ঈদে দেখা যাবে বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়াদের যুদ্ধ
ঢাকা শহরের মানুষদের মূলত দুই ভাগে ভাগ করা যায়। একভাগ হলো ঢাকা শহরের স্থানীয় বাসিন্দা। যাদের বাড়িওয়ালা বলা হয়। দুইয়ে আছে যারা জীবিকার তাগিদে ঢাকা শহরে বাস করে বিভিন্ন জায়গা থেকে এসে। অর্থাৎ ভাড়াটিয়া। এই দুই শ্রেণির স্নায়ুযুদ্ধ নিয়ে কত কথাই না শোনা যায়। বাড়িওয়ালা এবং ভাড়াটিয়ার মধ্যে মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ চলে প্রতিনিয়ত। সেই যুদ্ধ নিয়েই নির্মিত নাটক দেখা যাবে আসছে কোরবানি ঈদে। নাটকের নাম ‘লোকাল বয় ভার্সেস বিউটি কুইন’।
সম্প্রতি ঢাকার বিভিন্ন লোকেশনে শুটিং শেষ হলো এ নাটকের। মো. সাইফুর রহমান কাজলের রচনায় এটি নির্মাণ করেছেন সাখওয়াৎ মানিক। এখানে নাম ভূমিকার দুটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন মিশু সাব্বির ও হিমি। অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন শিরিন আলম, সানিতা, হোসাইন সাঈদী প্রমুখ।
পরিচালক জানান, এ গল্পের নায়কের নাম তীব্র। নামে শুধু তীব্র নয়, কাজেও অত্যন্ত তীব্র। সে একজন বাড়িওয়ালার ছেলে। বলতে গেলে হবু বাড়িওয়ালা। সবকিছুতে একটা স্থানীয় মেজাজ তার মধ্যে কাজ করে।ছোটবেলা থেকে বাড়িওয়ালারা ভাড়াটিয়াদের থেকে বেশি সম্মানের অধিকারী হয়, রাজকীয় ভাবের অধিকারী হয় এই মানসিকতা নিয়েই সে বড় হয়েছে। ভাড়াটিয়াদের সাথে স্বাভাবিক ভাবে মেশা যাবে না, তাদেরকে সবসময় একটা শাসনের মধ্যে রাখতে হবে। স্থানীয় লোক হিসেবে তারাই শুধু বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবে এটা তীব্রর একটা ধারণাগত অভ্যাস।
অন্যদিকে গল্পের নায়িকার নাম মীরা। তীব্রদের বাসায় ভাড়াটিয়া হিসেবে নতুন এসেছে। এই এলাকার স্থানীয়দের যে একটা অলিখিত নিয়ম আছে সেটা মীরার জানা নেই। যেমন ভাড়াটিয়াদের যখন-তখন ছাদে ওঠা যায় না, উঠতে-বসতে বাড়িওয়ালাদেরকে সালাম দিতে হয়, স্থানীয় ছেলেমেয়েরা যেমন খুশি তেমনভাবে চলাফেরা করতে পারলেও ভাড়াটিয়াদের ছেলেমেয়েরা তা পারে না; এইসব। কিন্তু এসব নিয়মের তোয়াক্কা করে না মীরা।
এ নিয়ে তীব্র এবং মীরার মধ্যে টম এন্ড জেরির সম্পর্ক তৈরি হয়। তীব্র গায়ের জোর খাটিয়ে একের পর এক মীরার উপরে প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করে। আর মীরা বুদ্ধি দিয়ে একের পর এক তীব্রকে পরাজিত করে। এভাবে গল্পটা এগিয়ে যায়। একটা সময় ঘটনা চূড়ান্ত নাটকীয়তায় মোড় নেয়। পুরো নাটকের রহস্যের জট খুলতে শেষ দৃশ্য পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়।
অভিনেতা মিশু সাব্বির এ নাটক নিয়ে জাগো নিউজকে বলেন, ‘এ নাটকে সুন্দর একটা বার্তা দেয়া হয়েছে। গায়ের জোরে মানুষ বড় হতে পারে না। বুদ্ধি ও যুক্তির কাছে এক সময় মানুষকে মাথা নত করতে হয়। মানুষ মানুষই। মহানুভতার কাছে এক সময় মানুষকে নতি স্বীকার করতেই হয়। এমন অসাধারণ একটা গল্পে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে লকডাউনের পরে অভিনয়ে ফিরলাম ভাবতে ভালো লাগছে। আশা করছি দর্শক উপভোগ করবেন এ নাটক।’
গল্প প্রসঙ্গে হিমি বলেন, ‘পুরো নাটকটা আমাদের বাস্তব জীবনে ঘটে যাওয়া কিছু খন্ড খন্ড ঘটনার প্রতিফলন। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সবার সহযোগিতায় কাজটা শেষ করতে পেরেছি আমরা। গল্পটা এতই ভালো ছিল যে সবাই গল্পের মধ্যে আমরা প্রবেশ করে গিয়েছিলাম।’
পরিচালক মানিক নিশ্চিত করলেন আগামী কোরবানি ঈদ উপলক্ষে নাটকটি প্রচার হবে বেসরকারি কোনো স্যাটেলাইট চ্যানেলে। ইউটিউবের কোনো চ্যানেলেও এটি ঈদ উপলক্ষে মুক্তি পেতে পারে।
এলএ/এমএস