মানুষের ভালোবাসাই আব্বার জন্য বড় পুরস্কার : ফাহমিদা নবী
যে ক’জন শিল্পী আধুনিক বাংলা গানকে সমৃদ্ধ করে গেছেন, তাদের অন্যতম মাহমুদুন্নবী। আজ ২০ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন কিংবদন্তি এই শিল্পী। ১৯৯০ সালের এই দিনে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে গেছেন। আজ তার ৩০তম প্রয়াণ দিবস।
মাহমুদুন্নবীর সুযোগ্য কন্যা ফাহমিদা নবী বাবাকে স্মরণ করছেন শ্রদ্ধায়। তিনি স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘আজ ৩০ বছর আব্বাকে ছাড়া বেঁচে আছি। এটা যে কত বেদনার অনুভূতি তা বাবাহীন সন্তান ছাড়া আর কেউ বুঝবে না। তবে তার কন্যা হিসেবে গর্ব হয় যখন তার চলে যাওয়ার ৩০ বছর পরও লোকে তার গান গাইছে, দেখি। ভালো লাগে এখনো মানুষ যখন বলেন যে, ‘তিনি বড় ভালো মানুষ ছিল’।
শ্রোতা আর মানুষের এই ভালোবাসাটুকুই আব্বার জন্য বড় পুরস্কার বলে মনে করি আমি। সবার কাছে আমার আব্বার জন্য দোয়া চাই।’
ফাহমিদা নবী আরও জানান, আজ রোববার চ্যানেল আইয়ে দুপুর ৩টা ৫ মিনিটে প্রচারিত হবে ‘প্রিয়জনের প্রিয় যত গান’। সেখানে বাবার গাওয়া গান ও বাবাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করবেন তিনি ও তার বোন সামিনা চৌধুরী।
প্রসঙ্গত, মাহমুদুন্নবীর জন্ম ১৯৩৬ সালের ১৬ ডিসেম্বর ভারতের বর্ধমানে। ষাটের দশকে তিনি আধুনিক বাংলা গানে এক ভিন্ন মাত্রা যোগ করেন। অদ্ভূত মোহনীয় সুর আর স্পষ্ট উচ্চারণে শ্রোতাদের মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখতেন তিনি। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি সুরের ভূবনেই বিচরণ করেছিলেন।
‘সুরের ভূবনে আমি আজো পথচারী’ শিরোনামে অসম্ভব জনপ্রিয় একটি গানও রয়েছে তার। ৭০ এর দশকে ‘হারজিৎ’ ছবির এই গান আধুনিক বাংলা গানে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল। এছাড়া ‘গানেরই খাতায় স্বরলিপি লিখে’, ‘আমি সাত সাগর পাড়ি দিয়ে’, ‘আয়নাতে ওই মুখ দেখবে যখন’, ‘তুমি কখন এসে দাঁড়িয়ে আছো আমার অজান্তে’র মত বহু কালজয়ী গান তাকে স্মরণীয় করে রেখেছে এই দেশের সংগীতাঙ্গনে।
১৯৭৭ সালে তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।
১৯৯০ সালের ২০ ডিসেম্বর তিনি পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন। চোখের দেখায় অদেখা হলেও মাহমুদুন্নবীর নাম থেকে গেছে, থেকে যাবে বাংলার গানে গানে।
সংগীত ব্যক্তিত্ব মাহমুদুন্নবীর চার সন্তান। তারা হলেন সামিনা চৌধুরী, ফাহমিদা নবী, পঞ্চম ও অন্তরা। তাদের মধ্যে সামিনা, ফাহমিদা ও পঞ্চম স্বতন্ত্র অবস্থান তৈরি করেছেন সংগীতাঙ্গনে।
এলএ/এমএস