ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিনোদন

সেই বইটি জাহিদ হাসানকে উৎসর্গ করেছিলেন হুমায়ূন আহমেদ

বিনোদন প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১২:৪৫ এএম, ১৩ নভেম্বর ২০২০

‘আমার ক্যারিয়ার হুমায়ূন আহমেদের নাটক বা সিনেমা দিয়ে শুরু হয়নি। কিন্তু উনি প্রথম ‘আজ রবিবার’ নাটক তৈরি করেন। এতে আনিস চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকদের কাছে ব্যাপক পরিচিতি পাই আমি। এরপর তার নাটক ও চলচ্চিত্রে নিয়মিত অভিনেতা হয়ে যাই। এটা আমার সৌভাগ্য’- হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে কাজ করা নিয়ে এভাবেই বললেন নন্দিত অভিনেতা জাহিদ হাসান।

আজ প্রিয় লেখক ও পরিচালকের জন্মদিনে তার বিদেহী আত্মার স্মরণে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আগে উনার জন্মদিনগুলো আসতো উৎসব নিয়ে। ১২ নভেম্বর রাতেই সবাই নুহাশপল্লীতে চলে যেতাম। আড্ডা হতো। বারী সিদ্দিকীর মতো বিখ্যাত শিল্পীদের গান শুনতাম কাছে বসে। হৈচৈ হতো। আর আজকাল উনার জন্মদিন আসে বিষাদ নিয়ে, বেদনায় ভাসিয়ে। দোয়া করি যেখানেই আছেন হুমায়ূন ভাই ভালো আছেন।’

হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা জানিয়ে জাহিদ হাসান বলেন, ‘হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে শ্যুটিং করা মানেই আনন্দ, হৈচৈ, মজায় মজায় সহজভাবে ভালো কাজ করা। অনেক মজা করতাম। আমি তাকে ভাই, বন্ধু এবং বাবার মতো পেয়েছি সবসময়। আমাকে খুব আদর করতেন। শাসনও করেছেন। রাগ করতেন, অভিমান করে বসে থাকতেন। তার সঙ্গে অভিজ্ঞতার কথা বলে শেষ করা যাবে না।’

‘খুব মন খারাপ লাগে, তিনি নেই। আরও কত মজার মজার কাজ এতদিনে আমাদের করা হতো। তার ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ সিনেমা দিয়েই প্রথমবার আমি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছিলাম। হয়তো আরও ভালো কিছু চরিত্রে কাজের সুযোগ হতো তিনি থাকলে। মিস করি খুব। কেমন করে চলে গেলেন! ঢাকা ক্লাবে আমাদের শেষবারের মতো দেখা হলো। কে জানতো, সেটাই হবে আমাদের শেষ দেখা। আর কথা হবে না কোনোদিন’- যোগ করেন জাহিদ।

হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে দারুণ এক স্মৃতির কথা জানালেন জাহিদ হাসান। হুমায়ূন আহমেদ যখনই কোনো বই লিখতেন, বাসায় ডেকে নিতেন জাহিদকে। অটোগ্রাফসহ একটি বই উপহার দিতেন। তেমনি একবার ডাকলেন। বই দিলেন, কিন্তু অটোগ্রাফ দিলেন না। জাহিদ হাসান অটোগ্রাফ চাইলেন। হুমায়ূন আহমেদ ফিরিয়ে দিলেন। বললেন, ‘এ বইয়ে তোমাকে অটোগ্রাফ দেয়ার দরকার নেই।’

অটোগ্রাফহীন সে বইয়ের পাতা উল্টাতে গিয়ে দেখলেন, এ বই তাকেই উৎসর্গ করেছেন হুমায়ূন আহমেদ। চমক দিতে পছন্দ করতেন তিনি। জাহিদ হাসান সেদিন একটু বেশিই চমক পেয়েছিলেন। সে বইয়ের নাম হিমুর দ্বিতীয় প্রহর। সেই উৎসর্গপত্রে হুমায়ূন আহমেদ লিখেছেন- ‘জাহিদ হাসান, প্রিয় মানুষ। মানুষ হিসেবে সে আমাকে মুগ্ধ করেছে, একদিন হয়তো অভিনয় দিয়েও মুগ্ধ করবে। (দ্বিতীয় বাক্য দিয়ে তাকে রাগিয়ে দিলাম, হা হা হা।)’

দীর্ঘদিন হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে কাজ করেছেন জাহিদ হাসান। অনেক কাজই তারা উপহার দিয়েছেন। তার ভিড়ে প্রিয় কিছু কাজ সম্পর্কে জানাতে গিয়ে বলেন, ‘বিটিভির ‘আজ রবিবার’ নাটকে আনিস, ‘সবুজ সাথী’ নাটকে লাঠিধরা পাগলা মফিজের চরিত্র, ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ ছবিতে গাতক মতি, ‘আমার আছে জল’ ছবিতে জামিলসহ হুমায়ূন আহমেদের তৈরি করা অসংখ্য মজার মজার চরিত্রে কাজ করেছি। নিজেকে ধন্য মনে করি যে উনার মতো এমন একজন কিংবদন্তি মানুষের সংস্পর্শে গিয়ে কাজ করতে পেরেছি।’

‘এমন ভাগ্য অনেক অভিনয় শিল্পীরই হয়নি। তিনি ম্যাজিক দেখাতে জানতেন, ডিরেকশন দিতে জানতেন, গান লিখতে জানতেন, হাত দেখতেন, ভালোবাসতে পারতেন। ক্যারিশমাটিক একটি চরিত্র ছিলেন। তার না থাকা বিশাল শূন্যতা দিয়ে গেছে আমাদের সাহিত্য, নাটক-সিনেমায়।’

এলএ/বিএ