এখন শুধু অভিনয় করে পেট ভরবে না : মুনমুন
নব্বই দশকের শেষদিকে রুপালি পর্দায় হাজির হন চিত্রনায়িকা মুনমুন। তিনি 'অ্যাকশন হিরোইন' নামে জনপ্রিয়তা পান।
দীর্ঘ ২২ বছরের ক্যারিয়ারে নব্বইটিরও বেশি সিনেমায় তিনি অভিনয় করেছেন।বাংলাদেশে তার সমসাময়িক প্রায় সকল জনপ্রিয় নায়কদের সাথে স্ক্রিন শেয়ার করছেন।মাঝখানে সিনেমায় ছিলেন না। সম্প্রতি অনিয়মিতভাবে ফিরেছেন পর্দায়।
এই মুহূর্তে তিনটি ছবির কাজ করছেন। যদিও করোনার কারণে মুক্তি ও শুটিং পিছিয়েছে। তার বর্তমান অবস্থা ও সমসামিয়ক ব্যস্ততা নিয়ে কথা বলেছেন জাগো নিউজের সাথে। লিখেছেন অরণ্য শোয়েব-
জাগো নিউজ : ঈদ কেমন কাটলো ?
মুনমুন : এবারের ঈদ তো ঘরবন্দি হয়েই কাটলো। আমিও খুব একটা বাইরে যাই না। এই ঈদ বাসাতেই কাটলো। পরিবার ও বাচ্চাদের সাথে দুষ্টমি করে সময় গেল। ভাইয়ের পরিবার ছিল আমাদের বিল্ডিংয়ে। সবাই মিলেই ঈদ করেছি।
জাগো নিউজ : দীর্ঘ অবসরে ব্যস্ততা কি নিয়ে ?
মুনমুন : আসলে এমন অভিজ্ঞতা আমার আগেও আছে। প্রায় সাড়ে তিন বছর আমি ঘরে নিজেকে বন্দি রেখেছিলাম। যার অভ্যাস আছে তার কাছে এই জীবনটা খুব ইজি। তাই সময়টা আমার কাছে খুব সহজেই কেটেছে। কারণ এর চেয়ে কঠিন সময় আমি পার করে আসছি।
আর ব্যস্ততা বলতে পরিবারকে সময় দিচ্ছি, ঘর পরিষ্কার করছি। বাচ্চাদের সময় দিচ্ছি, সিনেমা দেখছি। তবে টেনশন হয়। করোনায় যেন আমাদের দেশ ও দেশের মানুষের কিছু না হয়। আল্লাহ সহায় হোক।
জাগো নিউজ : সিনেমার শুটিং প্রস্তুতি চলছে এই পরিস্থিতে। আপনি শুটিং করবেন ?
মুনমুন : আমি এই মুহূর্তে কোনো শুটিং করবো না।আমার মনে হচ্ছে দেশের অবস্থা আরো কঠিন হতে পারে। আবার জানি না ভালোও হতে পারে। এটা সৃষ্টিকর্তা ভালো জানেন। খুব সংকটের এই সময়টা।
তাই এ মুহূর্তে শুটিং করা বোকামি। কারণ সিনেমার শুটিং একজন করতে পারে না। অনেক মানুষের সমাগম হবেই। সামাজিক দূরত্ব মেনে কাজ করাটা কঠিন হয়ে যাবে। আর আমাদের তো মাস্ক পরে শুটিং করা সম্ভব হবে না। মাস্ক খুলতেই হবে।
জাগো নিউজ : এই অবস্থা দীর্ঘায়িত হলে কোনো পরিকল্পনা কি ?
মুনমুন : দেশের যা অবস্থা তাতে তো পরিকল্পনা মাথায় রাখবে হবে। আমার মনে হয় একমুখী চিন্তা করলে হবে না।
এখন শুধু অভিনয় করে পেট ভরবে না। শিল্পীদের আরো একটি পার্সোনাল প্রফেশন রাখতে হবে। যেমন ছোট ব্যবসা বা ইন্টারনেটের সাহায্যে কোনো অনলাইন প্লাটফর্ম কাজ করতে হবে।
শুধু অভিনয় করে খাবো এই চিন্তাটা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলতে হবে।
জাগো নিউজ : আপনার অভিনীত অসমাপ্ত সিনেমাগুলোর ভবিষৎ কি ?
মুনমুন : সিনেমা হল এখন বন্ধ। করোনা চলে যাওয়ার পরে হয়তো খুলবে সঠিক জানি না।আমার তিনটি ছবির কাজই শেষের পথে। হয়তো দু একটা দিন শুটিং করলে শেষ হয়ে যাবে। আর এই করোনা আজীবন থাকবে কিনা জানি না। তবে হলে বসে ছবি দেখা আর ঘরে বসে অনলাইনে ছবি দেখার সাথে অনেক ফারাক।তবে হ্যাঁ, বিকল্প পদ্ধতি তো মাথায় রাখতেই হবে।
জাগো নিউজ : সিনেমার শুটিং বন্ধ থাকলে বিকল্প কোনো আয়ের পথ ভাবছেন কি?
মুনমুন : অবশ্যই আমি অন্য কোনো আয়ের পথ বেছে নেবো। সিনেমাই কি শুধু আমার পরিচয়? আমি সিনেমার অভিনেত্রী দেখে কি সারাজীবন অভিনয়ের কথা মাথায় রাখতে হবে? এটা খুব খারাপ। আমার সব কাজে নিজেকে অভ্যস্ত রাখতে হবে। যারা একমুখী চিন্তা করে তারা হেরে যায়। আর যারা নানামুখী কাজ করে নিজেকে গড়ে তোলে তারাই জীবনে হতাশাগ্রস্ত হয় না। আমিও কিন্তু ফিল্ম ছেড়ে অনেকদিন বেকার ছিলাম। তারপর কিন্তু আবারও ফিরেছি। ফিল্ম ছাড়াও সংস্কৃতির আরও শাখা আছে সেই শাখাগুলো কিন্তু আমাকে স্বাগত জানিয়েছে। আমিও স্টেজ শো করেছি।
জাগো নিউজ স্পেশাল : শেষ দুটো প্রশ্নের উত্তর চাই।
১/ এই প্রজন্মের কোনো নায়ক নায়িকাকে ভালো লাগে ?
উত্তর : অনেককেই তো ভালো লাগে। এই সময়ে বাপ্পি আর পরীমনিকে ভালো লাগে।
২/ হলে দেখা শেষ ছবিটি কি ছিল ?
উত্তর : আয়নাবাজি।
এলএ/এমএবি/এমকেএইচ