সাইমনের নায়ক হয়ে ওঠার সংগ্রামী গল্প
কিশোরগঞ্জের ছেলে সাইমন সাদিক। শৈশব-কৈশোর পুরোটাই কেটেছে সেখানে। নির্মাতা জাকির হোসেন রাজু পরিচালিত ‘জ্বি হুজুর’ চলচ্চিত্রের অভিনয়ের মাধ্যমে ঢাকাই চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় তার। এরপর একই নির্মাতার ‘পোড়ামন’ ছবিতে অভিনয় করে আলোচনায় আসেন।
সাইমনের চলচ্চিত্রের লড়াইটা শুরু হয়েছিল ২০০৬ সাল থেকে। এরপর অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়ে বেশ কিছু সিনেমা উপহার দিয়েছেন। এবার তার চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারে যোগ হয়েছে নতুন পালক। গত ৭ নভেম্বর পরপর দুই বছরের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে তথ্য মন্ত্রণালয়। সেখানে ২০১৮ সালে যৌথভাবে সেরা অভিনেতার পুরস্কারের তালিকায় রয়েছেন সাইমন সাদিক।
এমন স্বীকৃতিতে বেশ উচ্ছ্বসিত তিনি। বেশ ফুরফুরে মেজাজে তার সময় কাটছে। আনন্দের এই সময়গুলোতে পুরোনো দিনের কথা স্মরণ করেছেন। আজ বুধবার ফেসবুকে একটি পোস্টে সাইমন নিজেই লিখেছেন তার নায়ক হয়ে ওঠার আবেগমাখা গল্প।
সাইমন লিখেছেন, ‘যুদ্ধটা শুরু ২০০৬ সালের শেষের দিকে, আমার ওস্তাদ জাকির হোসেন রাজু স্যারের সাথে পরিচয়ের পর থেকে। উনি যখন আমাকে জ্বী-হুজুরের জন্য প্রস্তুত হতে বললেন, তখনো স্যার প্রযোজক প্রস্তুত করতে পারেননি। আমাকে নিয়ে অনেকের দুয়ারে-দুয়ারে ঘুরেছেন, অনেক অপমান -অপদস্ত হয়েছেন।
তবুও আমার ওস্তাদ বলতেন জ্বী- হুজুর বানালে আমি তোকে নিয়েই বানাবো।যেই কথা সেই কাজ।২০১০ সালের অক্টোবরের ১০ তারিখ সিনেমার শুটিং শুরু হয়। সেদিন ছিলো স্বপ্নের মতো। তখনো আপনাদের সাথে ওইভাবে পরিচয় নাই।
কয়েকজনকে চিনি, উনারাও আমাকে বুদ্ধি পরামর্শ দিচ্ছিলেন, আমার খুব ভালো লাগছিলো। ২০১২ তে যখন সিনেমা মুক্তির তারিখ ঠিক হলো প্রযোজক আব্বাস উল্লাহ শিকদার সাহেব সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করেন। সেদিন আপনাদের সামনে কথা বলতে গিয়ে মনে হয়েছে - আপনারা আমার খুব আপন,কাছের, ভালোবাসার মানুষ। আপনাদের সাথে কথা বলতে গিয়ে অনেক কেঁদেছিলাম।
ওখানে যারা ছিলেন, এখনো অনেকে আপনারা আছেন। দেখা হয় কথা হয়,স্মৃতিচারণ হয়।এখনো বুদ্ধি পরামর্শ আদান-প্রদান হয়।তারপরও অনেক নতুন সাংবাদিক ভাই বন্ধু এসেছেন, সুন্দর সম্পর্ক হয়েছে। আপনাদের কলমের লেখায়,ক্যামেরার ছবিতে, ভিডিওর মাধ্যমে আমি চলে গিয়েছি আমার ভক্তবৃন্দের কাছে। সেই থেকে এখন পর্যন্ত সবার সাথেই সুসম্পর্ক আছে।
আপনাদের এই ঋণ কোনোদিনও শোধ হবার নয়। আপনাদের সহযোগিতায় পেয়েছি অনেক মানুষের ভালোবাসা। কারণ আপনাদের মাধ্যমেই আমি সবার কাছে পরিচিতি পেয়েছি। অল্প জীবনে পেয়েছি সেরা অর্জন ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৮ এর সেরা অভিনেতার খেতাব। আপনারা অতীতেও ছিলেন, এখনো আছেন,আশাকরি সারাজীবন থাকবেনও। অনেক অনেক ভালোবাসা ভাই ও বন্ধুরা আমার। দোয়া আর ভালোবাসা চাই, এ-দুয়েই বাঁচতে চাই সবার মাঝে।’
মোস্তাফিজুর রহমান মানিক পরিচালিত ‘জান্নাত’ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য প্রথমবারের মতো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাচ্ছেন সাইমন সাদিক।‘জান্নাত’ চলচ্চিত্রে পরিচালক হিসেবে অনন্য অবদান রাখার জন্য সেরা পরিচালকের পুরস্কার পাচ্ছেন মোস্তাফিজুর রহমান মানিক। সেরা পার্শ অভিনেতা হয়েছেন আলিরাজ, সেরা সংগীত পরিচালক ইমন সাহা ও সেরা কাহিনীকার সুদিপ্ত সাইদ খান।
এমএবি/এলএ/জেআইএম