সুপারহিট বাহুবলী সিনেমার হাস্যকর ১০টি ভুল
কথায় বলে নিখুঁত কোনো কিছুই নয়। অনেক সাফল্যের ভেতরেও লুকিয়ে থাকে ব্যর্থতা। তারই প্রমাণ দিয়ে ভারতীয় ইতিহাসের সর্বোচ্চ আয় করা সিনেমা ‘বাহুবলী’ এখন হাসির পাত্র।
ভাইরাল হয়েছে ছবিটিতে হাস্যকর ভুলে ভরা কিছু দৃশ্যের ছবি ও ভিডিও। চোখ ধাঁধানো সেট ডিজাইন, টানটান উত্তেজনার গল্প, রোমাঞ্চকর অ্যাকশন, শক্তিশালী সংলাপের ফাঁক গলে এই ভুলগুলো হয়তো খালি চোখে অনেকেই আমলে নেননি।
চলুন, আনন্দবাজারের দেয়া তথ্যের ওপর দাঁড়িয়ে দেখে নেয়া যাক বাহুবলী ছবির সেই ভুলগুলো-
ছবিটিতে একটি দৃশ্য ছিলে হাতির তাণ্ডব চালানোর। পিছনেই হাতি মারমুখী হয়ে আছে, সবাই ছুটোছুটি করছেন প্রাণভয়ে। এমন দৃশ্যে অবলীলায় একজন হাসছেন! পরিচালক বা সম্পাদকের চোখ এড়ালেও তা খেয়াল করেছেন অনেক দর্শক।
বাহুবলীর শুরুর দিকে রাজমাতা যখন শিশু বাহুবলীকে নিয়ে নদী পেরোচ্ছিলন তখন একবার লং শটে নদীটিকে দেখান পরিচালক। নদীতে তখন যা জল দেখানো হয়, তা হেঁটেই পেরিয়ে আসা যায়। কিন্তু নদীর ভিতরেই পিছলে গিয়ে তলিয়ে যাওয়ার উপক্রম হওয়ার পর দেখা যায় জল হঠাৎই খুব বেড়ে যায়। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে এমনটা কী করে হয়? পরিচালক কী নেশাগ্রস্ত ছিলেন?
আরেকটি দৃশ্যে দেখা যায় প্রতীকী দানবের দিকে বিশাল একটি লোহার দণ্ডে আগুন লাগিয়ে ছুড়ছেন বাহুবলী। অথচ পরের দৃশ্যেই দানবের পেটে গিয়ে যখন সেই অগ্নিশলাকা বিঁধছে, তার দৈর্ঘ্য কমে এতটুকু হয়ে যায়! এও এক কন্টিনিউয়েশনের ভুল।
একটি দৃশ্যে দেখা যায়, বাহুবলীর বাঁ হাত ফাঁকা, ডান হাতে একটি তরোয়াল। কিন্তু যখনই ক্যামেরার মুভমেন্ট বদলানো হল, অমনি তার ডান হাতে কুঠার কী ভাবে চলে এল তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। এমন ভুল কিন্তু এই ছবির আরও কয়েকটি দৃশ্যে রয়েছে।
দেবসেনার মারামারির দৃশ্যে ভুলবশত এক জন ডামিকে স্পষ্টতই চিনিয়ে ফেলছেন পরিচালক। দেবসেনার পোশাক পরা সেই ডামির হাত ও পা দেখলেই বোঝা যাচ্ছে তিনি তো দেবসেনা নন, এমনকি কোনও মহিলাও নন। তিনি এক জন পুরুষ! কী হাস্যকর অবস্থা।
ছবিতে ষাঁড়দের দৌড়ে যাওয়ার দৃশ্যে লং শটে দেখা যাচ্ছে সব ক’টা ষাঁড় দুধসাদা। এ দিকে পরের দৃশ্যে ক্যামেরা জুম করলে দেখা যাচ্ছে তার মধ্যে একটি ষাঁড় কালচে হয়ে গিয়েছে।
একটি দৃশ্যে দেখা যায় বল্লালদেবের বাবা উত্তেজিত হয়ে টেবিলের সব গ্লাস ফেলে দিচ্ছেন। কিন্তু পরের দৃশ্যে সব কাচের গ্লাসগুলি অক্ষত অবস্থায় টেবিলের উপরেই দেখা যায়। এ কী ভাবে সম্ভব? গ্লাসগুলো নিশ্চয় জাদু জানে না!
বাহুবলী ও দেবসেনা যখন যৌথ ভাবে তিরের লড়াই করে শত্রু দমন করছেন, তখন তাদের তূণে মোটেও সব মিলিয়ে গোটা দশ-বারোর বেশি তির ছিল না। তাঁদের তূণও ‘অক্ষয়তূণ’ নয়। তা হলে শয়ে শয়ে শত্রু দমনের পরেও তূণে একই পরিমাণ তির অবশিষ্ট থাকে কী করে! কেবল কন্টিনিউয়েশনই নয়, এ ভুল বেখেয়ালেরও। যুদ্ধে এমন অযৌক্তিক বিষয় বারবারই ঘটেছে।
বাহুবলীর কাঁধে পা দিয়ে ওঠার সময় দেবসেনা যে নৌকোতে ওঠেন পরের দৃশ্যেই সেই মাঝারি মাপের সাদামাটা নৌকোটি বিরাট ময়ূরপঙ্খীতে পাল্টে যায়। সিন টু সিন শুট করার সময় এই ডিটেলিংগুলোয় নজর দিতেই পারতেন পরিচালক।
বিয়ের প্রস্তাব দিতে শিবগামী বল্লালদেবের তরোয়ালটি কুন্তল সাম্রাজ্যে পাঠান। তার কথা মতো, মন্ত্রী তরোয়াল দিয়ে দেবসেনাকে প্রস্তাব গ্রহণ করতে বলেন। ভুল বোঝাবুঝির শুরু হয়। কাটাপ্পা এবং অমরেন্দ্র ভেবে বসেন, বাহুবলীর জন্যই বিয়ের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। কিন্তু তা কেন ভাববেন? বাহুবলীর তরোয়াল তো তাঁর কাছেই ছিল এবং কাটাপ্পা তা দেখেনও। তা হলে এই সংশয় তৈরি হল কেন? গল্পটা যে দুর্বল তার প্রমাণও দেয় এই দৃশ্য।
এলএ/এমকেএইচ