সিনেমায় পরিবারতন্ত্র : তারকার ঘরেই তারকা জন্মাচ্ছে বলিউডে
রাজার ছেলে রাজা হয়। পুরনো প্রবাদ। এখন তারকার ছেলেমেয়েরা তারকা হচ্ছে। এই ভারতীয় উপমহাদেশে শোবিজে পরিবারতন্ত্র একটি বহুল প্রচলিত প্রথা। যার শুরুটা বলা চলে বলিউডই করেছিলো।
বোম্বে টকিজ থেকে যে বলিউডের উত্থান সেখানে দিনে দিনে বেশ কিছু পরিবার প্রভাব বিস্তার করে নিয়েছে। তারমধ্যে রাজত্বটা কাপুর পরিবারের হাতে। বলিউডে কাপুর পরিবারকে অন্যরকম শ্রদ্ধার চোখে দেখা হয়। সেই ১৯২৭ সাল থেকে আজ অবধি প্রায় নয়টি দশক ধরে এই পরিবার বলিউড শাসন করে চলেছে।
পৃথ্বীরাজ কাপুর ছিলেন ভারতীয় থিয়েটার এবং হিন্দি সিনেমা শিল্পের অগ্রদূত। তিনি হিন্দি চলচ্চিত্রের নির্বাক যুগে অভিনয়ের মাধ্যমে তার কর্মজীবন শুরু করেছিলেন। এছাড়াও তিনি ভারতীয় গণনাট্য সংঘের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং ১৯৪৪ সালে মুম্বাই অঞ্চলের চলমান থিয়েটার কোম্পানি পৃথ্বী থিয়েটার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
পৃথ্বীরাজ কাপুরের তিন ছেলে রাজ কাপুর, শাম্মী কাপুর ও শশী কাপুর তিনজনই ছিলেন তুখোড় অভিনেতা। এর পরের প্রজন্ম রাজকাপুরের ছেলে রণধীর কাপুর ও ঋষি কাপুর সত্তর-আশির দশকে বলিউড মাতিয়েছেন। পরে বলিউডে এসেছেন রণধীর কাপুরের মেয়ে কারিশমা কাপুর। নব্বই দশকটা ছিলো তার।
দাদা, বাবা ও বোনের পথ ধরে নতুন প্রজন্মের তারকা হিসেবে কাপুর বাড়ি থেকে নাম করেছেন রণধীর কাপুরের ছোট মেয়ে কারিনা কাপুর ও ঋষি কাপুরের ছেলে রণবীর কাপুর। তাদের পরবর্তী প্রজন্মও যে আসবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
আরেকটি কাপুর পরিবারেরও যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে বলিউডে। যেখানে সবচেয়ে বড় তারকার নাম অনিল কাপুর। ১৯৭৯ সাল থেকে তিনি বলিউডে বিচরণ করছেন। ১৯৮০ সাল থেকে নায়ক হিসেবে তার উত্থান। তার বড় ভাই বনি কাপুর বলিউডের পুরনো প্রযোজক। ১৯৮০ সাল থেকে তিনি সিনেমা নির্মাণে যুক্ত। অনিল-বনির আরেক ভাই সঞ্জয় কাপুরও নায়ক হিসেবে বেশ কিছু সিনেমায় কাজ করেছেন।
কাপুর বাড়ির গ্ল্যামার বাড়িয়েছেন শ্রীদেবী। যিনি ছিলেন বনি কাপুরের স্ত্রী। তাদের কন্যা জাহ্নবী কাপুরও নতুন প্রজন্মের তারকা বনে গিয়েছেন। এই বাড়ি থেকে আরও সিনেমায় এসেছেন বনির প্রথম স্ত্রীর সন্তান অর্জুন কাপুর, অনিল কাপুরের মেয়ে সোনম কাপুর।
আরেকটি কাপুর পরিবারের সদস্য শহীদ কাপুর। তার বাবা পঙ্কজ কপুর ছিলেন বলিউডের জনপ্রিয় একজন অভিনেতা। শহীদের মা অভিনেত্রী নীলিমা আজিম। সর্বশেষ শহীদের সৎ ভাই ঈষাণ কট্টর শ্রীদেবীর মেয়ে জাহ্নবীর বিপরীতে নায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন।
আরেক কাপুর পরিবারের সদস্য জিতেন্দ্র কাপুর। তার পুত্র তুষার কাপুর বেশ কিছু জনপ্রিয় ছবির নায়ক। তবে তার মেয়ে একতা কাপুর অনেক বেশি পরিচিত ও প্রভাববিস্তারকারী একজন পরিচালক ও প্রযোজক।
এছাড়াও সিনেমার চিত্রনাট্যকার সেলিম খান ষাট দশক থেকে বলিউডের সঙ্গে যুক্ত। তার দ্বিতীয় স্ত্রী বলিউডের অনিন্দ্য সুন্দরী হেলেন। সেলিম খানের পর তার পুত্র সালমান খান, আরবাজ খান, সোহেল খানেরাও বলিউডের সঙ্গে জড়িয়ে আছেন বেশ প্রভাব বিস্তার করে।
বলিউডে প্রভাব রাখা আরেক পরিবার অমিতাভ বচ্চনের। ষাট দশকে নায়ক হিসেবে যাত্রা করা এই অভিনেতার স্ত্রী জয়া বচ্চনও একজন নন্দিত অভিনেত্রী। শোলে ও সিলসিলার মতো ছবির নায়িকা জয়া। প্রশংসিত হয়েছেন বলিউডের ইতিহাসে অন্যতম সফল সিনেমা ‘কাভি খুশি কাভি গাম’ ছবিতে শাহরুখ-হৃত্বিকের মায়ের চরিত্রে।
বচ্চন বাড়ির পরবর্তী প্রজন্ম অভিষেক বচ্চন। তিনিও অভিনেতা হিসেবে সমাদৃত হয়েছেন। তবে বচ্চন বাড়ির ঐশ্বর্য বাড়িয়েছেন ঐশ্বরিয়া রাই। তিনি অভিষেকের স্ত্রী।
বলিউডের প্রতি সবসময়ই রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত পরিবারের সদস্যদের আগ্রহ দেখা গেছে। সেই সুবাদে অনেক পরিবারের নাম জড়িয়েছে বলিউডে। যেখানে সবার আগে উল্লেখ্য পতৌদির নবাব বাড়ি। নবাব মনসুর আলি খান পতৌদি ছিলেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক। তিনি প্রেমে পড়েন সত্তর দশকের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুরের। ভালোবেসে বিয়ে করা এই দম্পতির তিনটি প্রজন্ম বলিউডের সঙ্গে যুক্ত।
যার শুরুটা নবাববাড়ির বউ শর্মিলা ঠাকুরকে দিয়ে। এরপর শর্মিলার পুত্র সাঈফ আলি খান ও কন্যা সোহা আলি খানও বলিউডে নাম লিখিয়েছেন। সোহা তেমন সাফল্য না পেলেও সাঈফ আলী খান তারকাখ্যাতি পেয়েছেন। এদিকে অভিনেত্রী কারিনা কাপুর এই পরিবারে যুক্ত হয়েছেন সাঈফের স্ত্রী হিসেবে।
নবাব পরিবারের তৃতীয় প্রজন্ম হিসেবে সাঈফের বড় মেয়ে সারা আলি খান সিনেমায় নাম লিখিয়েছেন। এরইমধ্যে বর্তমান প্রজন্মের একজন জনপ্রিয় অভিনেত্রী হিসেবে নিজের নাম প্রতিষ্ঠিত করেছেন তিনি।
অভিনেতা আমির খানের পরিবারও বংশ পরম্পরায় বলিউডে যুক্ত। আমিরের বাবা তাহির খান ছিলেন একজন চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিচালক। সেই সূত্রে মাত্র আট বছর বয়সে শিশুশিল্পী হিসেবে সিনেমায় নাম লেখান আমির। এরপর নব্বই দশকের শুরু থেকেই তিনি নায়ক হিসেবে কাজ করছেন।
তার প্রথম স্ত্রী রীনা দত্ত কিছু ছবিতে ছোট চরিত্রে অভিনয় করেছেন। দ্বিতীয় স্ত্রী কিরন রাও সিনেমার পরিচালক ও প্রযোজক হিসেবে কাজ করেছেন। আমির খানের পরবর্তী প্রজন্ম হিসেবে তার ভাগ্নে ইমরান সিনেমায় আসেন।
তবে বলিউডে আরেকটি প্রভাব বিস্তার করা পরিবার হলো ভাট পরিবার। যার শুরুটা ষাট দশকে প্রযোজক নানাভাই ভাটের হাত ধরে। এরপর পরিচালক ও প্রযোজক হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটে তার পুত্র মহেশ ভাটের। যিনি বলিউডের ইতিহাসে অত্যন্ত জনপ্রিয় একজন ব্যক্তিত্ব। তার স্ত্রী সোনি রাজদানও একজন বিখ্যাত অভিনেত্রী।
মহেশের প্ররের প্রজন্ম শুরু হয় তার কন্যা অভিনেত্রী পূজা ভাটকে দিয়ে। এরপর ভাট পরিবার থেকে অভিনয়ে এসেছেন অনেক অভিনেতা-অভিনেত্রী ও প্রযোজক। তাদের মধ্যে তারকাখ্যাতি পেয়েছেন মহেশ ভাটের মেয়ে আলিয়া ভাট ও ভাগ্নে ইমরান হাশমি।
বলিউডে প্রভাব বিস্তার করা আরেকটি পরিবার হলো মুখার্জিদের। তিন প্রজন্ম ধরে বলিউডের সঙ্গে জড়িয়ে আছে এ পরিবার। অর্থাৎ এখানেও তারকার ঘরে তারকার জন্ম হয়েছে। অনেকেই হয়তো ভাবছেন এটা অভিনেত্রী রানী মুখার্জির পরিবার। কিন্তু মোটেও তা নয়। এটি নন্দিত অভিনেত্রী কাজলের পরিবার।
তবে এই পরিবার কিন্তু শুরুতে মুখার্জি ছিলো না। কাজলের মা তনুজা যখন বাঙালি পরিচালক শমু মুখার্জিকে বিয়ে করলেন তখন থেকেই এ পরিচয়ের শুরু। এরপর থেকে বলিউডে পরিবার নিয়ে পরিচয় দিতে গেলে কাজলের পরিবারকে মুখার্জিদের বাড়ি বলেই ডাকা হয়।
শুরুতে কাজলের নানি শোভনা ছিলেন মারাঠি পরিবারের ‘সমর্থ’ বাড়ির বউ। সেজন্য অনেকে এই বাড়িকে ‘ মুখোপাধ্যায়-সমর্থ’দের বাড়ি বলেও অভিহিত করে।
কাজলের নানি শোভনা মুম্বাইয়ে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ভারতীয় চলচ্চিত্র অভিনেত্রী। ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতের শুরুর দিককার সবাক চলচ্চিত্রের মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৫০-এর দশক পর্যন্ত শীর্ষস্থানীয় ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন শোভনা সমর্থ।
মারাঠি চলচ্চিত্রের মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। ১৯৩৫ সালে ‘নিগাহেন নফরাত’ নামের হিন্দি চলচ্চিত্রে প্রথমবারের মতো অংশগ্রহণ করেন। ১৯৪৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘রাম রাজ্য’ চলচ্চিত্রে সীতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে স্মরণীয় হয়ে আছেন তিনি। তার স্বামী কুমারসেন সমর্থ ছিলেন একজন হিন্দি কবি ও সিনেমার পরিচালক।
শোভনা-কুমারসেন দম্পতির পর বলিউডে আসেন তাদের দুই কন্যা নূতন ও তনুজা। দুজনই নায়িকা হিসেবে তারকাখ্যাতি পান। নূতনের ছেলে মোহনিশ বেহাল একজন অভিনেতা। টিভি ও সিনেমায় তিনি অভিনয় করে তেমন পরিচিতি না পেলেও অভিনেত্রী তনুজার মেয়ে কাজল কিন্তু ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে অন্যতম সফল একজন নায়িকা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। কাজলের স্বামী অজয় দেবগণও বলিউডের বিখ্যাত একজন অভিনেতা ও প্রযোজক।
দুই প্রজন্ম ধরে বলিউডে যুক্ত রোশন পরিবার। যেখানে রাকেশ রোশন একজন পরিচালক ও প্রযোজক হিসেবে বিখ্যাত। তার পুত্র হৃত্বিক রোশন একজন নন্দিত অভিনেতা। একইভাবে সত্তর দশকের জনপ্রিয় নায়ক শ্রত্রুগ্ন সিনহার মেয়ে সোনাক্ষি সিনহা, কমল হাসানের মেয়ে শ্রুতি হাসানরা তারকাখ্যাতি পেয়েছেন বাবার তৈরি করা পথ ধরে। সোনাক্ষির মা পুনম সিনহা ও শ্রতির মা সারিকা হাসান; এই দুজনও অভিনেত্রী।
তাদের মতো অভিনেতা ফারদীন খানও বাবার তারকাখ্যাতির সূত্রে বলিউডে আসেন। ফারদীনের বাবা ফিরোজ খান ছিলেন বলিউডের বেশ নামজাদা অভিনেতা। অভিনেতা অক্ষয় খান্নাকে এখন আর অভিনয় করতে দেখা যায় না খুব একটা। ‘তাল’ সিনেমাখ্যাত এই অভিনেতাও জন্মেছেন বহু সুপারহিট সিনেমার নায়ক বিনোদ খান্নার ঘরে। বাবার মতোই অক্ষয়ও বেশ কিছু হিট সিনেমা উপহার দিয়েছেন বলিউডকে।
আরেক শক্তিমান অভিনেতা সঞ্জয় দত্তও তারকা হয়েছেন তারকাসমৃদ্ধ পরিবারের সদস্য হিসেবে। সঞ্জয়ের বাবা সুনীল বলিউডের ষাট দশকের জনপ্রিয় একজন নায়ক ছিলেন। সঞ্জয়ের মা নার্গিসকে বলিউডের ইতিহাসে অন্যতম সেরা অভিনেত্রী হিসেবে গণ্য করা হয়।
অভিনেতা গোবিন্দও বাবা মায়ের সূত্রে বলিউডে আসেন। বাবা অরুন আহুজা ১৯৩৭ সালে ‘এক হি রাস্তা’ সিনেমায় অভিনয় করে ক্যারিয়ার শুরু করেন। এরপর ১৯৪০ সালে মেহবুব খানের ‘ওরাত’ সিনেমা দিয়ে তিনি পরিচিতি লাভ করেন। গোবিন্দের মা নাজিম ইসলাম ধর্ম থেকে হিন্দু ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়ে নির্মলা দেবী নাম গ্রহণ করেন। তিনিও সিনেমার অভিনেত্রী ছিলেন। অরুন এবং নির্মলার ‘সাভেরা’ সিনেমায় শুটিং করতে গিয়ে দেখা ও পরিচয় এবং পরিণয়।
বলিউডের শক্তিমান অভিনেতা রাজেশ খান্না। ভালোবেসে তিনি বিয়ে করেন গ্ল্যমার গার্ল ডিম্পল কাপাডিয়াকে। এই দম্পতির কন্যা টুইঙ্কল খান্নাও বলিউডের নামজাদী অভিনেত্রী। আর টুইঙ্কেলর স্বামী অক্ষয় কুমার বলিউডে এখনো সুপারস্টার তকমা নিয়ে অভিনয় করে চলেছেন।
নিজের কোনো সন্তান নেই দিলীপ কুমারের। তবু তার নাতনি হিসেবে পরিচিত নতুন প্রজন্মের অভিনেত্রী সায়েশা সায়গল। তার মা অভিনেত্রী শাহীন বানু হলেন দিলীপ কুমারের সহধর্মিণী সায়রা বানুর ভাই সুলতান আহমেদের মেয়ে। ১৯৯৭ সালে শাহীন বানু বিয়ে করেন অভিনেতা সুমিত সায়গলকে। কিন্তু তাদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। এই দম্পতিরই কন্যা সায়েশা সায়গল অভিনয় করছেন তারকা খ্যাতি নিয়েই।
বলিউডে আরেক পরিবারকেও সম্মান করা হয় তারকাগিরির জন্য। সেটি হলো ‘দেওল’ পরিবার। এই পরিবারের কর্তা সুপারস্টার ধর্মেন্দ্র। তার স্ত্রী বলিউডের অন্যতম সুন্দরী ও সফল অভিনেত্রী হেমা মালিনী। এই দম্পতির দুই কন্যা এষা দেওল ও অহনা দেওল। এষা সিনেমায় অভিনয় করলেও বাবা-মায়ের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি।
তবে ধর্মেন্দ্র’র প্রথম স্ত্রী প্রকাশ কাউরের গর্ভের দুই পুত্র সানি দেওল ও ববি দেওল দীর্ঘদিন তারকাখ্যাতির সঙ্গে বলিউডে অভিনয় করেছেন। এখনো মাঝে মাঝে তাদের দেখা পাওয়া যায় সিনেমায়। সর্বশেষ ববি দেওল হাজির হয়েছেন ‘হাউজফুল ৪’ সিনেমাতে।
আরেক বিখ্যাত চিত্রনাট্যকার ও গীতিকার জাভেদ আখতারের দ্বিতীয়ও প্রজন্মও সিনেমাতে এসে নাম করেছেন। জাভেদের প্রথম স্ত্রীর পুত্র ফারহান আখতার বলিউডের একজন জনপ্রিয় অভিনেতা, পরিচালক ও প্রযোজক। ফারহানের বোন জোয়া আখতারও বলিউডে একজন পরিচালক ও প্রযোজক হিসেবে সুনাম কুড়িয়েছেন।
বলিউডের অভিনেত্রী, পরিচালক ও কোরিওগ্রাফার ফারাহ খান ও অভিনেতা সাজিদ খান সম্পর্কে ফারহান আখতারের চাচাতো ভাইবোন। আর নন্দিত অভিনেত্রী শাবানা আজমি ফারহানের সৎ মা।
বলিউডে কিংবদন্তি প্রযোজক ও পরিচালক যশ চোপড়া। তাকে বলা হয় তারকা গড়ার কারিগর। তার হাত ধরে শাহরুখ-কাজল জুটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। অনেক তারকাই পেয়েছেন নিজেকে প্রতিষ্ঠার সুযোগ। সেই চোপড়া পরিবারেরও দারুণ প্রভাব রয়েছে বলিউডে। যশের ছেলে উদয় চোপড়া সফল হতে না পারলেও নায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠার অনেক চেষ্টাই করেছেন।
যশের মৃত্যুর পর বাবার সিনেমার ব্যবসায়ের হাল ধরেছেন তারকা প্রযোজক আদিত্য চোপড়া। তিনি বিয়ে করেছেন অভিনেত্রী রানী মুখার্জিকে।
অভিনেতা জ্যাকি শ্রফের পুত্র টাইগার শ্রফ। বাবার মতোই বলিউডে নাম লিখিয়েছেন তিনি। নতুন প্রজন্মের অন্যতম সম্ভাবনাময় অভিনেতার নাম টাইগার।
বর্তমান সময় বলিউড মাতিয়ে রাখা আরও কয়েকজন তারকা রয়েছেন যারা কেউ বাবা কেউ বা মা কেউ বা অন্য কোনো আত্মীয়ের বরাতে বলিউডে জায়গা করে নেয়ার চেষ্টা করছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম পরিচালক ডেভিড ধাওয়ানের ছেলে বরুণ ধাওয়ান, শক্তি কাপুরের মেয়ে শ্রদ্ধা কাপুর, অভিনেতা চাঙ্কি পান্ডের মেয়ে অনন্যা পান্ডে, অভিনেতা সুনীল শেঠির মেয়ে আথিয়া শেঠি।
তারকা পরিবার থেকে তারকা গড়ে উঠার প্রবণতা বেশ পুরনো হলেও এটি খানিকটা সমালোচিতও বলিউডে। অনেক স্বাধীনচেতা পরিচালক, প্রযোজক ও তারকাদের এ নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করতে দেখা যায়। তাদের মতে অনেক তারকাই যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও বলিউডে খ্যাতি পেয়েছেন তাদের বাবা-মা বা আত্মীয়দের কল্যাণে।
তবে প্রযোজক ও পরিচালক করণ জোহর মনে করেন যার যতটুকু যোগ্যতা সে ততটুকুই সফল হবে। বাবা-মা বা আত্মীয় কেউ তারকা হলে সেটাও একরকম যোগ্যতা। কথা হলো যোগ্যতাকে কে কতোটা কাজেলা গাতে পারছে।
বলাবাহুল্য, তারকাদের পরিবার থেকে তারকা তৈরি করতে সবসময়ই বেশ মনযোগী করণ। তার হাত ধরেই আলিয়া, বরুণ, শ্রদ্ধা কাপুর, জাহ্নবী, ঈষাণের মতো তারকারা তারকা পরিবার থেকে নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধি হয়েছেন।
তালিকায় আছেন আরও অনেকেই। যেখানে উল্লেখ্য শাহরুখ খানের পুত্র আরিয়ান খান ও কন্যা সুহানা খান, আমির খানের প্রথম পক্ষের সন্তান জুনেদ খান ও কন্যা ইরা খানসহ আরও অনেকেই।
এমএবি/এলএ/এমকেএইচ