ভিডিও EN
  1. Home/
  2. বিনোদন

মানুষ হুমায়ুন হিমু-মিসির আলীকেও হার মানায় : রিয়াজ

মাসুম আওয়াল | প্রকাশিত: ১২:১২ পিএম, ১৯ জুলাই ২০১৯

আজ ১৯ জুলাই নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুবার্ষিকী। হুমায়ূন আহমেদের অনেক নাটক ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন চিত্রনায়ক রিয়াজ। হুমায়ূন আহমেদের ‘দুই দুয়ারী’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। প্রিয় লেখকের সঙ্গে প্রথম কাজ করেই পুরস্কার পাওয়াটা ছিল রিয়াজের জন্য অনেক আনন্দের। আজ হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুবার্ষিকীতে তাকে স্মরণ করে জাগো নিউজের সঙ্গে কথা বলেছেন চিত্রনায়ক রিয়াজ। আলাপের চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো।

জাগো নিউজ : বাণিজ্যিক ছবিতে অভিনয় করে যখন আপনি জনপ্রিয়তার শীর্ষে, ঠিক সে সময় হুমায়ূন আহমেদের ‘দুই দুয়ারী’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন। তার সঙ্গে প্রথম পরিচয়টা কীভাবে হয়েছিলো?

রিয়াজ : ‘দুই দুয়ারী’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য আমাকে যখন ডেকেছিলেন তখনই প্রথম দেখা হয় হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে। কাকরাইলে তখন তার একটি অফিস ছিলো। সেখানেই প্রথম দেখা হয় আমাদের। যখন তার অফিসে ঢুকলাম আমারে দিকে এক দেড় মিনিট তাকিয়ে ছিলেন।

তার চোখের সামনে এভাবে বসে থাকতে বেশ অপ্রস্তুত লাগছিলো। আমাকে বললেন, ‘তুমি পারবে তো!’ আমি বললাম, ‘পারবো কি না জানি না। আপনি যদি মনে করেন আমি পারবো, তাহলে আমি পারবো।’ এভাবেই প্রথম পরিচয় হয়। এর পরের গল্প সবার জানা।

জাগো নিউজ : দুই দুয়ারীর পরে তো অনেক কাজ করেছে হুমায়ূন আহমেদের পরিচালিত নাটক, সিনেমায়? সেইসব দিনগুলোর কথা মনে পড়ে?

জাগো নিউজ : হুমায়ূন আহমেদ স্যার ছিলেন আমার প্রিয় লেখকদের মধ্যে একজন। তার ডাক আমার কাছে ছিল অনেক বড় পুরস্কার। অনেক ভালো ভালো কাজ করতে পেরেছি স্যারের জন্য। আজকে আমি রিয়াজ হওয়ার পেছনে স্যারের অনেক ভূমিকা রয়েছে। হুমায়ূন আহমেদ আমার অভিনয় ক্যারিয়ারের একটা সোনালী অধ্যায়। সব সময়ই তার কথা মনে পড়ে।

জাগো নিউজ : শেষ দেখা কবে দেখা হয়েছিলো আপনাদের?

রিয়াজ : শেষ কবে দেখা হয়েছিলো এ মূহুর্তে ঠিক মনে করতে পারছি না। সত্যি কথা বলতে এখনো বিশ্বাস হয় না স্যার আমাদের মাঝে নেই। আসলেই তিনি রয়ে গেছেন আমাদের হৃদয়ের গভীরে তার অসংখ্য কাজ ও ভালোবাসা দিয়ে।

জাগো নিউজ : হিমু নাকি মিসির আলি, হুমায়ূন আহমেদের মধ্যে কোন চরিত্রটির ছায়া বেশি দেখেছেন?

রিয়াজ : হুমায়ূন আহমেদ হিমু-মিসির আলীর অনেক উর্দ্ধে ছিলেন। মানুষ হুমায়ুন হিমু-মিসির আলীকেও হার মানায়। তারমধ্যে ছিলো মানুষকে অদ্ভুত ভাবে ভালোবাসার ক্ষমতা। শিশুসুলভ আচরণ করতেন। হিমু-মিসির আলী দিয়ে আসলে তার বর্ণনা করা যাবে না। হিমু-মিসির আলী কিছু কিছু অংশ তার ভেতরে পাওয়া যেত। তবে এটা তাকে খুব বেশি ডোমিনেট করতো সেটাও না।

হি ইজ এ ওয়ান্ডাফুল পার্সন, অসাধারণ একজন মানুষ ছিলেন। এটা শত শত মিসির আলীর উদাহরণ দিয়ে বোঝানো সম্ভব না। তিনি প্রাকৃতিক ভাবে খুব মানবিক ও দয়ালু মনভাবের ছিলেন। তবে এটা তিনি প্রকাশ করতেন না। তিনি নিজেকে গাম্ভির্যের আড়ালে রাখতেই পছন্দ করতেন। বাস্তবে মুখোশ সংগ্রহ করতে পছন্দ করতেন। উনার রুমে অনেক মুখোশ ছিলো।

জাগো নিউজ : নির্মাতা হুমায়ূনের বিশেষ যে গুণটি চোখে পড়তো বারবার...

রিয়াজ : নিজেই যেহেতু গল্প লিখতেন। সব চরিত্রগুলোকে পরিস্কার ভাবে দেখতে পেতেন। আমাদের যখন গল্প পড়ে শোনাতেন। তখন তার কণ্ঠে ও এক্সপ্রেশনে প্রত্যেকটা চরিত্র ধরা দিতো। আমরা সহজে বুঝে নিতে পারতাম উনি কী চাইছেন? আমরা যখন তার ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে অভিনয় করতাম। তখন আমাদের অভিনয়ের প্রচুর টিপস দিতেন। আমাদের চরিত্রগুলোর সঙ্গে ছোট ছোট কিছু জিনিস যুক্ত করতেন। এগুলো ভিন্নমাত্র পেয়ে যেতো। অসম্ভব সুন্দর মোমেন্টস তৈরি করতে পারতেন।

জাগো নিউজ : সব শেষে বিশেষ কিছু কী বলার আছে?

রিয়াজ : তাকে নিয়ে কথা বলে শেষ হবে না। অনেক অনেক স্মৃতি আছে। এখনও তার কোনো গল্পে যখন কাজ করি, শূন্যতা কাজ করে আমার মধ্যে। সব সময় তার ছায়া খোঁজার চেষ্টা করি। স্যারকে অনুভব করি। যেখানেই থাকুন, অনেক ভালো থাকুন স্যার।

এমএবি/এমকেএইচ

আরও পড়ুন