ব্যাংককের হাসপাতালে কাটছে আলাউদ্দিন আলীর জন্মদিন
বাংলাদেশের সংগীতে জীবন্ত কিংবদন্তি আলাউদ্দিন আলী। একাধারে তিনি গীতিকার, সুরকার ও সংগীত পরিচালক। গত ৬ অক্টোবর থেকে ব্যাংককের স্যামিটিভেজ সুকুমভিত হাসপাতালে ভর্তি আছেন। ক্যান্সারে ভুগছেন এই সঙ্গীতজ্ঞ।
উন্নত চিকিৎসার জন্য এই হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। এখনো সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার সঙ্গে আছেন স্ত্রী ফারজানা মিমি আর ছোট মেয়ে আদ্রিতা আলাউদ্দিন রাজকন্যা। আজ মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর তার ৬৭তম জন্মদিন।
জীবনের বিশেস এই দিনটেতে হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছেন আলাউদ্দিন আলী। এদিকে অসংখ্য ভক্ত ও শোভাকাঙ্খিরা জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে চলেছেন তাকে। জাগো নিউজের পক্ষ থেকেও রইল অভিনন্দন।
আলাউদ্দিন আলীর পরিবারিক সূত্রে জানা গেছে, আগের চেয়ে এখন কিছুটা ভালো আছেন এই গুণী মানুষটি। ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন। সবকিছু ঠিক থাকলে নতুন বছরের জানুয়ারি মাসে দেশে ফিরবেন আলাউদ্দিন আলী।
১৯৫২ সালের ২৪শে ডিসেম্বর মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ি থানার বাশবাড়ী গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত সাংস্কৃতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন আলাউদ্দিন আলী। তার পিতা ওস্তাদ জাবেদ আলী ও ছোট চাচা সাদেক আলীর কাছে প্রথম সংগীতে শিক্ষা নেন।
ওস্তাদ সাদেক আলী তাকে বেহালায় দীক্ষা দেন। এরপর বিভিন্ন চলচ্চিত্রে বেহালা বাজাতে গিয়ে সংগীত পরিচালনার উপর আগ্রহ সৃষ্টি হয় এই সংগীত পরিচালকের। ১৯৭২ সালে দেশাত্মবোধক গান ‘ও আমার বাংলা মা’ গানের মাধ্যমে জীবনে প্রথম সংগীত পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটে তার।
তারপর বাংলাদেশ টেলিভিশনে নিয়মিত কাজ করলে একই বছর ‘সন্ধিক্ষণ’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে প্রথম সিনেমাতে সংগীত পরিচালনা শুরু করেন তিনি। এর আগে ১৯৬৮ সালের দিকে তিনি আলতাফ মাহমুদের সহযোগী হিসেবে যন্ত্রসংগীত শিল্পী হয়ে কাজ করেন। এরপর প্রখ্যাত সুরকার আনোয়ার পারভেজসহ বিভিন্ন সুরকারের সহযোগী হিসেবেও কাজ করেছেন।
আলাউদ্দিন আলী ১৯৭৫ সালে সংগীত পরিচালনা করে বেশ প্রশংসিত হন। তিনি খ্যাতিমান পরিচালক গৌতম ঘোষ পরিচালিত ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ চলচ্চিত্রে সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন। এছাড়াও তিনি গোলাপী এখন ট্রেনে (১৯৭৯), সুন্দরী (১৯৮০), কসাই এবং যোগাযোগ চলচ্চিত্রের জন্য সংগীত পরিচালনা করেছেন।
সব মিলিয়ে প্রায় ৩০০টিরও অধিক চলচ্চিত্রে সংগীত পরিচালক হিসেবে ৭ বার এবং শ্রেষ্ঠ গীতিকার হিসেবে ১ বারসহ মোট ৮ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছেন তিনি। এছাড়াও দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ভূষিত হয়েছেন নানান সম্মাননা ও স্বীকৃতিতে।
উল্লেখ্য, কয়েক বছর থেকে নানা রোগে ভুগছেন আলাউদ্দিন আলী। চলতি বছর ২২ জানুয়ারি গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় মহাখালীর আয়েশা মেমোরিয়াল হসপিটালে আইসিইউতে ভর্তি হন । এরপর তার অবস্থার অবনতি হলে, টানা ২৬ দিন লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।
গত ১৭ ফেব্রুয়ারি আলাউদ্দিন আলীকে বিশেষ কেবিনে স্থানান্তর করা হয়। সাভারের সিআরপি হাসপাতালে ছিলেন প্রায় পাঁচ মাস।এরপর বাসায় ফিরেছিলেন তিনি। আবারও অসুস্থ হওয়ায় বিদেশ পাড়ি দিতে হয়েছে তাকে। তিনি যেনো সুস্থ হয়ে শিগগিরই দেশে ফিরে আসেন। সবার কাছে দোয়া চেয়েছে তার পরিবার।
এমএবি/পিআর