সর্বোচ্চ আয়ে বিশ্বসেরা যে ১০ সিনেমা
বিংশ শতাব্দীতে এসে হলিউড হয়ে গেছে দুই দলে ভাগ। এ যেন রক্ত-মাংসের মানুষের সাথে ডিসি মার্ভেলের লড়াই। হলিউডের সর্বকালের সেরা বক্স অফিস কাঁপানো সিনেমার দিকে তাকালেই ব্যাপারটি পরিষ্কার হয়ে যায়। তাদের সর্বকালের সর্ব উপার্জিত সিনেমার তালিকায় ডিসি ও মার্ভেলের সুপারহিরোদের রাজত্ব।
প্রেম-ভালোবাসা কিংবা জীবনবোধের চেয়ে সুপারহিরোদের ফ্যান্টাসি ছবিগুলোই দেখতে বেশি পছন্দ করছেন দর্শক। বক্স অফিস অন্তত সেই প্রমাণই দিচ্ছে। হলিউডভিত্তিক বিভিন্ন গণমাধ্যমের সূত্রে পাওয়া বক্সঅফিস কাঁপানো সেরা দশ ছবি নিয়ে এই আয়োজন। বলার অপেক্ষা রাখে না এই ছবিগুলোই বিশ্বে সবচেয়ে বেশি আয়কারী সিনেমা-
ব্লাক প্যান্থার
মার্কিন সুপারহিরো ঘরানার এই সিনেমাটি মুক্তি পায় ২০১৮ সালে। সদ্যপ্রয়াত অভিনেতা চ্যাডউইক বোজম্যান ছাড়াও এই সিনেমায় রয়েছে মাইকেল বি. জর্ডান, লুপিটা ইয়ংও, ড্যানাই গুরিরা, মার্টিন ফ্রিম্যান, ড্যানিয়েল কালুইয়া, লেটিটিয়া রাইট, উইনস্টন ডুক, অ্যাঞ্জেলা ব্যাসেট, ফরেস্ট হুইটেকার এবং অ্যান্ডি। বিশ্বজুড়ে প্রশংসা পাওয়া এই সিনেমা ১.৩৪২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করে নিয়েছে। তালিকায় এই ছবির অবস্থান দশম।
অ্যাভেঞ্জার্স : এজ অব আলট্রন
হলিউডের ইতিহাসের সেরা ছবিগুলো এসেছে এই সিরিজ থেকেই। সিরিজের প্রায় সবগুলো ছবিই বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি ডলার আয় করে নিয়েছে। তারমধ্যে হলিউডের সেরা সফল ছবির তালিকায় নবম অবস্থান দখল করে আছে ‘অ্যাভেঞ্জার্স : এজ অব আলট্রন’ ছবিটি। এটি মার্ভেল কমিকস সুপারহিরোদের টিমের উপর ভিত্তি করে ২০১৫ সালে নির্মিত হয়। চলচ্চিত্রটির চিত্রনাট্য রচনা ও পরিচালনা করেছেন জশ হেডন। ছবিটি ২০১১ সালের ‘দ্য অ্যাভেঞ্জার্স’ ছবির সিক্যুয়াল এবং মার্ভেল সিনেম্যাটিক ইউনিভার্সের একাদশতম চলচ্চিত্র। সিনেমাটি সারা দুনিয়ায় ১.৪০৫ বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা করে।
ফাস্ট এন্ড ফিউরিয়াস ৭
এটি ২০১৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ফাস্ট অ্যান্ড ফিউরিয়াস ৬’ চলচ্চিত্রের পরবর্তী কিস্তি। অর্থাৎ ‘ফাস্ট অ্যান্ড দ্য ফিউরিয়াস’ চলচ্চিত্র সিরিজের সপ্তম ছবি। চলচ্চিত্রটির চিত্রনাট্য লেখেন ক্রিস মর্গান ও পরিচালনা করেন জেমস ওয়ান। ৮ নম্বরে থাকা সিনেমাটি আয় ১.৫১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
মার্ভেলের দ্য অ্যাভেঞ্জার্স
সিনেমাটি ২০১২ সালে মুক্তি পায়। এটি মার্ভেল স্টুডিও দ্বারা প্রযোজিত এবং ওয়াল্ট ডিজনি স্টুডিওর মোশন পিকচার্স এটির প্রদর্শনের সঙ্গে জড়িত ছিলো। শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রে সিনেমাটি আয় করে ৬২৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং পুরো পৃথিবীতে এর আয় ১.৫১৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তালিকায় এই ছবিটিকে ৭ম স্থান দেয়া হয়েছে।
জুরাসিক ওয়ার্ল্ড
১৯৯৩ সালে বিখ্যাত নির্মাতা স্টিভেন স্পিলবার্গের ছবি ‘জুরাসিক পার্ক’ এক নয়া ইতিহাস তৈরি করেছিল। তারপর এই সিরিজের বহু ফিল্ম পেরিয়ে পঞ্চম পর্বে এল জুরাসিক ওয়ার্ল্ড। জনপ্রিয় এই সিনেমাটি ১.৬৭১ বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা করে পুরো পৃথিবীতে।
অ্যাভেঞ্জার্স : ইনফিনিটি ওয়ার
সিনামাটি মার্ভেল কমিক্স সুপারহিরোর দল অ্যাভেঞ্জার্স’র উপর ভিত্তি করে নির্মিত এবং এটি মার্ভেল স্টুডিওজ দ্বারা প্রযোজিত এবং ওয়াল্ট ডিজনি স্টুডিওজ মোশন পিকচার্স দ্বারা পরিবেশিত। পুরো পৃথিবীতে সিনেমাটি আয় করে ২.০৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এটি রয়েছে তালিকার ৫ম স্থানে।
স্টার ওয়ার্স : দ্য ফোর্স অ্যাওয়েকেন্স
এটি ২০১৫ সালে নির্মিত কল্প-বৈজ্ঞানিকভিত্তিক একটি চলচ্চিত্র। ‘স্টার ওয়ার্স’ সিরিজের সপ্তম কিস্তি হিসেবে মুক্তি পেয়েছিলো। সিনেমাটি পরিচালনা, চিত্রনাট্য রচনা এবং সহ-প্রযোজনা করেন জে. জে. অ্যাব্রামস। ২.০৬৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করে সিনেমাটি উঠে এসেছে তালিকার চতুর্থ নম্বরে।
টাইটানিক
ছবির নামটি শুনলেই অনেকে নস্টালজিক হয়ে পড়েন। ১৯৯৭ সালে মুক্তি পেয়েছিলো রোমান্টিক প্রেমের জন্য বিখ্যাত ছবিটি। এটিকে বিয়োগাত্মক প্রেমের গল্পের সিনেমা হিসেবেও দেখেন অনেকে। এর পরিচালক, লেখক ও সহ-প্রযোজক হলেন বিখ্যাত মার্কিন চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব জেমস ক্যামেরন। ছবির মূল দুটি চরিত্রে অভিনয় করে কালজয়ী হয়েছেন লিওনার্দো ডি ক্যাপ্রিও ও কেট উইন্সলেট। ২.১৮৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করে ‘টাইটানিক’ আয়ের হিসেবে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ তৃতীয় সিনেমা হিসেবে রাজত্ব করছে।
অ্যাভাটার
জেমস ক্যামেরনেরই আরেকটি অনবদ্য সৃষ্টি। ২০০৯ সালে মুক্তি পাওয়া একটি বিজ্ঞানভিত্তিক কল্পকাহিনীর সিনেমা এটি। মূল চরিত্রগুলোতে অভিনয় করেছেন স্যাম ওর্থিংটন, জোয়ি সালডানা, স্টিফেন ল্যাং, মিচেলে রড্রিগেজ। সিনেমাটি পুরো পৃথিবীতে ব্যবসা করেছে ২.৭৮৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
অ্যাভেঞ্জার্স : এন্ডগেম
‘অ্যাভেঞ্জার্স’ সিরিজের শেষ কিস্তি। এ সিরিজের প্রায় সব ছবিগুলোই ধুমধাম ব্যবসা করেছে। অনেকগুলো ছবি সেরা ব্যবসাসফল সিনেমা হিসেবেও জায়গা করে নিয়েছে। আর ২০১৯ সালে মুক্তি পাওয়া শেষ সিনেমাটি তো দুনিয়া কাঁপিয়ে দিয়েছে। এটি মুক্তির প্রথম দিন থেকেই পুরো পৃথিবীতে তৈরি করেছিল অন্যরকম উত্তাপ। বিশ্বজুড়ে হাজার হাজার থিয়েটারে প্রদর্শিত হওয়া এই ছবি ২.৭৯০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করে অল্প সময়ের মধ্যেই আয়ের বিবেচনায় প্রথম স্থান দখল করে নিয়েছে।
এলএ/এমআরএম