়েছেন।


শেষ দিনে হারিয়ে যাওয়া লোকবাদ্যযন্ত্র একতারা, দোতারা, বায়া, বাঁশি, খমক, খঞ্জনি, মন্দিরার সংমিশ্রনে উৎসবের সমাপনী রাতে মর্ত্যলোকে স্বর্গীয় সুখে হারিয়ে যেতে সঙ্গীতসমজদাররা এসেছিলেন সমুদ্রের রূপ নিয়ে। আসর শুরু করতে সন্ধ্যা ৬টায় রাহুল আনন্দের নেতৃত্বে মঞ্চে আসে বাংলাদেশের জনপ্রিয় গানের দল ‘জলের গান’।


ফিউশনধর্মী গানের এই ব্যান্ড প্রথমেই পরিবেশন করে ‘শুঁয়া যাও যাও গো যাও রে তেপান্তর’ গানটি। তারপর একে একে ‘বকুল ফুল বকুল ফুল সোনা দিয়া হাত কেন বান্ধাইলি, ‘এই পাগলের ভালোবাসাটুকু নিও’, ‘আমি একটা পাতার ছবি আঁকি’ ও দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের বিখ্যাত গান ‘ধনধান্য পুষ্প ভরা আমাদের এই বসুন্ধরা’ গান গেয়ে শ্রোতাদের মুগ্ধ করেন।


এরপর মঞ্চে আসেন আয়ারল্যান্ডের শিল্পী নিয়াভ নি কারার। মঞ্চে এসেই তিনি আগত সঙ্গীত সমজদারদের উদ্দেশে বলেন, সাত হাজার মাইল দূর থেকে আমরা গান শোনাতে এসেছি। বেহালা, অ্যাকুস্টিক গিটার ও ড্রামসের সুরে তারা আইরিশ লোকজ সঙ্গীতের একটি ইন্সট্রুমেন্টাল দিয়ে শুরু করেন। ইংরেজি গানের পাশাপাশি আইরিশ ভাষায়ও গান পরিবেশন করেন তারা। কণ্ঠের যাদুর পাশাপাশি এসময় নৃত্যের তালে তালে দর্শক শ্রোতাদের দোলাতে থাকেন আয়ারল্যান্ডের শিল্পীরা। গানের পর বেহালার সুরের আলোর ঝলকানি দিয়ে মঞ্চ থেকে নামেন বিদেশি এই শিল্পী।


তারপর চলে খানিক আনুষ্ঠানিকতা। সমাপনী বক্তব্য রাখেন শেষ রাতের আসরের প্রধান অতিথি সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর ও বিশেষ অতিথি বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের। স্বাগত বক্তব্য রাখেন আয়োজক প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার অঞ্জন চৌধুরী।

এরপর মঞ্চে আসেন দক্ষিণ ভারতের শিল্পী ইন্ডিয়ান ওশিন। দক্ষিণ ভারতের একটি লোকসঙ্গীত দিয়ে শুরু করে এদেশের সঙ্গীতপ্রিয়দের মানসে দোলা দিয়ে যান। এরপর তিনি পরিবেশন করেন ‘আরে রুক জানে বন্ধ,’ নামের হিন্দি গান। শিল্পীর কণ্ঠের যাদুতে এসময় অনুষ্ঠানস্থলে নাচের ধুম পড়ে যায়।


ধারাবাহিকতায় আসেন ভারতীয় বাউল গানের জনপ্রিয় শিল্পী পার্বতী বাউল। লোকগানে বিশেষ করে লালন ফকিরের ভক্ত এই গায়িকাকে করতালি দিয়ে স্বাগত জানান স্টেডিয়াম ভর্তি সংগীত পিপাসুরা। তিনি গেয়ে শোনান বেশ কিছু ভজন সংগীত, লোক ও সুফি গান।


এরপরই মঞ্চে হাজির হন সমাপনী রাতের সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত শিল্পী পাকিস্তানের বিখ্যাত শিল্পী আবিদা পারভীন। তারপর শেষ পরিবেশনা নিয়ে হাজির হন রাজস্থানের প্রখ্যাত গানের দল দি ম্যাঙ্গানিয়াস ফ্রম হামিরা। ‘নিবুরা নিবুরা’ ও ‘সাধের লাউ’ দিয়ে উৎসব মাতালেও শ্রোতারা বাড়ি ফিরেছেন আবিদার সুরের মূর্ছনা নিয়েই। সেইসাথে নিমন্ত্রণ নিয়ে গেলেন আগামী বছর আবারো লোক গানের টানে মিলিত হবেন বলে।


আসরের প্রথম রাতে বৃহস্পতিবার সঙ্গীত পরিবেশন করেন বাংলাদেশের ফরিদা পারভীন, চন্দনা মজুমদার, কিরণ চন্দ্র রায়, লাবিক কামাল গৌরব, শফি মন্ডল, ভারতের পাপন অ্যান্ড ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি, অর্ক মুখার্জী কালেক্টিভ ও পাকিস্তানের সাঁই জহুর।


দ্বিতীয় রাতের আসর শুক্রবারে সঙ্গীত পরিবেশন করেন বাংলাদেশের বাউল ভজন ক্ষ্যাপা, বারী সিদ্দিকী, আয়েশা জেবীন দিপা, বিউটি খাতুন, দিতি সরকার, মরিয়ম আখতার কণা, মাসুমা সুলতানা সাথী, আব্দুল আলীমের তিন সন্তান আজগর আলীম, জহির আলীম ও নুরজাহান আলীম, মমতাজ, অর্ণব অ্যান্ড ফ্রেন্ডস, ভারতের পবন দাস বাউল এবং ইউনান আর্ট ট্রুপ।


এল/বিএ

আরও পড়ুন