মাদককাণ্ডে চার অভিনেত্রীর ক্রেডিট কার্ড বাজেয়াপ্ত
বলিউডে মাদকযোগের জট ছাড়াতে তৎপর ভারতের নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো। ছাড় পাচ্ছেন না অভিনেতা থেকে পরিচালক। ইতোমধ্যেই জেরা করা হয়েছে দীপিকা, সারা, রাকুল, শ্রদ্ধার মতো প্রথম সারির অভিনেত্রীকে।
যদিও, দিনভর জিজ্ঞাসাবাদের পর চার অভিনেত্রীর প্রত্যেকেই দাবি করেছেন, তারা কোনোদিনই মাদক নেননি। তদন্তের স্বার্থে চারজনেরই ফোন পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। এনসিবির তদন্তের জল গড়িয়ে এবার পৌঁছেছে এই নায়িকাদের আর্থিক সঞ্চয় পর্যন্ত।
সূত্রে খবর, এই চার অভিনেত্রীর ক্রেডিট কার্ড বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট স্টেটমেন্টও খতিয়ে দেখবে ভারতের তদন্তকারী এই সংস্থা। ইতোমধ্যেই তাদের ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে টাকার লেনদেন খতিয়ে দেখা হয়েছে। মূলত কোনও মাদক বিক্রেতার সঙ্গে আর্থিক লেনদেন হয়েছে কিনা, তা দেখার জন্যই এই পদক্ষেপ।
সুশান্তের ম্যানেজার জয়া সাহাকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদের সময় তার বয়ান এবং ফোনের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট থেকে বলিউডের আরও নামের খোঁজ পায় এনসিবি। সেখানেই ২০১৭ সালের একটি গ্রুপ চ্যাট উঠে আসে।
ওই চ্যাটে লেখা ‘ডি’ এবং ‘কে’-র সূত্র ধরেই এনসিবি দীপিকা এবং তার ম্যানেজার করিশ্মাকে সমন জারি করে। জেরায় দীপিকা ওই চ্যাটের কথা স্বীকার করলেও বলেন, তিনি নিজে মাদক নেননি। অন্যদিকে, বাকি তিনজনের নাম উঠে আসে রিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময়।
যদিও এনসিবির এই আকস্মিক তৎপরতার মধ্যে রাজনীতির গন্ধ খুঁজে পাচ্ছেন অনেকেই। মনে করা হচ্ছে, জানুয়ারি মাসে সঙ্ঘ পরিবারের বিরুদ্ধে গিয়ে জেএনইউর ছাত্রছাত্রীদের পাশে দাঁড়ানোই কাল হলো দীপিকার। সেই ঘটনার পর থেকেই বিজেপি স্বঘোষিত দীপিকা বিরোধী।
বলা হচ্ছে, তদন্তও ঠিক করে না এগোনয় মানুষকে ভুলিয়ে রাখতে মাদকাসক্তির বিষয়টিকে আরও বড় করে দেখানো হচ্ছে। সামিল করা হয়েছে সারা, শ্রদ্ধা, রাকুলের মতো নামকেও। যদিও এর পর থেকেই শ্রদ্ধার ইনস্টাগ্রাম ফলোয়ারের সংখ্যা আচমকাই ঊর্ধ্বমুখী। বলিউডের মাদকাসক্তিকে ‘ইসু’ করছে নরেন্দ্র মোদী, নীতীশ কুমারের দল?
ইতোমধ্যেই নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরোর প্রধান রাকেশ আস্থানা দিল্লি থেকে মুম্বাই চলে এসেছেন। এনসিবির কর্মকর্তাদের সঙ্গে রোববার গভীর রাতে তিনি বৈঠক করেন বলে জানা যাচ্ছে। এখনও পর্যন্ত যাদের জেরা করা হয়েছে, তাদের ‘ক্লিনচিট’ তকমা না দেওয়ার নির্দেশ জারি করেছেন রাকেশ।
দীপিকার ম্যানেজার করিশ্মা প্রকাশ যে ট্যালেন্ট ম্যানেজমেন্ট এজেন্সিতে কাজ করতেন, সেই ‘কোয়ান ট্যালেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির মালিক মধু মন্টেনাকে ইতোমধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে এনসিবি।
অন্যদিকে কর্ণ জোহরের ‘ঘনিষ্ঠ’ ক্ষিতিজ প্রসাদকে গ্রেফতার করেও টানা জেরা চালানো হচ্ছে। যদিও তাকে এবং কর্ণকে জোর করে ফাঁসানো হচ্ছে বলে দাবি করছেন ক্ষিতিজ।
স্বজনপোষণ, নেপোটিজম পেরিয়ে সুশান্ত মৃত্যু তদন্ত এখন রাজনীতির আঙিনায়। বলিউড আতঙ্কে, কখন কার ডাক পড়ে। মাদকাসক্তির জট ছাড়াতে গিয়ে সুশান্তের জন্য ন্যায়বিচারকে বলি হতে হবে না তো? আশঙ্কায় অভিনেতার পরিবার।
এমআরএম